ঢাকা শহর সাধ্যের মধ্যে মন মত বাসা ভাড়া পাওয়া আর হাতে আকাশের চাঁদ পাওয়া সমান কথা।স্বল্প আয়ের মানুষের তাই মন মত বাসা ভাড়া করা হয়না।শেষ-মেস এক কলিগের উছিলায় একটা সাবলেটে উঠে পড়লাম।বাসা থেকে অফিসে যেতে আধা ঘন্টা মত লাগে।
তাজনীনের অভিযোগ কেন দুরুমের বাসা নিলাম না।পরে বুঝিয়ে বলায় সে বুঝেছে।সল্প আয়ের মানুষের জন্য সাবলেট হল সাধ্যের মধ্যে সবটুকু।বাথরুম আলাদা হলেও কিচেন ভাগাভাগি করতে হয়।তাতে তাজনীনের কোন সমস্যা হচ্ছে না।
তাজনীনের এখন একটাই চিন্তা আত্বীয় স্বজন কেউ এলে কি হবে।আমি বলি এত দূরে কে আর আসবে।আর যখন আসে তখন দেখা যাবে।
দুমাস হয়নি এর মধ্যে একদিন তাজনীনের এক মামা এসে হাজির।দুুুুপুরে অফিসে খেতে বসেছি এমন সময় তাজনীনের ফোন,এই শুনছ,আমার আকবর মামা আছে না উনি না আজ আমার এখানে আসছেন।উনার নাকি কি একটা দরকার আছে ঢাকায় তাই একটা দিন আমার এখানেই থাকবেন।
মনে মনে বললাম একদিন থাকলেই বাঁচি।চিন্তা সব বাদ দিয়ে অফিসের কাজে মন দিলাম।বিকালে আবার তাজনীনের ফোন।
এই তুমি একটু তাড়াতাড়ি এসো।ফ্রিজে তো তেমন কিছু নেই কিছু বাজার করে নিয়ে এস।
বাজার করে যখন বাসায় এসেছি তখন প্রায় সন্ধ্যা সাতটা।ফ্রেশ হয়ে আকবর মামার সাথে গল্প করতে বসেছি।মামা নানান প্রশ্ন করে যাচ্ছেন আর আমি উত্তর দিয়ে যাচ্ছি।
খাওয়া দাওয়া শেষ হল যখন তখন রাত সাড়ে দশটা।একটা রুম নিয়ে থাকি দেখে মামা যেন কিছুটা বিব্রত।তাজনীন অবশ্য সময় বুঝে এক সময় বলেছে কোথায় থাকবে।আমি বলেছি আজ আমি বাইরে এক বন্ধুর ম্যাচে থাকব।তুমি নিচে বিছানা করে শুয়ে পড় আর মামা উপরে থাকবেন।যেমন কথা ছিল তেমনই,আমি এগারোটার দিকে বাইরে বেরিয়ে এলাম।
তাজনীনকে মিথ্যা বলেছি।এই শহরে কোন বন্ধু আমার ম্যাচে থাকে না।এখন আমাকে কোন আবাসিক হোটেলে রাত কাটাতে হবে।
রাস্তায় হাটতেই আকাশের দিকে চোঁখ গেল।দেখি গোল থালার মত একটা চাঁদ উঠেছে আকাশে।মনে মনে ভাবলাম আজ যদি সারা রাত রাস্তায় হেটে হেটে কাটিয়ে দেই ঠিক হিমুর মত তাহলে কেমন হয়।
কি মনে করে যেন পান্জাবী গায়ে দিয়ে এসেছিলাম।পা থেকে স্যান্ডেল জোড়া খুলে ফেলে দিলাম।এখন আমি রাজপথে পান্জাবী পরে খালি পায়ে হাটছি।মাথার উপরে ভরা পূর্নিমার চাঁদ।নিজেকে হিমু হিমু মনে হতে লাগল।
*** ২০২০ সালে কোন পোষ্ট দিতে পারিনি নানান ব্যস্ততার কারনে।মাইদুল ভাই সে কথা স্মরন করিয়ে দেওয়াই এই পোষ্ট।ধন্যবাদ মাইদুল ভাই।কোন পোষ্ট না দিলেও সামুতে প্রায় আসি।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:০৫