somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জীবনবোধের ভাবনা

১৯ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

- মমতাজ উদ্দিন আহমদ

আমার জীবনটা নিজের কাছেই ধোঁয়াশাপূর্ণ বলে মনে হয়।
নির্জন বনের মধ্যে নিরন্তর গতিতে ছুটে চলা
কোন পাহাড়ি ঝরণার মতো বর্তমানের জীবন।
মাঝে মাঝে এই জীবনকে বড্ডই একঘেয়েমি মনে হয়।
সমাজের নানা জঞ্জাল, স্বার্থলোলুপ মানুষদের স্বার্থে
নিজেকে বিকিয়ে দিচ্ছি অহরহ। এতে নিজের লাভ তো নেই।
বরং অন্যের চক্ষুশুল হচ্ছি অহরহ।
প্রতিনিয়ত হচ্ছি প্রিয়জনের গলগ্রহ!
নানা সম্পর্কের বিষবৃক্ষে নিজেকে বেখেয়ালে জড়াচ্ছি।
এতে লাভের অংকটা কী তা জানিনে।
নইলে আমার প্রেয়সী কেন সেই রাগ, ঘৃণা, অভিমান ও
হুমকীর অগ্নিগোলক বর্ষণ করছে আমাকে।
যাঁর তরে এতো হৃদি জাগানিয়া ফল্গুধারা বহে আমার অন্তরে,
সে কেনো ভুল বুঝে আমাকে এতো কাঁদায়।
সে কি কখনো সম্পূর্ণ বিশ্বাসে আমাকে তার হৃদয়ে স্থান দিবে না!

এই জীবনের কেন্দ্রবিন্দুতে নিশ্চয়ই
কোন আধ্যাত্মিক সত্ত্বার অস্তিত্ব আছে।
সেই শক্তিই কী আমাকে নিয়ে খেলা করছে?
নাকি নিজের জ্ঞানগম্মিতা, বালখিল্যতা আর
পরস্পরবিরোধী ইচ্ছার বেড়াজালে জড়িয়ে যাচ্ছি।
যার তরে মনে এতো তৃষা জাগানিয়া
তার বিশ্বাসের বোধের গভীরে কেন
আমি পৌঁছাতে পারছিনা।
তার মনেইবা কেনো আমাকে নিয়ে
এতো হালকা বিশ্বাস বাসা বেধেছে?
কেন সে আমার নিরীহ চোখে আঙুল উচিয়ে
দেখিয়ে দেয় আমার ভুলগুলোকে।
কেনো সে একবারও ভাবে না এতে আমার কষ্ট হয়,
ভীষণ কষ্ট হয়! কী করে তাকে বলবো।

মানুষ নিজের জীবনের অতীত কী করে অস্বীকার করবে।
ভুল তো মানুষের মজ্জাগত।
নারী সঙ্গের সাথী, দুঃখের বন্ধু আর আদর্শের সারথী হতে পারে।
আবার হতে পারে অনন্ত দুঃখের দহন।
কিন্তু যাকে পেয়েছি তার জন্য তো ভাগ্যকে ধন্যবাদ দিতে হয়।
বিধাতার কাছে অবনত মস্তকে নুইয়ে পড়তে ইচ্ছে হয়।
আমার জীবনে সেতো বিধাতার স্বর্গীয় দান।
মাঝে মাঝে মেয়েটার নির্বাক মমতা আমাকে উদাস করে।
আবার নানা অজুহাতে তার অশ্রুবর্ষণ
এই জীবনকে ধুকে ধুকে পিষ্ট করে।
অশ্রুবর্ষণ আর দুঃখের দহন যে তার চেয়ে ঢের আমার বেশী!
সেকি তা জানে?
তাকে বুঝাবো কোন ভাষা দিয়ে।
আমি ছলনা করে ভাষায় রঙ ছড়াতে জানি না!
তার ক্লান্ত মুখমণ্ডল আবার উদ্যত স্বর আমাকে
ব্যথিত ও আহত করে।
অপমানে মরে যেতে ইচ্ছে হয়।
কিন্তু এতো ভালোবাসা তার,
যা মুহুর্তেই আমার অপমানকে সুখের লীলায়
ভাসিয়ে নিয়ে যায়।
আমার মিথ্যা অহমিকাকে তুচ্ছ করে দেয়
তার ভালোবাসার অনুরঞ্জিত অনুভূতি দিয়ে।
মাঝে মাঝে মনে হয় তার ভালোবাসাটা অগ্নিগোলক!
যার একটু অন্যথা হলেই অপমানের একশেষ!
আর যাই হোক ভয়ের মাঝে ভালোবাসা হয় না।

অসহ্য রকম অসহায়বোধ আমাকে ঘিরে ধরেছে।
মনের ভেতরে এই অসহায়বোধের কারণ বের করতে হবে।
এরফলে নিজের কাছেই নিজেই স্পষ্ট হয়ে উঠবো।
নইলে শান্তি পাচ্ছি নে!

নিজের ভেতরে একটা বিশুদ্ধতার ভাব ফুটাতে না পারলে
তার জন্যি একই সাথে আমার জন্যিও সমুহ বিপদ।
সে তো বলেই দিয়েছে তার জীবনের সাথে আমি মিশে গেছি!
সুতরাং দায় একসাথে তারও।
আমাকে কষ্ট দিয়ে মেরে ফেললে শেষ অনুতাপ হবে তারই।
আর কারো নয়।
তার প্রত্যেকটা কথায়, আবেগে, অনুরাগে
এই জীবনের গতি গাঢ়, শক্ত হয়ে জমাট বাঁধতে শুরু করেছে।
এর যেমন আনন্দ তেমন বেদনা আছে।
হঠাৎই কী জীবনের বাঁকে বাঁধা আসে?
মনে হয় মূহুর্তেই পাল্টে যেতে পারে জীবনের গতি।
সেই সাথে জীবনের প্রগতি হতে পারে তছনছ।

আজ আমার সমস্ত পৃথিবী ফাঁকা।
মানুষগুলোকে বাচাল মনে হচ্ছে।
আজ নিজেকে নিজেকে নিজের মুখোমুখি
দাড় করাতে ভয় হচ্ছে।
অথচ এই পৃথিবীতে নিজে ছাড়া কোথাও
কোন ভরসাস্থল দেখতে পাচ্ছি নে।
নিজেই নিজের নিয়ন্ত্রক।
বাকীসব ফাঁকা মনে হচ্ছে।
সবকিছু বিদীর্ণ মনে হচ্ছে।
চারপাশের সবকিছু মনে হচ্ছে ভেঙ্গে যাচ্ছে।
আমার ভেতরের মনকে তরঙ্গায়িত না করলে,
সেখান থেকে বোধের কথাগুলোকে একত্র না করলে
আমি হেরে যাবো।
নিজের আত্মশক্তিতে বলীয়ান না হলে
আমি নিজেই নিজের কাছে হেরে যাবো।

মহামতি গৌতম বুদ্ধের কথাকে আজ অমৃত বলে মনে হচ্ছে-
‘মনের ময়লা মনের সাবানেই পরিস্কার করতে হয়।
মন দিয়েই মনে আলো জ্বালানো সম্ভব’।
কিন্তু আমার মন যে তার মাঝেই মিছে গেছে!
আমার অন্তর্লোকের সমস্ত ময়লা পরিস্কার করবে
তার মায়াবী হৃদয়ের সুবিমল ছোঁয়ায়।
এই প্রতীক্ষায় আছি আমি…।

তারিখ: ১২/০৮/২০১৭, রাত ১.০০ টা।
আলীকদম।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:২০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

টের পেলে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৭

টের পেলে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

টের পেলে গুটিয়ে যায় লজ্জাবতী/ পরিপূর্ণ যৌবনে যুবতীর নিখুঁত অনুভূতি। আমার চাওয়া, ইচ্ছে, স্বপ্ন! আমার পছন্দ বুঝদার, সুন্দর হৃদয়ের রূপ! সৌন্দর্য সুন্দর যা চিরন্তন সত্য। কিন্তু সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের চার খলিফার ধারাবাহিকতা কে নির্ধারণ করেছেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৭




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব)... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×