somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আবার মুক্তিযোদ্ধা তালিকা : আমার শংকা

১৯ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৩:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মার্চে স্বাধীনতার ৪৪ বছর পুর্ণ হলো। এই দীর্ঘ সময়কাল একটি জাতির ইতিহাসে নিশ্চয়ই অনেক লম্বা সময় যা অনেক উত্থান-পতন ও ভাঙ্গা-গড়ার ভেতর দিয়ে অতিবাহিত হয়েছে। সে যাই হোক, এ লেখার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধাদের নতুন তালিকা নিয়ে যা তৈরির কাজ একযোগে শুরু হবে ২৮ মার্চ, ২০১৫ থেকে। বলা হচ্ছে, বাদপড়া মুক্তিযোদ্ধাদের ওই তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করার সুযোগ দিতেই নতুন তালিকা করার উদ্যোগ।

১৯৭১ এ বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর এযাবত যতোগুলো সরকার এসেছে প্রত্যেক সরকারই যার যার মতো মুক্তিযোদ্ধা তালিকা করেছে। বলা বাহুল্য যে, প্রত্যেকটি তালিকাই ত্রুটিপুর্ণ। আর যেহেতু এসব তালিকা নানা অসঙ্গতিতে ভরা তাই তা গ্রহণযোগ্যও নয়। এসব তালিকায় সবচেয়ে বড় ত্রুটি হচ্ছে - ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের অন্তর্ভুক্তি অর্থাৎ যারা আদৌ মুক্তিযুদ্ধ করেনি তাদেরকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তিকরণ। কাজটা নিঃসন্দেহে অন্যায় কিন্তু তা জেনে বা বুঝেও পর্যায়ক্রমিক সরকারগুলো বিশেষ উদ্দেশ্যে ওই ধরনের তালিকা প্রস্তুত করে এবং সেভাবেই চালিয়ে যায়।

স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছে এমন মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল মোট এক লাখ ২০ হাজার। আরো ৩০ হাজার প্রশিক্ষিত মুক্তিযোদ্ধা যারা ছিল রণাঙ্গনে যোগদানের পথে কিংবা প্রশিক্ষণ শিবিরে। এই সংখ্যা অর্ধাৎ ১ লাখ ৫০ হাজার হচ্ছে ১১টি সেক্টরের জন্য আর্মি, ইপিআর(বর্ডারগার্ড), পুলিশ, আনসার এবং ছাত্র ও যুবকদের ভেতর থেকে বাছাই ও প্রশিক্ষণ দেয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে গঠিত 'মুক্তিবাহিনী'র মোট সদস্য সংখ্যা। স্বাধীনতার পর মুজিব সরকারের আমলে যে তালিকা করা হয় সেই হিসাবে আসল মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা মুটামুটি এরকমই। অর্থাৎ তখনো রাজনৈতিক বিভেদ শুরু হয় নি। অতঃপর জিয়া সরকারের সময় যে তালিকা করা হয় তখন থেকে শুরু হয়ে এরশাদ, খালেদা, হাসিনা সব সরকারের আমলেই কমবেশি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকে। বর্তমানে সেই তালিকায় নাম আছে প্রায় ৬ লাখ যার মধ্যে সাড়ে ৪ লাখই ভুয়া। সময়ের পরিক্রমায় এখন পরিস্থিতি এমন যে, ওই ভুয়াদের মধ্যে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা খুঁজে বের করাই কঠিন। বরং ওই তালিকা এখন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার তালিকা বলাই বেশি যুক্তিযুক্ত।

বর্তমানে আবারও মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী দল আওয়ামী লীগ রাস্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত। কিন্তু তারা নানা যুক্তি দেখিয়ে বলছে, আগের কোনো তালিকাই সঠিক ছিল না, এমন কি আগেরবার ক্ষমতায় থাকাকালীন তারা যে তালিকা করেছিল সেটিও ত্রুটিপুর্ণ ছিল; তাই তারা নতুন তালিকা করতে যাচ্ছে। সরকারের এধরনের কার্যকলাপ নিঃসন্দেহে খুবই বিরক্তিকর। সরকারের এ সম্পর্কিত সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাতে পারতাম যদি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের ছাঁটাই করার জন্য কোনো অভিযান চালানো হতো। নতুন তালিকায় কারা যুক্ত হতে চাইছে তা অনুমানও করা যাচ্ছে না। নতুন কোনো সরকারও ক্ষমতায় নেই যে সরকার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা শনাক্ত করতে অক্ষম। তাহলে কেন এই হঠকারিতা বা ছল-চাতুরি।

২৮ মার্চ থেকে নতুন যে তালিকা করার দিন ধার্য করা হয়েছে তা নিয়ে সম্প্রতি জনৈক মুক্তিযোদ্ধা হাইকোর্টে একটি রীট দাখিল করে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা নির্ধারনের আদেশদানের জন্য আবেদন করেছেন।

সরকারের এই সিদ্ধান্তে আমি ব্যক্তিগতভাবে একটু শংকিত। নতুন তালিকায় আবার কত সংখ্যক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা যোগ হবে কে জানে!

সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:৫৩
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×