somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভেবে দেখবেন কি?

২৭ শে মার্চ, ২০১৫ ভোর ৪:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী, রাজাকার-আলবদর-আলশামস্ বাহিনী দেশের যেসব এলাকায় গণহত্যা, ধ্বংস, লুটপাট চালিয়ে নারকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি করে সেসব এলাকার মধ্যে ঈশ্বরদী অন্যতম। আওয়ামী লীগ, কমিউনিস্ট পার্টি, ন্যাপ নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের খুব কম বাড়ি-ঘরই ছিল যা শত্রুবাহিনীর হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় নি। অক্ষত ছিল একমাত্র তাদের বিষয়-সম্পত্তি যারা ওই সময় পাকবাহিনীর দালালি করেছে, শান্তি কমিটির হয়ে কাজ করেছে কিংবা রাজাকার-আলবদর-আলশামস্ বাহিনীতে যোগ দিয়েছে। যুদ্ধ শেষে দেখা গেল ওই সব নেতাকর্মীরা বিশেষ করে যারা সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেছিল তারাই তখন নিঃস্ব ও সর্বহারা, মাথা গোঁজার ঠাঁই পর্যন্তও তাদের নেই। তখন সারা দেশের পরিস্থিতিই একই রকম, এসব সামাল দিতে নতুন সরকারের অবস্থাও তথৈবচ। সর্বত্র শুধু নাই, নাই আর হাউ-কাউ, এক সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেল, শুরু হয়ে গেল দুর্ভিক্ষ, '৭৪ এ দেশে এক থেকে দেড়লাখ লোক অনাহারে মারা গেল। কারো কিছু বলার ছিল না, শুধু চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া। মুক্তিযোদ্ধারাও তখন সাধারণ জনগণের কাতারে সামিল, আলাদা সুযোগ-সুবিধা বলে চাওয়া-পাওয়ার কিছুই ছিল না। যাদের কিছু জমিজমা ছিল তারা খেয়েপরে বেঁচেছিল আর বাদবাকিরা হয়ে গেল নিঃস্ব থেকে নিঃস্বতর। ওই অবস্থা থেকে অধিকাংশই আর কখনো উঠে দাড়াতে পারে নি। অনেককেই স্বীয় অস্তিত্ত্ব হারাতে হয়েছে এরকম যুদ্ধোত্তর প্রতিকুল পরিস্থিতিতে।

সে যাই হোক, এখন ৪৪ বছর পরে স্বাধীন বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেক বদলছে, সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে, শিক্ষা-দীক্ষায় এগিয়েছে, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটেছে, আশাহতরা নতুনভাবে বাঁচার স্বপ্ন দেখছে। বাংলাদেশের মানুষ নিজেরাই নিজেদের ভাগ্য বদলাতে অহর্নিশ কাজ করছে।

স্বাধীনতা দেশের সব মানুষকেই কিছু না কিছু দিয়েছে বা দিচ্ছে, অন্তত কাজ করার ক্ষমতা, পরিশ্রম করার ইচ্ছা ও বাস্তবতা এবং নতুনভাবে বেঁচে থাকার দিকনির্দেশনা। যা বলছিলাম, কোনো ক্ষেত্রেই মাথা তুলে দাড়াতে পারেনি শুধু মুক্তিযোদ্ধারা। তাহলে এখন কী করতে হবে?

ঈশ্বরদী, সৈয়দপুর, খুলনা, ঢাকার মিরপুর, মোহাম্মদপুর ও চট্টগ্রামে পরিত্যক্ত বিহারি ক্যাম্প যেগুলো এদিক-সেদিক থেকে লোকজন এসে দখল করে আছে সেগুলো পুনরুদ্ধারপুর্বক ছোট ছোট প্লট আকারে দেড় লাখ মুক্তিযোদ্ধার নামে স্থায়ী বন্দোবস্ত দিতে হবে। তাদেরকে সেখানে বাড়ি করার জন্য নগদ অর্থ সহায়তা ও বিশেষ লোন বরাদ্ দিতে হবে যাতে তারা আবার মাথু তুলে দাড়াতে পারে এবং নিজেরা কিছু করতে পারে। এই সংখ্যা খুব বেশি নয় বিধায় সরকারের কাছে এটি তেমন কোনো চাপও সৃষ্টি করবে না। নতুন আবাসিক এলাকার মডেলে কিছু করা হলে তা দেখতেও ভাল লাগবে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ থিম-এর সাথে সঙ্গতিপুর্ণ হবে। সরকারি সহায়তায় সেনাবাহিনী, সাংবাদিক ও অন্যান্য কিছু পেশার লোকজনের জন্যে এরূপ বেশ কিছু উদ্যোগ ইতিমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে এবং এর সবগুলো রাজধানীকেন্দ্রিক। তবে আমার এ চিন্তা-ভাবনা মফস্বলকেন্দ্রিক। আমার মনে হয় এটা করা হলে দেশের মানুষ নিশ্চয়ই এজন্য সরকারকে বদদোয়া করবে না বরং খুশিই হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে হাউ-কাউ চিরদিনের জন্য বন্ধ হবে।
............................................................................................



সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০১৫ ভোর ৪:৫৪
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×