somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোটগল্পঃ রামসুন্দরের শিশুরা

০৩ রা জুন, ২০০৯ সকাল ১১:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

The books that the world calls immoral are books that show the world its own shame.
- Oscar Wilde

এক

মিজান সাহেব নিপাট ভদ্রলোক, কোনো সাতে-পাঁচে নেই, বাজে কথা বলেন না। তিনি কাউকে কখনো গালি দেননি, মুখ খারাপ করেননি। আপাদমস্তক ভালো মানুষ বলেই হয়তো তার গ্যাসের সমস্যা ছিল। রাতে ঘুমাতে গেলেই পেটের ভেতর গুটুর গুটুর শব্দ হতো, পেট-ফাঁপতো, টক ঢেকুর উঠতো; তিনি বিছানায় এপাশ-ওপাশ করতেন, ঘুম হতো না এবং সকালে লাল চোখ নিয়ে অফিসে যেতেন। না হওয়া ঘুমের শোকে কাতর থাকলেও তিনি মেজাজ খারাপ করতেন না। তিনি ছিলেন আদর্শলিপি বইয়ের জীবন্ত সংস্করণ; টেবিলের ওপর পড়ে থাকা ম্যাজেন্টা রংয়ের ভ্রাম্যমান রামসুন্দর বসাক।

মিজান সাহেব ভালো মানুষ ছিলেন।

মিজান সাহেবের পেট-ফাঁপাকে ডাক্তারা বললেন হাইপার-এসিডিটি। কেউ কেউ বললেন, ফ্লাটুলেন্স। তিনি এসিডিটি কিংবা ফ্লাটুলেন্স নিয়েই অফিস করেন, রাস্তায় জ্যামে আটকান, ঘুমাতে যান। বোতল বোতল এন্টাসিড শেষ হয়- কিন্তু মিজান সাহেবের দুর্বল পাকস্থলী সবল হয়না, আন্ত্রিক গোলযোগ চলতেই থাকে, পেট-পাকায়, পেটে বিশ্রি শব্দ হয় এবং বেগতিক অবস্থায় বায়ুত্যাগ ঘটে। এধরনের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি খুবই বিব্রত এবং তার স্ত্রী বিরক্ত; ভয়ানক বিরক্ত। ভদ্রমহিলা জীবনে অনেক ধরনের খচরামী দেখেছেন আশেপাশের মানুষের। কিন্তু তার স্বামীর ব্যাপারটি অভিনব। রীতিমত ছোটলোকি কারবার! ছিঃ ছিঃ। মিজান সাহেবের স্ত্রী রাগ করেন, গোস্বা করেন, মুখ ঝামটা মারেন- কোনো কাজ হয়না। স্বামীকে শুনিয়ে কাজের লোককে ঝাড়ি মারেন, ‘এটা গোয়াল ঘরও না, সিন্ধী গাইয়ের অনাথ আশ্রম!’ ঝিকে মেরে বউকে শেখানো যায়, স্বামীকে নয়। স্ত্রীর কথায় মিজান সাহেব বায়ু দুষন ঘটিয়ে বিচলিত বসে থাকেন।

সবকিছুই মিজান সাহেবের প্রতিকূলে। স্ত্রী, গাড়ীর ড্রাইভার, সচিবালয়ের পিয়ন, প্রতিমন্ত্রী, জানজট, পাকস্থলি, সেনাপ্রধান, শ্বশুড়বাড়ী, কই মাছের কাঁটা, জ্বালানী মন্ত্রণালয়- সবাই। তিনি দাঁত-মুখ খিঁচড়ে থাকেন। মাঝে মাঝে ডাক্তারদের গুষ্টি-উদ্ধারের কথা মনে আসে। কিন্তু তিনি জানেন-‘কটুবাক্য কহা অনুচিত’, তাই বাজে কথা বলতে পারেন না। আর বাজে কথা মাথায় আটকা থাকে বলেই পেটে গ্যাস জমে, বউরা খ্যাঁচ খ্যাঁচ করে, শোবার ঘরে গোবরের গন্ধ পাওয়া যায়।

মিজান সাহেবের পেট-ফাঁপার ঘটনাটা হঠাৎ প্যাঁচ খেয়ে গেল।

একদিন, ঘুমাতে যাওয়ার আগে আঞ্জুমান-আরা বেগম বললেন, ‘ভাল একজন ডাক্তার দেখাও।’ স্ত্রী প্রতিরাতে একই বাক্য দিয়ে আলোচনা শুরু করেন বলে মিজান সাহেবদের রুদ্ধদ্বার বৈঠক ঠিক জমে না। তিনি চুপ রইলেন। স্ত্রীর বদলে যামিনী রায় পাঠে মন দিলেন। চির সুখীজন, ভ্রমে কি কখন, ব্যথিত বেদন, বুঝিতে সে পারে? রবীন্দ্রনাথ আর যামিনী রায়- ভারতবর্ষের বেবাক চিরতাগাছের শরবত বানিয়েছেন। কৌষ্ঠ-যাতনায়? মিজান সাহেব দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ভাবলেন- কী যাতনা বিষে, বুঝিবে সে কিসে!

মিজান সাহেব স্ত্রীর কাছে খুব অপাঠযোগ্য ছিলেন না, তিনি মনে মনে কথাগুলো ভাবলেও, মুখের কোথাও, হয়তো ঠোঁটের কোণায়- এটি প্রকাশ করে ছিলেন এবং আঞ্জুমান-আরা বেগম তা হয়তো পাঠ করে থাকবেন। ভদ্রমহিলা বললেন, ‘হাসো কেন?’ মিজান সাহেব হাসছিলেন এবং সেটি গোপন করতেই বলে ওঠেন, ‘কে বলল হাসি?’, যদিও তিনি জানতেন- সদা হাসি শত্রুনাশী।
- ‘কে আবার বলবে! আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি!’
- ‘ও!’
- ‘ভালো একজন ডাক্তার দেখাতে তোমার কী সমস্যা?’
- ‘আর কতজনকে দেখাব?’
- ‘তাই বলে মানুষের সামনে তুমি-, ছিঃ ছিঃ।’
- ‘দেখি!’
- ‘দেখি দেখি করবে না। থাইল্যাণ্ডে যাও, সিঙ্গাপুরে যাও।’
- ‘পেটের ভেতর একটু শব্দ হয়, এজন্য আমি হিল্লী-দিল্লী করে বেড়াব?’
- ‘মানুষ নাক ঝাড়তে আমেরিকায় যায়, তুমি পেটের চিকিৎসার জন্য ভালো একজন ডাক্তার দেখাবে না! আশ্চর্য!’
- ‘ডাক্তারাতো দেখেই যাচ্ছে!’
- ‘তোমার ফকিরা-অভ্যাস গেলোনা!’

মিজান সাহেব অমিতব্যয়ী ছিলেন না। স্ত্রী তাকে ফকির বলে গালমন্দ করলেও উত্তেজিত হওয়ার কারন নেই। তিনি নির্বিকার বসে থাকেন। তার মনে হয়- একদিন সকালবেলায় পেটপুরে বেলের সরবত কিংবা ইসোবগুলের ভুষি খেলেই সব বাতাস নেমে যাবে, যাকে বলে- তাপস নিঃশ্বাস বায়ে। আঞ্জুমান-আরা বেগম বলেন- ‘বাবাকে বললেই সব ব্যবস্থা হয়ে যাবে।’ মিজান সাহেব বউয়ের গালি এবং রবীন্দ্রসঙ্গীতের প্যারোডি সহ্য করতে পারেন, শ্বশুরমশাইকে একবারে না। এই একটি ব্যাপারে তিনি আদর্শলিপি মানেন না। মিজান সাহেব মুখ খোমা করে বসে থাকেন। আঞ্জুমান-আরা বেগম বললেন, ‘কথা বলনা যে! বাবাকে বলব?’

মিজান সাহেব বেফাঁস কিছু বলার ভয়ে চুপ রইলেন, আর তাতেই হয়তো আঞ্জুমান-আরা বেগমের জিভ ধারালো হয়ে উঠল।
- ‘মৌনব্রত নাকি? ভালোই, যে হারে ধূপের গন্ধ ছাড়ছো-’
- ‘ভাল কোনো কথা থাকলে বল, তোমার পিতাজিকে মাঝরাতে বিছানায় আনতে চাইছি না।’
- ‘সব নেমক-হারাম। আমার বাপের বাড়ীতে বসে-’

মিজান সাহেব অনুচ্চ কণ্ঠে কথা বলে অভ্যস্ত। আজ স্ত্রীর কথায় হঠাৎ তিনি বিস্ফোরিত হলেন, বললেন, ‘চো-ও-প।’ চুপ শব্দটি ‘চোপ’ হিসেবে নিঃর্গত হয় বলেই আঞ্জুমান-আরা বেগম নিজের কানকে অবিশ্বাস করেন এবং তারস্বরে চেচিয়ে ওঠেন, ‘কী বললে?’ মিজান সাহেব আবার গাঁট হয়ে রইলেন, মুখে কোনো কথা নেই। আঞ্জুমান-আরা বেগম তেজী ছিলেন, তার সামনে মেজাজ দেখিয়ে কেউ কোনোদিন পার পায়নি, আজো পাবেনা। কত বড় সাহস!
- ‘কথার জবাব দিলে না যে!”
- ‘একদম চুপ।’

স্বামীর দ্বিতীয় ধমকে আঞ্জুমান-আরা বেগম চুপ হয়ে যান এবং কিছুক্ষণ পরে চুপ থাকাটা বেমানান ঠেকায় তিনি প্রমিত বাংলা উচ্চারণ ভুলে- ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহর আঞ্চলিক ভাষার অভিধানে বাক্য রচনা করেন। মিজান সাহেবও আদর্শলিপির কথা বিস্মৃত হয়ে কটু কথা বলেন এবং বিছানা থেকে উঠে ফ্যানের স্পিড বাড়িয়ে দেন। আঞ্জুমান-আরা বেগম নাকে আঁচল চেপে আবারও বলেন, ‘কী বললা?’ মিজান সাহেব এবার ঠাণ্ডা-গলায় বলেন, ‘চুপ থাক।’ আঞ্জুমান-আরা বেগম স্বামীর তুই-তুকারিতে অভ্যস্ত নন। তাই কী করবেন ভেবে পান না। তিনি বিস্ফারিত চোখে মিজান সাহেবের দিকে তাকিয়ে থাকেন। এ সময়, হঠাৎ করেই মিজান সাহেব টের পান, তার ভাল লাগছে, বেশ ভাল।

অনেকদিন পরে মিজান সাহেবের ঘুম পায়।

সে রাতে মিজান সাহেব যখন গভীর ঘুমে, আঞ্জুমান-আরা বেগম তখনো কাঁদছিলেন। তিনি মাঝরাতে মিজান সাহেবের ধৃষ্টতার ধাক্কা কাটিয়ে উঠলেন এবং বললেন, ‘কত বড় সাহস!’ মিজান সাহেব তখনো গভীর ঘুমে, সাহসের দৈর্ঘ্য-প্রস্থ মাপার অবস্থা তার ছিল না। তবু আঞ্জুমান-আরা বেগম ধাক্কা-ধাক্কি করে স্বামীকে জাগিয়ে তুললেন, এবং কঠিন প্রশ্ন করলেন, ‘তুমি তখন কী বললা আমারে?’ মিজান সাহেব কাঁচা ঘুমে ছিলেন, তিনি ঠিক কোন কোণা থেকে কথা শুরু করবেন ভেবে পেলেন না। শুধু বললেন, ‘চুপ থাক।’

কখনো কখনো একই ওষুধে একই রোগের দুইবার আরোগ্য আশা করা যায়না। এক্ষেত্রেও তাই হলো। আঞ্জুমান-আরা বেগম বললেন, ‘বস্তির লোকের মতো কথা বলবা না! তুই তোকারি করবা না!’ এর উত্তর কেমন হলে মানাবে মিজান সাহেবের জানতেন না। তিনি মনে মনে ভাবতে লাগলেন। চোপ বদমাশ, চুপ কর স্টুপিড, চুপ থাক শয়তান- এমন অনেক কঠিন কথার পারমুটেশন-কম্বিনেশন করে দেখলেন তিনি। ঠিক জমছে না, তার রুচির সাথেও গোণ্ডগোল হচ্ছে। গালাগালিতে মিজান সাহেবের অভ্যাস ছিল না বলেই, যুৎসই বাজে কথাটি খুঁজে না পেয়ে তিনি খুব রেগে উঠলেন এবং বেদম জোরে বললেন, ‘চুপ মাগী!’ আঞ্জুমান-আরা বেগম মিজান সাহেবের ভয়াবহ গালিতে তৃতীয়বারের মতো হতবাক হলেন। এই প্রথমবার তিনি মিজান সাহেবের সশব্দ বায়ু নিঃসরণেও নাকে আঁচল চাপা দিলেন না, কাঁদলেনও না।

গালি পর্ব শেষ করে, মিজান সাহেব অবাক হলেন এবং বুঝতে পারলেন- খুব অনুচিত অকাণ্ড ঘটে গেছে। হোক না মুখরা, কোনো নারীর জেন্ডার নির্দেশ করে গালি দেয়া ঘোর অন্যায়; বস্তির লোকের কাজ। মিজান সাহেবের পাপবোধ শুরু হল। তিনি ব্যক্তিগত অধঃপতনের লজ্জা নিয়ে পাশ ফিরে শুয়ে রইলেন এবং একসময় ঘুমিয়ে পড়লেন। শুধু নবাব বাড়ীর হাঁটেই অমন ঘুম বিক্রি হত একদিন।

আঞ্জুমান-আরা বেগমের সে রাতে ঘুম হলোনা। পৃথিবীতে মোট ঘুমের পরিমান নির্দিষ্ট এবং অপরিবর্তনীয়।


দুই

মিজান সাহেব বাংলাদেশ সরকারের ঈমানদার কর্মকর্তা ছিলেন না; সচিবালয়ের সন্দেহভাজনদের তালিকায় তার নাম ছিল। সচিব, উপসচিব আর অতিরিক্ত সচিবদের যে দলটি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঠ্যাসা-খাওয়ার আতংকে ভোগেন, তিনি সেই দলের। তিনি চোস্ত ইংরেজীতে গালি জানতেন না বলে- অতিরিক্ত সচিব নামের রিকেট রোগে আক্রান্ত ছিলেন। বিদেশী দূতাবাসে সিজদা দেননি, তাই তার আমলনামায় দুর্ভাগ্য বরাদ্দ থাকত এবং সরকারী বরাদ্দ বাড়ী বাতিল হতো। সেনা কর্মকর্তাদের গলফ টুর্নামেন্টে আগ্রহ না থাকায় মাঝে মাঝে দপ্তর বিহীন হয়ে পড়তেন। তার হাঁটুর বয়সী লোকজন- সোয়ারী ঘাট থেকে গুলিস্তানে আসতে আসতেই বাঘডাশ কর্মকর্তা হয়ে গেছেন, মিজান সাহেবের এতে দুঃখ ছিলনা; তিনি ছিলেন চলিষ্ণু আদর্শলিপি- ম্যাজেণ্টা রংয়ের, ডাবল পিন মারা, ষোল পৃষ্ঠার।

সেদিন অফিসে পৌঁছে মিজান সাহেব গুম-মেরে বসে রইলেন। তার মন খারাপ। স্ত্রীকে গালি দেয়াটা রীতিমত অন্যায় হয়েছে, বিষয়টা তিনি ভুলতে পারছেন না। নিজের আচরণে মিজান সাহেব ব্যাপক উৎকণ্ঠিত। সকালে, যখন সচিবালয়ের পিওনেরা মুন্নু সিরামিকের কাপে দুধ-চা রুমে রুমে রেখে যায়, আর টেন্ডার-শিকারীরা আড্ডা বসায় ওয়েটিং রুমে- মিজান সাহেবের কিছু করার থাকেনা। এমন সময় অনেকে এ-কক্ষে ও-কক্ষে পাড়া-বেড়ান, আর নিয়ম করে সবার নামে কূটনামি করেন। সম্প্রতি দপ্তর হারানো ইলিয়াস আহমেদ দাড়িতে হাত বুলাতে বুলাতে এসময় ধর্মের কাজে নামেন, নসিহত করেন।

- ‘আরে মিজান ভাই, আপনারে খুঁইজা পাইনা! আপনার ওষুধ নিয়া টেকনাফ-তেতুলিয়া কইরা বেড়াইতেছি!’
- ‘স্লামালিকুম, ভাল আছেন?’
- ‘আর থাকা! আইজ পেটের অবস্থা কী?’
- ‘একটু বেটার।’
- ‘এই নেন আপনার ওষুধ; কালিজিরার সাথে অ্যালিয়াম সিপা- টেন থাউজেণ্ড। এক্কেবারে কবিরাজি আর হোমিওপ্যাথির ফিউশন। খাইয়া দেখেন, পেট তো পেট- তিতাস গ্যাস পর্যন্ত নিভা যাবে। আল্লা বলছেন-’
- ‘অনেক কষ্ট করলেন। থ্যাংক ইউ।’
- ‘আমার মামা শ্বশুর একবার শেরে বাংলারে এই ওষুধ দিছিলো। মহৌষধ। আহারে বাংলার বাঘ- এক বসায় দুইটা ইলিশ খাইতো! মিজান ভাই, নতুন কোনো খবর আছে নাকি?’
- ‘পত্রিকায়তো কিছু চোখে পড়লো না।’
- ‘আরে ভাই আপনে তো দেখি শ্বশুর বাড়ীতে আছেন; ওজন স্তরে ফুটার খরবও শালীদের কাছ থিকা জানতে হয়! পদোন্নতি বঞ্চিতদের আন্দোলন চলতেছে- সেই খবর রাখেন?’
- ‘তাই নাকি!’
- ‘এই সরকারের আয়ু গুইনা গুইনা তিনমাস। বিশাল আন্দোলন শুরু হইতেছে। বনি ইসরাইলের কথা মনে আছে? কিতাবে আছে-’
- ‘আন্দোলনের খবর কে দিলো?’
- ‘কে দিব মানে! এক্কেবারে আর্মির কইলজা থিকা খবর বাইর কইরা আনছি। যারে তারে ওএসডি করে, ডাস্টবিনে ছুইড়া মারে- আল্লার একটা বিচার আছে না, কি বলেন? একবার রসুলে পাক-’
- ‘নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন না হলে তো-’
- ‘নিয়মের মায়রে বাপ; হাইকোর্টের হোগা আর দেখাইয়েন না, প্লিজ।’

মিজান সাহেব এমন কথার কী জবাব দেবেন ভেবে পান না। তিনিও হয়তো মহেঞ্জোদারো সভ্যতা থেকে একই চেয়ারে বসে আছেন, তবু কুৎসিত শব্দ ব্যবহারে তার অভিরুচি নেই। ইলিয়াস আহমেদ পদোন্নতি বঞ্চিতেদের দলে নন, বরং রাতারাতি পায়াভারি হয়ে ওঠা সচিব ছিলেন। ঘুষের অভিযোগে সম্প্রতি তাকে দপ্তর বিহীন করা হয়েছিল, সেই গোস্বা থেকে তিনি এমন তেজি বয়ান ছাড়ছেন বোধ করি। মিজান সাহেব কালিজিরার আর অ্যালিয়াম সিপার ফিউশন-বটিকা মুখে পুরে বসে থাকেন, তার এসিটিডি শুরু হয়েছে।

দুপুর নাগাদ মিজান সাহেবের অম্ল-যাতনা চরমে উঠল এবং পেট-পাকানো গুট গুট শব্দের এক ফাঁকে খরব পেলেন- ইলিয়াস আহমেদকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়েছে। বাড়ী ফেরার আগে, ঢাকা ক্লাবের আড়মোড়া ভাঙ্গা বিকেলে- ইলিয়াস আহমেদের পিওন টেবিলে মিষ্টি রেখে গেল, আর জানাল, ‘ছারে ছালাম দিছে।’

মিজান সাহেব পরশ্রীকাতর নন। তিনি অম্বল আর ফুলে থাকা পেট নিয়ে ইলিয়াস আহমেদের কক্ষে আসেন।
- ‘কংগ্রাচুলেশনস।’
- ‘থ্যাংকু, থ্যাংকু! আল্লা বলছেন, আমি ধৈর্যশীলদের-’
- ‘মিষ্টির জন্য ধন্যবাদ।’
- ‘আপনারে নিয়া আমার একটা প্লান আছে। ওই যে বলতেছিলাম- কারা যেন সচিবালয়ের মধ্যে আন্দোলন করতেছে-’
- ‘পদোন্নতি বঞ্চিতদের কথা বলছেন?’
- ‘আপনারা কয়েকজন মিলা ওই বাঞ্চোতগো বিরুদ্ধে খাড়ান। পিছনে আমরা সিনিয়ররা আছি।’

মিজান সাহেব এমন প্রস্তাব মাঝে মধ্যেই পান, কিন্তু তার দল-পাকানোর ধাঁত নেই। সবাইকে দিয়ে সব কাজ হয়না। তিনি এর ওর অদৃশ্য ছিদ্রে আঙ্গুল চালনায় অপটু ছিলেন। তিনি বিগলিত হাসি দিয়ে বললেন, ‘এর মধ্যে আমি কেন?’ মিজান সাহেবের কথার ইলিয়াস আহমেদ ঘেউ করে ওঠেন, ‘ম্যান্দা-মারা, মুনাফেক লোক নিয়া সরকার চালানো মুশকিল। আইয়ামে জাহিলিয়াতের যুগে-।’ ইলিয়াস আহমেদের কথায় মিজান সাহেব চিন্তার খেই হারিয়ে ফেলন। কী নিয়ে যেন কথা হচ্ছিল? তিনি ভাবতে থাকেন- ইলিয়াস আহমেদকে কঠিন কিছু কথা শোনানো দরকার। কী কথা বলা যায়? তিনি বলতে পারেন, ইলিয়াস সাহেব, আপনি কটূ কথা বলবেন না, প্লিজ। অথবা, সবারই ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দ-। অথবা গতরাতের মতো বলে উঠতে পারেন, চো-ও-ও-প। মিজান সাহেবের মাথায় চাপ বাড়তে থাকে, পেটেও। খলকে বিশ্বাস করিও না। বাল্যশিক্ষার পুস্তিকাটি তার চোখের সামনে নেচে বেড়ায়, তিনি হাঁসফাঁস করে ওঠেন, কী বলা যায়? সহজ করে কী বলা যায়? এরই এক ফাঁকে, মিজান সাহেবের কথা হাতড়ানোর অবসরে, সবকিছু তালগোল পাকায়; তিনি খুব ঠাণ্ডা গলায় বলে ওঠেন, ‘সান অব এ্যা বিচ!’ ইলিয়াস আহমেদ অনেক গালি হজম করেছেন জীবনে। বড় হতে হলে গালি খেতেই হয়; শেখ মুজিবও খেয়েছেন। তবুও এই মূহুর্তে তিনি প্রস্তুত ছিলেন না। অন্ততঃ মিজান সাহেবের কাছ থেকে তিনি কোনো গালি আশা করেননি। ইলিয়াস আহমেদ পকেটে রুমাল খুঁজতে লাগলেন, কপালে ঘাম চিড়বিড় করছে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিবকে গালি দেয়া কোনো কাজের কথা নয়। মিজান সাহেব বুঝতে পারলেন কাজটি ঠিক হয়নি। মাথা ঠাণ্ডা করা দরকার। ঠাণ্ডা মাথায় ভেবে বের করতে হবে- কী হচ্ছে এসব! তিনি কেন বাজে কথা মুখে আনবেন? ছিঃ! কটুবাক্য কহা অনুচিত, ঋষি বাক্য শীরধার্য।

মিজান সাহেব লজ্জায় মরে যেতে যতে আবিষ্কার করলেন, তার ভাল লাগছে; এই-সেই ভাল। আহ!

সেদিন সারা বিকেল মিজান সাহেব মনমরা হয়ে রইলেন। বাড়ী ফেরার পথে, প্রতিদিনের রুটিন মাফিক জ্যামে আটকা পড়ে- তিনি জীবনের মহোত্তম কথা ভাবতে বসলেন। তিনি যেন ম্যাচের কাঠি দিয়ে কান খোঁচাতে থাকা উদাসী বার্ট্রাণ্ড রাসেল, নিরীহ চেহারার স্বামী বিবেকানন্দ, মাথায় স্কার্ফ দেয়া মাদার তেরেসা। কিংবা তিনি হয়তো আরো বড় কিছু- চব্বিশ তলা বিল্ডিংয়ের চেয়েও বড়, ট্রাফিক জ্যামে আটকে থাকা অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেনের মতো তীব্র, দাড়াশসাপের লেজের চেয়েও দীর্ঘ। মিজান সাহেব বিশালতার চাপে সশব্দ বায়ু নির্গত করেন এবং কিছুই হয়নি- চেহারায় ট্রাফিক পুলিশের দিকে তাকিয়ে থাকেন।
- ‘এই জ্যাম ছাড়বে কখন?’
- ‘কলসী মিছিল শেষ হইলেই ইনশাল্লাহ-’

কে যেন বেশ খুশি খুশি গলায় জানায়, শুধু কলসী মিছিলই না, ঝাড়ু মিছিলও চলছে। মিজান সাহেব সকালের পত্রিকায় মারদাঙ্গা প্রধানমন্ত্রী এবং মারমুখী ঠিকা-ঝিদের ছবি দেখে অভ্যস্ত। তিনি কলসী, ঝাড়ু, জব্বারের বলি খেলা, পল্টন ময়দান এবং ট্রাফিক জ্যামে আটক মানুষের আমড়া কিনে খাওয়াকে জাতীয় ঐতিহ্য ভাবতেন। এসব ভেবে মিজান সাহেব যখন পাকস্থলির কথা প্রায় ভুলে গেলেন, তখনই তার মুঠোফোনটি আড়মোড়া ভেঙ্গে চেচিয়ে উঠল।
- ‘হ্যালো! মিজান সাহেব বলছেন?’
- ‘স্লামালিকুম। কে বলছেন?’
- ‘আমি মিজান সাহেবকে চাইছিলাম।’
- ‘হ্যালো! কে?’
- ‘এটা কি মিজান সাহেবের নাম্বার?’
- ‘স্লামালিকুম। আপনাকে ঠিক-’
- ‘এতবার সালামের উত্তর দিতে পারব না। আমি ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে-’
- ‘জ্বী বলুন! বলুন!’
- ‘একটু লাইনে থাকুন।’

মিজান সাহেব বুক-ধড়াস কাঁপুনি নিয়ে টেলিফোন ধরে রইলেন। তিনি ধর্মমন্ত্রণালয়ের খাস সচিবকে ইংরেজীতে গালি দিয়েছেন- এ পাপের শাস্তি তাকে পেতেই হবে। দুনিয়া এবং আখিরাতে মিজান সাহেবের পাপের বোঝা নিয়ে টানাটানি শুরু হয়ে গেছে। ইলিয়াস আহমেদ তার নামে ধর্মমন্ত্রীর কাছে নালিশ করে দিয়েছেন? হতেও পারে। শালার-পো ধর্মের কথা বলে, ঘুষ খায়; পাক্কা দু’নম্বর।

ছিঃ ছিঃ! মিজান সাহেব কেন ইলিয়াস আহমেদকে শালার-পো ভাবছেন! হায় হায়, তিনি শুধু মুখেই খারাপ কথা বলেন না, তার চিন্তাও বাজে। কী মুশকিল! তিনি নৈতিক স্খলনের গর্তের পাশে উবু হয়ে বসে থাকেন। বড় পাপ হে!

- ‘হ্যালো! আপনারা পদোন্নতির দাবীতে কী একটা আন্দোলন-’
- ‘হ্যালো! স্লামালিকুম। কে বলছেন?’
- ‘আমাদের আরো বড় বড় ইস্যু নিয়ে ভাবতে-’
- ‘হ্যালো! আপনাকে ঠিক-’
- ‘বিষয়টা বুঝতে পারছেন?’
- ‘স্লামালিকুম। জ্বী বলুন!’
- ‘কাল থেকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বটা বুঝে নিন-’
- ‘হ্যালো! ওখানে ইলিয়াস আহমেদ-’
- ‘তাকে স্বরাষ্ট্র দপ্তরে-’

মিজান সাহেব ধর্ম মন্ত্রণালয় আর স্বরাষ্ট্র দপ্তরের পাল্লায় পড়েন। পদোন্নতির সিঁকেয় দড়ি ছেঁড়ার আগেই তিনি একটা এন্টাসিড ট্যাবেলেট মুখে দেন, আবার যন্ত্রণা শুরু হয়েছে। আন্দোলন থামাতে হবে! এসবের মধ্যে তিনি কেন! মিজান সাহেব পাকস্থিলির যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে ওঠেন; তার ফেঁপে থাকা পেট বেশুমার গ্যাস বানায়; অপরিসর গাড়ীতে বসে তিনি বিস্ফোরন্মুখ মাগুরছড়া হয়ে ওঠেন।

ঠিক এই মূহুর্তে কোনো দপ্তর নয়, সন্ধ্যার আগেই বাড়ী ফিরতে চান মিজান সাহেব। বাড়ী পৌঁছেই আঞ্জুমান-আরা বেগমের কাছে ভুল স্বীকার করতে হবে। ঔদার্য মহৎ গুণ। ফোনে যেন কার সাথে কথা বলছিলেন তিনি? ধর্মমন্ত্রী? যে-ই হোক, শালা একটা আস্ত শুয়োর- সালামের উত্তর দেয় না, নাম বলে না। ডাট দেখ! স্কাউণ্ড্রেল! মিজান সাহেব ভীষণ বিরক্ত হয়ে ওঠেন, ‘হ্যালো! আপনাকে তো ঠিক-’, ওপাশ থেকে উত্তর আসে, ‘আন্দোলনটা থামাতে হবে, সিনিয়ররা সাথে থাকবে।’ রাস্তার দীর্ঘ জ্যামে আটকা থাকার জন্যই হোক, আর এসিডিটির উৎপীড়নেই হোক, মিজান সাহেব দিগ্বিদিক কাঁপিয়ে বলে ওঠেন, ‘বাস্টার্ড’, ফোনের ওপাশের মানুষটি ইংরেজীতে কাঁচা হতে পারে ভেবে তিনি গালিটির বাংলা তরজমা করারও চেষ্টা চালান, ‘বে- বে-!’

বাস্টার্ড কথাটির বাংলা কী? মিজান সাহেব দ্রুত ভাবতে থাকেন। বেশ্যাপুত্র? বেশ্যাজাত? হতে পারে, কিন্তু শব্দদুটো ঠিক যুৎসই লাগছে না। কেমন কাব্যিক। বরাহ নন্দন ঘরানার। মিজান সাহেবের তোতলামী শুনে তার গাড়ির ড্রাইভার বলে ওঠে, ‘ছার, বেজম্মা বলেন, বেজম্মা!’ তিনি হুঙ্কার ছাড়েন, ‘বেজম্মা!’ মিজান সাহেব ফোন নামিয়ে রাখতেই টের পান- এই প্রথম তিনি ভুল উচ্চারণ করলেন। তিনি ভ্রু কুচকে বসে রইলেন।

মিজান সাহেবের ডানে-বায়ে বস্তাবন্দী বেড়ালের মতো পাপবোধ চেপে বসে। কী হচ্ছে এসব! তিনি কেন এত অসহিষ্ণু হয়ে উঠছেন? কেউ দেদারছে কুৎসিত গালিগালাজ করেছে ভাবতেই মিজান সাহেবের গা গুলিয়ে ওঠে। যা-ই ঘটুক চারপাশে, কোনো অজুহাতেই তিনি অরুচিকর কথা বলতে পারেন না। কার সাথে যেন কথা বলছিলেন তিনি? কোনো মন্ত্রীর সাথে? সে যে-ই থাকুক ফোনের ওপাশে, মিজান সাহেব ক্ষমা চেয়ে নেবেন। মিজান সাহেব ফোন করেন। একের পর এক রিং বেজে চলে; তিনি পাপের বোঝা কাঁধে সাফা, মারওয়া পর্বত পাড়ি দেন।
- ‘হ্যালো!’
- ‘বলুন!’
- ‘আপনার স্যারকে একটু-’
- ‘স্যার মাগরিবের নামাজে দাঁড়িয়েছেন।’
- ‘তাকে কি দয়া করে একটি ম্যাসেজ দিতে পারবেন?’
- ‘বলুন!’
'শুধু বলবেন’, মিজান সাহেব একটু থেমে থাকেন, তারপর বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে তাকে আমি বেজম্মা বলেছি। আমি না ভেবেই কথাটি বলেছি। আসলে-’, মিজান সাহেব আবার থামেন, কথা সাজান, খুব লাগসই কোনো বাক্য মাথায় আসেনা, বলেন, ‘আসলে ওটি ভুল উচ্চারণ। সঠিক শব্দটি হবে- বেজন্মা। বে-জন-মা। নরেন বিশ্বাসের অভিধানে শব্দটি এভাবেই উচ্চারিত হয়েছে।’
- ‘ঠিক বুঝতে পারলাম না!’
- ‘আছরের ওয়াক্ত থেকে রাস্তায় বসে আছি বলে উচ্চারণ অপ্রমিত হয়ে থাকবে। আর আমার ড্রাইভারটাও এক অকাট ছাগল। ওর কথা শুনে- , সে যাহোক, আপনার স্যারকে বিষয়টা বুঝিয়ে বলবেন প্লিজ।’

সেদিন বাড়ী ফেরার পথে মিজান সাহেব এক ট্রাফিক পুলিশকে চড় মারলেন; গাড়ীর দরজায় চুইংগামের মতো লেপ্টে থাকা এক ভিক্ষুককে আছাড়-মারার হুমকি দিলেন, হাতে ময়লা লাগতে পারে ভেবে এক বৃদ্ধকে মারতে মারতেও মারলেন না এবং বাড়ীতে পৌঁছে সারাদিনের অকাণ্ডের উত্তর-দক্ষিণ খুঁজে আবিষ্কার করলেন- তার কয়েকদিন বিশ্রাম প্রয়োজন। ঔষধি ফল পাকিলে মরে। মিজান সাহেবের ধৈর্যে পাক ধরতে শুরু করেছে।


তিন

পত্রিকায় ট্রাফিক পুলিশকে চপেটাঘাতের সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায়- মিজান সাহেবের বিশ্রাম নেয়া হয়নি। পরেরদিনই পদোন্নতির চিঠি হাতে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে কদমবুচী করে এসেছিলেন।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ২:১২
৫১টি মন্তব্য ২৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×