somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

‘পূর্বপাপ’

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আপনাদেরকে আজ তাহলে বলতেই হয়। গোপন প্রকাশিত হোক তাহলে। আপনাদের চমকে যাওয়ার ক্ষমতা দেখে দেখে আমিও চমকে যাই। আপনারা চমকে যাওয়ার পর আমাকে ‘অচ্ছুৎ’ ভাবতে লজ্জ্যা পান কারন আপনারা সদাশয় ভদ্রলোক, সামাজিক ও নাগরিক জীবনে পরিচিত। আপনারা আমার ধন্যবাদের প্রাপ্য। আমার যে কথা আজ আপনাদের চোখের সামনে শ্রবন শক্তির কল্যাণে আলোকিত হবে তাতে যারা বিশ্বাস করবেন তারা মনে মনে বিগলিত হবেন আর যারা অবিশ্বাস করবেন তারা আবারও চমকে যেয়ে আমাকেও চমকাবেন। চমক কখন ক্লান্ত হয়না। চমক মানব মনের বিনোদনের একটি মাত্রা।
আমি গল্পটা চমকের মাধ্যমে পরিবেশন করব যদিও আমি আনাড়ি। আমার বিনয় সাজেনা, দোষ স্বীকার করে পেছনের দরজা আগেই খুলে রাখছি, সময়ের সাহসী কৌশলী যোদ্ধাদের মতই।

***
ঠাকুর বিরবিরিয়ে উঠল যাহ যবনদের পাড়ায় ঢুকেই তৃষ্ণাটা লাগল! কি আর করা পলাশের টং দোকানে যেয়েই চা জল বিস্কিট খেয়ে এক আধটু জঠর দেবতার পুজো সেরে নেই।
পলাশঃ বহেন বহেন ঠাকুর মশাই অনেক দিন পর?
ঠাকুর মশাই যবন জলাতঙ্কের কথা স্বভাবত কেটে যেয়ে এক পাশের টেবিলে বসতে বসতে বলেঃ
এইত বাবা! জীবনের বোঝা আরকি, চাইলেও টানতে হয় না চাইলেও, বিঁধির বিধান। তা বাবা একটু জল দাও!
পলাশঃ এরপর চায়ের সাথে টাও ত হবে?
ঠাকুর মশাইঃ অবশ্যই অবশ্যই কেন নয়!

মুয়াজ্জিন সাহেব আকাশের দিকে তাকায় আর দ্রুত পায়ে হেটে একরকম আশপাশ না তাকিয়েই আরেক পাশের টেবিলে বসে পরে ভাবতে ভাবতে, কাঠ গলাটায় চা ঢেলে পিচ্ছিল করে মসজিদে দৌড় দিতে হবে। জোহরের আজানের সময় হয়ে যাচ্ছে গলা দিয়ে উজার কণ্ঠে আজান বাহির করতে হলে গলা ভেজাতেই পলাশের দোকানে তার পা।

ভদ্রতা দেখিয়েই মুয়াজ্জিন সাহেব জিজ্ঞাসা করেনঃ
ঠাকুর মশাইয়ের হাল হকিকত কেমন?
ঠাকুর মশাইঃ এই ত ঈশ্বরের কৃপা! তা মোল্লা সাহেবের খবর কি?
মুয়াজ্জিন সাহেবঃ এইত......
ঠাকুর মশাই মোল্লা সাহেবের 'এইত' শুনতে শুনতেই চায়ের কাপে প্রথম চুমুক দিয়েই চোখ জোড়া উপরে তুললেন, তুললেন বটে নামানোর আগে চিৎকার দিয়ে বলেঃ
কিরে হতভাগা এই ফ্যান তুই কোথায় পেলি?
পলাশ কিছু বলে উঠার আগেই মুয়াজ্জিন সাহেব হাক দিয়ে উঠলেনঃ
ইন্নালেল্লা! এই ফ্যান ত মসজিদ থেকে ৩ মাস আগে চুরি হয়েছিল!
ঠাকুর মশাইঃ সে কি এই ফ্যান ত হপ্তা খানেক আগে আমাদের মন্দির থেকে খোয়া গেল!!
দুই ধর্মশালার দুই মহাজন হুঙ্কার দেয় এক সাথেঃ পলাশ!!!!
পলাশঃ শুনেন! শুনেন! এই ফ্যান সুজন আমার কাছে দিন দুই তিনেক আগে বিক্রি করে গিয়েছে।
আমি আধা বাকি হইলেও পয়সা দিয়ে কিনেছি এই ফ্যান।

***
আমার কাজ ছিল এর জিনিস ওর কাছে ওর জিনিস এর কাছে পৌঁছে দেয়া। আমার কাছে তা একটা খেলা আর নেশা ছিল। খেলা ছিল বলেই যার থেকে নিতাম তাকে জানতে দিতাম না কারন আমি না বললেও সে জানতে পারবেই কিছুক্ষনের মধ্যে যে খোয়া গিয়েছে।
এমন অনেক করেছি উত্তর পাড়ার কলিমের বদনা আমি দক্ষিন পাড়ার অমলেশের কাছে বিক্রি করেছি আর তার তিন চার মাস পর অমলেশের পানদানি কলিমের কাছে তার দাদার জন্য বিক্রি করেছি।
টাকার মোহ আমার ছিল না কারন আমি জানতাম যে চুরির টাকায় দালান হয়না তবে খেলা হিসেবে ‘এ ক্লাস’।
খেলা হল আর্ট, কৌশল আর বৈচিত্র।
কৌশল বদল হলেই বৈচিত্র আর বৈচিত্রই হল আর্ট, সুক্ষ রুচি ও রসবোধ।

***
ঠাকুর মশায়ঃ ভগবানের ঘর যেই অপবিত্র করল হাত দিয়ে আগামী জন্মে তার সেই হাতে 'পাপ' দিও গ ভগবান।
অভিশাপের পালা ঠাকুর মশাই সাঙ্গ করায় মোল্লা সাহেব কিছুটা বিরক্ত হয়ে বৈচিত্র আনলেন তার গলায়ঃ
হে খোদা! তুমি তারে হেদায়েত দিও গ।
***
আপনাদের কাছে আমার হাতের ‘চর্ম রোগে’র কারন বললাম।যার চিকিতসা আমি আজও পাইনি। বিশ্বাস অবিশ্বাস যাই করুন তা আপনাদের বিশ্বাসের প্রতিফলন। আমার জন্য খোদার কাছে দোয়া করবেন খাছ দিলে যাতে আমার হাত থেকে এই ‘অচ্ছ্যুত পাপ’ খসে যায়।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৩৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×