কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি কিভাবে উপভোগ করা যায়, এই নিয়ে অনেক পরিকল্পনা হলো। প্রায় অধিকাংশ পরিকল্পনার গন্তব্য সেই খিচুড়ী আর ইলিশ মাছে। আমার ভোট এখানে অতি নগন্য। তাই আমি চুপ রইলাম।
সান্ধ্যকালীন আড্ডা তখন সবেমাত্র পুর্ণতা পাবার লোভে আকুপাকু করছে। হঠাৎ উপরের তলা থেকে একটা চিৎকার শোনা গেলো। ঘটনা কি জানার জন্য উপরে দুজনকে সাথে সাথে উপরে পাঠানো হলো। দশ মিনিট পর দুইজনই বেশ গম্ভীর মুখে ফেরত এলো। ঘটনা কি জানতে চাইলে শুনলাম অদ্ভুত এক কাহিনী।
ঐ ফ্ল্যাটে যিনি থাকেন, তিনি বাইরে থেকে এসে আবিষ্কার করেন যে, রান্না ঘরের যে আবর্জনা জমেছিলো, সেটা ডাস্টবিন থেকে এনে কে যেন উনার বেডরুমের একটা কর্নারে ফেলে গেছে।
আমি বিরক্ত হয়ে বললাম, এটা তো বিড়ালের কাজ। এতে এত ভয় পাবার কি আছে?
কিন্তু বাসার লোকজন বললেন, তাদের বাসায় বিড়াল ঢোকার কোন সুযোগ নেই। কারন বাইরে যাবার সময় দরজা জানালা বন্ধ করে তিনি বাইরে গেছেন। আর এই ঘটনা শুধু একবার না। এর আগেও কয়েকবার ঘটেছে। শুধু তাই নয়, চেয়ারগুলোও নাকি এলোমেলো হয়ে থাকে।
আমি স্বাভাবিক দৃষ্টিতে যেখানে বিড়াল ছাড়া অন্য কিছু দেখতে পাচ্ছি না সেখানে আড্ডায় উপস্থিত বাকি সকল সদস্য চকচক চোখে আধিভৌতিক গল্পের আসর দেখতে পেলেন। ব্যস শুরু হলো ব্যক্তিগত ভৌতিক অভিজ্ঞতার গল্প। আমি যখন এই বাড়িতে ইতিপূর্বে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন আধি ভৌতিক ঘটনা সম্পর্কে জানছি, ঠিক তখনই কারেন্ট চলে গেলো।
পোলাপাইনের সম্মিলিত চিৎকার আর খুশি দেখে মনে হলো - আজ বুঝি ঈদ।
অথচ আগামীকাল শুক্রবার এবং সাত সকালে উঠে আমাকে ইলিশ মাছ কেনার জন্য বাজারে যেতে হবে।
যাইহোক, কারেন্ট যাওয়ার পর চা চক্র শুরু হলো। সাথে উপস্থিত হলো, মুড়ি মাখা। যে যার মনের মাধুরি ভুতের গল্প বলার চেষ্টা করছে। আমি কিছু স্বাভাবিক ও যৌক্তিক প্রশ্ন তুলে স্ত্রীর বিরক্তমাখা ও রাগান্বিত চাহুনি টের পেলাম। সাথে সাথে বুঝলাম, ভুতের গল্প শোনার প্রধান শর্ত - স্বাভাবিক বুদ্ধি বিবেচনা বাদ দিয়ে এইসব গল্প শুনতে হবে। সায়েন্সফিকশন হচ্ছে অ-ভুত পুর্ব (!) আর ভুতের গল্প হচ্ছে ভুত পুর্ব (!)
আড্ডার এই পর্যায়ে মনে হলো, ব্লগারদের কাছ থেকে এই ধরনের ঘটনা পোষ্ট আকারে জানতে পারলে মন্দ হতো না। ব্লগাররা লিখে জানাতে পারেন, তাদের জীবনে ঘটে যাওয়া বা শোনা সেরা আধিভৌতিক ঘটনা। যার লেখা সবচেয়ে বেশি ভালো লাগবে বলে প্রতীয়মান হবে, তার জন্য থাকবে একটা বিশেষ পুরুষ্কার।
বিশেষ নির্দেশনাঃ যদিও ভুতের গল্পের সত্যি মিথ্যা যাচাই করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। ভুতের গল্পের মুল উদ্দেশ্যে ভয়ের অনুভুতির সৃষ্টি করা। তাই বেশি গাঁজাখুরি গল্প বললে আমরা ধরে নিবো, পোস্টদাতা যেভাবেই হোক না কেন, তিনি উক্ত ভেষজ সংগ্রহ করে তা খেয়ে গল্প বলেছেন। এর বেশি কিছু হবে না। পুরুষ্কারের মানদন্ডে তা গ্রহনযোগ্য হবে না।
আর যারা লিখবেন, তারা অনুগ্রহ করে তাদের লেখার লিংক মন্তব্যের ঘরে আমাকে দিয়ে যাবেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:১৪