ছোট বেলায় শীতের অপেক্ষায় থাকতাম।শীতকাল মানেই বিশাল আনন্দের ব্যাপার স্যাপার।শীতকাল জুড়ে গ্রামের বাড়ি গুলোতে উৎসবের আমেজ লেগে থাকত।শীতের শুরুতেই মা আলো চাল করতেন।সেই চাল কুটে আটা বানাতেন।তারপর রোদে শুকিয়ে বড় মাটির ভাড়ে ভরে রাখতেন।সেই আটা দিয়ে মা কত রকমের পিঠা বানাতেন।
আমাদের তখন অনেক খেজুর গাছ ছিল।প্রতি সপ্তাহে আট-দশ ভাড় রস হত।সেই রস জালিয়ে মা গুড় বানাতেন। কখনও পাটালি আবার কখনও ঝোলাগুড় বানিয়ে মাটির ভাড়ে করে রেখে দিতেন।শীতের সময় মা ভাপা পিঠা, পাকান পিঠা,চিতই পিঠা, ছিটা রুটি, রসের পিঠা,রসের ক্ষির বানাতেন।সেই সব পিঠার স্বাদ এখনও মুখে লেগে আছে। আমার বেশি পছন্দের ছিল ভাপা পিঠা আর রসের ক্ষীর।
যেদিন আমাদের রস হত সকালে চাল ভেজে সেই ভাজা শিলে বেটে গুড়ো করে রসের সাথে খেতাম,এটা খেতে অনেক মজার ছিল।
ছোট বেলায় চাল ভাজার গুড়ো দিয়ে মায়ের বানানো সেই মোয়ার কথা আজও মনে পড়লে জিভে জল এসে যায়। মোয়া বানিয়ে মা কাচের বয়াম ভরে রেখে দিতেন।মায়ের অনুমতি ছাড়াই সেই মোয়া সুযোগ পেলেই খেতাম।
শীত এলে মা মুড়ি আর খৈ ভাজতেন।খৈ ভাজা দেখতে আমার খুব ভাল লাগত।উত্তপ্ত বালুতে ধান দিলে যখন চটপট করে ফুটে উঠত তখন অনেক আনন্দ পেতাম। খৈয়ের মোয়া খেতেও অনেক মজার।শীত এলে মা কুমড়ার বড়ি দিতেন।
আমার শৈশবের শীত স্মৃতি গুলো মনে হলে অনেক ভাল লাগে। আবার একই সাথে কিছুটা খারাপ ও লাগে।কারন এখনকার শীতকাল গুলো বড় রংচঙহীন হয়ে আমার জীবনে আসে।
ছবি-আমার মোবাইলে তোলা।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:০৯