প্রথমেই বলে নেই আমি জামায়াত শিবিরের কেউ না, আমার এই ক্ষুদ্র জীবনে কখনই জামায়াত শিবির করার সৌভাগ্য হয়নি। আর এই মূহূর্তে জামায়াত অথবা শিবির করার কোন রকম সুযোগও নেই। তবে সত্যকে সত্য আর মিথ্যাকে মিথ্যা বলা আমার আজন্ম স্বভাব।
একজন রাজনীতি সচেতন এবং সত্যনিষ্ঠ যুবক হিসেবে অনেক সময়ই রাজনীতি নিয়ে বিভিন্ন ফোরামে নিজের মতামত ব্যক্ত করি। এর জন্য কখনও কখনও জামায়াতি, রগকাটা; আবার কখনও কখনও রাজাকার, আলবদর গালিও শুনতে হয়েছে। এজন্য অবশ্য আমার কোন দুঃখ নেই। সত্য কথা বলায় কেউ গালি দিলে সেটাকে পুরষ্কারই মনে করি, সাদরে গ্রহন করে নেই।
আজ থেকে কয়েকবছর আগে অবশ্য জামায়াতের উপর কোন খারাপ ধারনা না করলেও ছোট খাট ভুল ত্রুটি খোজার চেষ্টা করতাম। পরবর্তীতে বাস্তবতা আর সত্যের সঙ্গে জামায়াত শিবিরকে মিলানোরও একটু আধটু চেষ্টা করেছি। আমার কতিপয় পর্যবেক্ষনে মনে হয়েছে বাংলাদেশে কারও রাজনীতি করলে জামায়াতের রাজনীতিই করা উচিত। কেন জামায়াত অথবা শিবিরকে নিয়ে আমার এমন চিন্তা ধারনা সৃষ্টি হল তার কয়েকটি জবাব:
১। আমাদের দেশে কেউ নামাজ কালাম পড়াসহ ইসলামের চর্চা করলে তাদের জামায়াত শিবিরের লোক বলে গালি দেওয়া হয়। অর্থাৎ জামায়াত বিরোধীরা মনে করে জামায়াত শিবিরের সবাইই আসল ইসলামের কথা বলে।
২। কেউ সত্য এবং বাস্তবতার কথা বললে তাকে রীতিমত জামায়াতি, রাজাকার, আল বদর ইত্যাদি বলে গালি দেওয়া হয়। উদাহরনস্বরুপ: ড: আসিফ নজরুল একজন সক্রিয় জামায়াত বিরোধী লোক হওয়া সত্ত্বেও বর্তমান প্রেক্ষাপটে একজন দেশপ্রেমিক লোক হিসেবে চরম সত্য প্রকাশ করায় তাকে প্রায়শই জামায়াতের পেইড এজেন্ট অথবা রাজাকার বলা হয়। অর্থাৎ জামায়াত বিরোধীরাও মনে করে জামায়াত একটা সত্য ও সঠিক পথের রাজনৈতিক দল এবং যারা জামায়াত করে তারাও সত্যবাদী।
৩। সত্য ইতিহাস কেউ লিখতে চাইলে তাকেও জামায়াতী, মৌলবাদী অথবা অন্য কোন গালি দেওয়া হয়। উদাহরনস্বরুপ: বদরুদ্দীন উমর নীতিগত দিক দিয়ে জামায়াতের সম্পূর্ণ উল্টো অবস্থানে থাকার পরেও সত্য ইতিহাস প্রকাশ করায় তাকে আল বদরউদ্দীন অথবা জামায়াতের ক্রয় করা গোলাম বলে গালি দেওয়া হয়। অর্থাৎ জামায়াত বিরোধীরা মনে করে জাময়াত কখনও মিথ্যা ইতিহাস লিখতে পারে না, যারা মিথ্যা ইতিহাস লিখে না তারাই জামায়াতের লোক।
৪। কেউ ধূমপান না করলেও তাদেরকে জামায়াত শিবিরের লোক মনে করা হয়। উদাহরনস্বরুপ: ছাত্রলীগের সভাপতি ধূমপান করত না (এখন করে কিনা জানি না) দেখে তাকে শিবিরের লোক বলা হত। অর্থাৎ জামায়াত বিরোধীরা মনে করে ধূমপান একটা জঘন্য কাজ এবং এমন জঘন্য কাজ জামায়াত শিবিরের লোকজনের দ্বারা সম্ভব নয়।
৫। ভদ্র এবং মেধাবী ছেলেদের শিবিরের ছেলে মনে করা হয়। উদাহরনস্বরুপ: বিভিন্ন সময়ে দেখেছি এমনকি পত্রপত্রিকায়ও পড়েছি জামায়াত বিরোধীরাও তাদের মেয়েদেরকে শিবিরের ছেলেদের সাথে বিয়ে দিতে চায়। অর্থাৎ শিবিরের ছেলেরা যথেষ্ট ভদ্র বিধায়ই শিবির বিরোধীদেরও ধারনা তাদের সাথে মেয়ে বিয়ে দিলে মেয়ে সুখে শিন্তিতে থাকবে।
এমন আরও অসংখ্য ঘটনা থেকে আমার কাছে মনে হয়েছে জামায়াতই বাংলাদেশে সঠিক এবং সত্য পথে আছে। অবশ্য এ কথা বলায় যেহেতু আমি জামায়াত শিবির করি না তাই আমাকে হয়ত জামায়াত শিবিরের পেইড এজেন্ট বলা হবে। But I don't care!!