somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধরার উপরে আছি--বিবাহিত অধ্যায়

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ ভোর ৪:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




বিছানায় এখন আমার জায়গা সংকুচিত হয়ে গেছে। সেই ছিল একসময় যখন বিছানার এপার গঙ্গা হইতে পাড়ি দিয়া ওপার পদ্মা'য় পৌছে যেতে পারতাম। মাঝে-মধ্যে নক্ষত্র পতনের মত মেঝে পড়িয়া সাতাঁর কাটিতাম। আর এখন? শুধুই দীর্ঘশ্বাস......
হ্যাঁ, আমার বিবাহ হইয়াছে।
তিনি কোল বালিশ ছাড়া গুমাইতে পারেন না, নতুন সংসারে আবার কোলবালিশের মত বিলাশ বহুল জিনিসও নাই।
তো??
উত্তর মেরুর প্রচন্ড শীতেও যেই আমি রুমহিটার বন্ধ করিয়া খালি গায়ে ঘুমাই তাহার অকাল অবসান হইয়াছে। প্রচন্ড অস্বস্তিতে যতই তাহার হস্তখানি সরাইতে যাই ততই অক্টোপাশের বন্ধনে আমার জীবন অতিষ্ট হইয়া যায়।
ভোরের আলো দেখিয়া বিছানায় যাওয়া বড় উপভোগের বস্তু এখন বিস্মরণ হইয়াছে। সন্ধ্যা রাতে অর্থাত্ রাত১২টা ২০মি. নাগাদ নিতান্ত অনিচ্ছায় আমায় এখন বিছানায় পিঠ রাখিতে হয়। ঘুম কি আর আসে বাহে।
আহা: মনে পড়ে যায়, সেই একা থাকার রাত গুলার কথা......নিশিরাইতে নেটে বসিয়া থাকা... এখন চোখ বুজিয়া দীর্ঘশ্বাস ফেলিতেছি.... একবার শুধু জিজ্ঞাসিলাম...একটু ব্লগ পড়ি? উত্তর আসিল. .."নতুন ল্যাপটাপ কেনার টাকা থাকলে পড়"।
ইহার মানে জিজ্ঞাসা করাই অবান্তর!....কারন?
বিবাহের দুইদিন পর....বাল্যবন্ধুদের পাইয়া আড্ডায় মশগুল হইয়া সামান্য দেরি করিয়া ফেলেছিলাম। বেশিনা রাত মাত্র সোয়া ১২টাও বাজে নাই দেখি আমার ছোট ভাইকে লইয়া আমার নতুন স্ত্রী আড্ডায় হাজির। বিব্রত আমি বন্ধুদিগ হইতে বিদায় লইয়া বলিলাম চল বাসায় যাই। তিনি হাসি মুখে বসিয়া রইলেন...বলিলেন তাহারও রাত্রিকালিন বড় আড্ডা পছন্দের। কিছুতেই বাসায় যাইবেনা। পড়িলাম গ্যাড়াকলে.....বন্ধুরাও চান্স পাইয়া চা-চানাচুর আনাইয়া নতুন উদ্যমে আমার কাল্পনিক দোষ লইয়া গপ-সপ চালু করিয়া দিল। পরে প্রায় আধা ঘন্টা পর 'রাত্রে আর কখনোই আড্ডায় বসিবনা' কবুল করিয়া নিস্তার পাইয়াছিলাম... ....

ওফ!! অথচ কি হইবার কথা ছিল!! বিবাহ করিবার পূর্ব থেকেই আমি গুরু ধরিয়াছিলাম বিবাহ পরর্বতী জীবনে কিভাবে একনায়কের মত সংসারে কর্তৃত্ব করা যায় তাহা লইয়া। প্রচন্ডভাবে প্রস্তুত হইয়াছিলাম 'হাউ টু কিল দ্যা ক্যাট এট বাসর ঘর' । কিন্তুক!! হায় হোসেন, হায় কারবালা!! বাসর ঘরে (যাহা তাহার ইচ্ছায় তাহাদের বাড়িতেই সাজানো হয়েছিল) প্রবেশমাত্রই তাহার প্রচন্ড গা দুলানো হাসিতে আমার আক্কেলগুডুম.....ভাব ধরিয়া কর্তাসুলভ কি হইয়াছে জানতে চাহিলেই...আমাকে আয়নার সামনে দাড় করাইয়া দিল। দেখিলাম তাহার বদ কোন ভগ্নি গৃহ প্রবেশমুখে মালা পড়ানোর সময় আমার দুইকানের গোড়াতেও দু'টা জবাফুল বসাইয়া দিয়াছে। আর আমারে দেখাইতেছে টোটাল 'ছ্যাইয়া'দের মত.......তারপরও দেশের ভাবমূর্তি উদ্ধারে সচেষ্ট হইলাম, ফুল দুটা কান হইতে ফেলিয়া....তাহাকে দেখাইয়া আমার নাগরা দিয়া পিষিয়া ফেলিলাম......বুঝাইলাম ইহা একটা সর্তক সংকেত.......কিন্তুক সে বলিল...".এই দাড়াও দাড়াও আমার মোবাইলের ক্যামেরাটা অন করি...তোমার মুডটা সেইরকম হইছে...."
ওফ্ খোদা!!....আমি আবারও 'বিড়ালটা' ধরার আশায় গম্ভীরভাবে বলিলাম 'তুমি এখনো আমাকে সালাম করনাই' বলিয়া পা বাড়িয়ে গৃহকর্তার ন্যায় দাড়াইলাম..... সে তাহার গা দুলানো হাসি দিয়া টপাস করে আমার পায়ে সালাম করেই ধপাস করিয়া বিছানায় বসিয়া তাহার পা' দুখানা আমার সামানে ঝুলাইয়া দিয়া বলিল...."স্ত্রীকেও সালাম করিতে হয়..হাদীসে আছে"....
'কোন হাদীসে আছে'? অপ্রস্তুত হইয়া গেলাম
"সহীহ্ বুখারী হাদীসে....তাড়াতাড়ি সালাম কর'
কোনমতে মুখে সালাম দিয়া, বিড়ালটা আবার ধরার আশায় বলিলাম....'দেখ তুমি কিন্তু এখন আর আমার সাথে আগের মত ফাইজলামি করতে পারবা না....'
"কিউঁ...???" ভুড়ু নাচিয়ে জানতে চাইল..
'এখন আমরা স্বামী-স্ত্রী' গম্ভীরভাবে বলিলাম.....
শুনিয়া প্রচন্ড হেসে উঠে বিড়ালটা ধরে ইয়ে মানে আমার শেরওয়ানীর কলার ধরে টান দিয়ে বলল.....
'জনাব আপনারে আমার জামাই-জামাই লাগে না গো........আপনি আমার সেই 'তুমি'-ই থাকবেন......."

বস্....আর লেখা যাইবেনা...ফোন করিয়াছে..."কি কর? পড়ালেখা? আজ উইকএন্ড দেখে ব্লগ পড়িতেছোনাতো আবার? আমি আধাঘন্টার মধ্যে আপাকে নিয়ে বাসায় আসতেছি...."

আধাঘন্টা প্রায় শেষ হইতে চলল.......
আমি এখনও স্বপ্ন দেখি 'বিড়ালটা' কিভাবে ধরা যায়.....

৩য় পর্ব-কামরূপ কামাখ্যা অধ্যায়
৩য় পর্ব
এইখানে ২য় পর্ব
এইখানে ১ম পর্ব



সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ৩:১৮
১১টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস-পরীক্ষার হলে দেরিঃ পক্ষ বনাম বিপক্ষ

লিখেছেন BM Khalid Hasan, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



বর্তমানের হট টপিক হলো, “১ মিনিট দেরি করে বিসিএস পরীক্ষার হলে ঢুকতে না পেরে পরীক্ষার্থীর স্বপ্ন ভঙ্গ।” প্রচন্ড কান্নারত অবস্থায় তাদের ছবি ও ভিডিও দেখা যাচ্ছে। কারণ সারাজীবন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা-২০২৪

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭



ছবি সৌজন্য-https://www.tbsnews.net/bangla




ছবি- মঞ্চে তখন গান চলছে, মধু হই হই আরে বিষ খাওয়াইলা.......... চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী গান।

প্রতি বছরের মত এবার অনুষ্ঠিত হল জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা-২০২৪। গত ২৪/০৪/২৪... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

×