somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাতৃভাষা বাংলায় আবহাওয়া বিজ্ঞান চর্চা (পর্ব ২৩): তাপ-প্রবাহ কি? কোন স্থানে তাপ-প্রবাহ অবস্থা ঘোষণা করা হয় কখন?

০৮ ই এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৩:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



রোদ দেখে কেউ করিসনা ভয়, আড়ালে তার মেঘ হাঁসে।

আমি গতকালের পূর্বাভাসে উল্লেখ করেছি যে আগামী ৭ দিন দেশের উপর দিয়ে তাপ প্রবাহ বয়ে যাওয়ার কোন সম্ভাবনা নাই। অনেকই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন আমার দাবির সপক্ষে। কোন স্থানের উপর তাপ প্রবাহ অবস্থা ঘোষণা করার জন্য কিছু অবশ্যকীয় শর্ত পূরণ করতে হয়। আবহাওয়া বিজ্ঞানের ভাষায় কোন স্থানে তাপপ্রবাহ অবস্থা বিরাজ করবে যদি সেই স্থানের উর্ধা-আকাশে বায়ুর নিম্নচাপ ও ভূ-পৃষ্ঠে বায়ুর উচ্চ-চাপ অবস্থা বিরাজ করে দীর্ঘ সময় ধরে। Heat waves are generally caused by quasi-stationary anticyclonic circulation anomalies or atmospheric blocking।

উপমহাদেশে ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের সংজ্ঞাকেই সাধারণত মানদণ্ড হিসাবে গ্রহণ করা হয়ে থাকে। ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের সংজ্ঞা অনুসারে সমতল ভূমিতে অবস্থিত কোন অঞ্চলের কমপক্ষে ২ টি আবহাওয়া স্টেশনে পর-পর ২ দিন দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের বেশি থাকে তবে সেই স্থানের উপর তাপ-প্রবাহ অবস্থা ঘোষণা করা হয়।

তাপপ্রবাহের অন্য ২ টি সংজ্ঞা হলও কোন স্থানের বছরের ঐ সময়ের স্বাভাবিক তাপমাত্রা (এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহের ৩০ বছরের গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যদি ৪ দশমিক ৫ থেকে ৬ দশমিক ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস বেশি হয় তখন তাকে তাপ প্রবাহ (Heat Wave) বলা হয়। কোন স্থানে বছরের ঐ সময়ের স্বাভাবিক তাপমাত্রা সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যদি ৬ দশমিক ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস অপেক্ষা বেশি হয় তখন তাকে তীব্র তাপ প্রবাহ (Severe Heat Wave) বলা হয়।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তাপ প্রবাহের সংজ্ঞায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার মানদণ্ড হিসাবে গ্রহণ করে ৩৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে। ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর তাপ প্রবাহকে Heat Wave ও Severe Heat Wave নামে ২ প্রকারে ভাগ করলেও বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর তাপ প্রবাহ কে ৪ ভাগে ভাগ করে থাকে। এখানে উল্লেখ্য যে দেশের একটি বিশাল এলাকা জুড়ে নিম্নোক্ত অস্বাভাবিক তাপমাত্রা বিরাজ করতে হবে মাত্র ২/৪ টি জেলায় তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসের উপরে উঠলেই তাপ-প্রবাহ ঘোষণা করা যাবে না।

১) মৃদু তাপ প্রবাহ (তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস) [স্বাভাবিকের চেয়ে ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস বেশি]
২) মধ্যম তাপ প্রবাহ (তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস) [স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস বেশি]
৩) তীব্র তাপ প্রবাহ (তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রী সেলসিয়াস) [স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস বেশি]
৪) খুবই তীব্র তাপ প্রবাহ (তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রী সেলসিয়াস অপেক্ষা বেশি) [স্বাভাবিকের চেয়ে ৬ ডিগ্রী কিংবা সেলসিয়াস বা তা অপেক্ষা বেশি]

তাপ প্রবাহ অবস্থাকে তুলনা করা যায় ঈদের সময় ঢাকা-টাঙ্গাইল মাহ-সড়ক কিংবা ঢাকা-কুমিল্লা মহাসড়কে একই স্থানে গাড়ি স্থবির হয়ে পড়াকে। স্বাভাবিক সময়ে ঢাকা থেকে কুমিল্লা পৌছাতে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা লাগে। কোন দিন যদি ঢাকা থেকে কুমিল্লা পৌছাতে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা লাগলে আপনি যেমন সেই যানজটকে মাহা-যানজট বলতে পারবেন না। পত্রিকার পাতায় ঐ সংবাদও প্রকাশিত হবে না। কিন্তু যদি ঢাকা থেকে কুমিল্লা পৌছাতে ১২ থেকে ২০ ঘণ্টা লাগে তবে নির্দ্বিধায় আপনি সেটাকে মাহাজানযট বলতে পারবেন; পত্রিকার পাতায়ও সেই সংবাদ প্রকাশিত হবে। প্রকৃতির ক্ষেত্রেই একি ঘটনা ঘটে মাঝে-মধ্যে। আমি আপনাদের নিশ্চিত করতে চাই যে ভারতীয় উপমহাদেশের উপর ঐ ধরনের কোন প্রাকৃতিক যানজট লাগে বায়ুপ্রবাহ স্থবির হয়ে পড়ে নি।

নিচে যুক্ত করা জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত ছবিতে দেখুন মধ্য ভারতের ব্যাপক পরিমাণে মেঘের সৃষ্টি হয়েছে ও সেই মেঘ বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর হচ্ছে যা আজ ৮ ই এপ্রিল ২০২৩ তারিখে সন্ধ্যার পর থেকে বাংলাদেশের উপর দিয়ে পূর্ব-ভারতের রাজ্যগুলোর দিয়ে প্রবাহিত হবে।




সর্বশেষ এডিট : ২০ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১৯
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ড্রাকুলা

লিখেছেন সুদীপ কুমার, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১২

কোন একদিন তাদের মুখোশ খুলে যায়
বেরিয়ে আসে দানবীয় কপোট মুখায়ব।

অতীতে তারা ছিল আমাদের স্বপ্ন পুরুষ
তাদের দেশ ছিল স্বপ্নের দেশ।
তাদেরকে দেখলেই আমরা ভক্তিতে নুয়ে পড়তাম
ঠিক যেন তাদের চাকর,
অবশ্য আমাদের মেরুদন্ড তখনও... ...বাকিটুকু পড়ুন

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪১

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।
১. এফডিসিতে মারামারি
২. ঘরোয়া ক্রিকেটে নারী আম্পায়ারের আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক

১. বাংলা সিনেমাকে আমরা সাধারণ দর্শকরা এখন কার্টুনের মতন ট্রিট করি। মাহিয়া মাহির... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×