নাসরিন,
তুই ক্যামন আছিস? তুই আমাকে চিনতে পারছিস না? আমি রুদ্র-আমি তোর বাংলাদেশের রুদ্র! বুঝতে পারছি- তুই রাগ করে আছিস! মনে মনে কি জে রাগ করে আছিস! আমি বুঝি, কেউ না বুঝলেও আমাকে বুঝতেই হয়। তুই এক বার এখানে আয়, তখন বুঝবি। তোর শূণ্যতা নিয়ে আমরা, এ দেশের সব ছেলেরা তোর জন্য কতটা অপেক্খায় আছি! তুই না এলে, কি করে বুঝবি!তোর জন্য সব ছেলেরা আজ রুদ্র হয়ে, শাহাবাগ, লালবাগ, পরিবাগের পথে পথে হাটে। তোর জন্যে অপেক্খা করতে করতে আমার আর বিয়ে করা হয়েউঠেনা। পত্রিকার অফিসে ঘুরতে ঘুরতে দেখে যা আরো কতটা বেকার হয়ে আছি। তোর কাছে লেখা একটি চিঠি পত্রিকায় ছাপাবো বলে, এখানকার কতগুলো সম্পাদকের কাছে প্রতিদিনই ধন্না দিচ্ছি। দুপুরে একটি সিংগারা কেনার টাকাও পকেটে থালছে না। নাসরিন, তুই কি বুঝবি, নিজের দেশে বন্দি হয়ে থাকা কতটা কষ্টের, কতটা জন্ত্রনার, কতটা লজ্জার কতটা হতাশার! আমার ভোটের ভয় নেই, আমি রাজনীতিও করবোনা কোন দিন, যে সত্য এবং সৌন্দর্যের জন্য তোকে কেউ সহ্য করতে পারলনা, আমার আজ আর কোন চাওয়া নেই, আমার আর কোন স্বপ্ন নেই, আমি শুধু একটি স্বপ্নই দেখি, তোর সেই সত্য যেন প্রতিট্ঠিত হয়। এদেশের মানুষ যে আজো তোকে কতটা ভালবাসে, কতটা কান্না করে তুই এখানে না এলে কি করে বুঝবি! তোর বই গুলো ওরা লুকিয়ে লুকিয়ে পড়ে, নেট খুজে খুজে তোর ছবিও দেখে। তোর ফ্লাট, বাবার জমি ওরা সব ফিরিয়ে দিতে চায়, তুই বিস্বাস করবিনা ওরা তকে কতটা ভালবাসে, শুধু বাবার ভয়ে ওরা সব চুপ করে আছে। ওরাও এক দিন বড় হবে, বাবার কথা অমান্য করে, আমার মত দেখিস ওরাও তোকে নিয়ে আসতে চাইবে। তোর বিদেশে থাকা, তোর ওখানে বসে কান্না, আমরা আর সহ্য করতে পারিনা! শুধু কি তুই ই কষ্টে আছিস, আমাদের কি একটুও কষ্ট হয়না! তুই হয়তো খবরের পাতায় পরেছিস, আজাদ স্যারকে ওরা মারলো, চাপাতি দিয়ে গরুর মত কুপাতে চাইল, জানিস উনি ঐ আঘাতে মরেনি, উনি মারাগেলেন- কষ্টে, কেও যে উনাকে এতটা ঘৃনা করতে পারে উনি স্বপ্নও ভাবতে পারেনি! তোকে তাই আসতে বলতে লজ্জা হয়, তোকে আসতে বলতে পারিনা, কিন্তু তোকে জে আজ আমাদের খুব প্রয়োজন। সেদিন লজ্জায় আমার মাথা কাটা যায়, দেখেছিস তো, টিএসসি তে কি ভাবে, ওরা মেয়েগুলিকে পশুর মত বিবস্ত্র করলো, যারা ইসলাম ইসলাম করে আকাশ ফাটা চিৎকার করে সে মানুষগুলি, ছিহ্!
ইতি
তোর এক রুদ্র