পাবলিক আর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা প্রধান সমস্যা হল ছাত্ররা তাদের পছন্দের সাবজেক্ট পায় না বললেই চলে। পরীক্ষা দিয়ে যেটা আসে সেটাতেই পড়তে হয়।
বাকি যারা থাকে তাদের বেশির ভাগ ভর্তি হয় CSE এবং BBA তে ভাল চাকরির আশায়। আর বাকিরা জীবনকে স্বপ্নের নৌকায় তুলে নিজ নিজ পছন্দের সাবজেক্টে ভর্তি হয়। যেমন ফ্লিম মেকিং, সাংবাদিকতা, আই টি আরও কিছু এমন সাবজেক্ট আছে।
এমন যারা করে পাবলিক ভার্সিটির ছাত্ররা এদের পড়াশোনা বিহীন বড়লোকের বখে যাওয়া সন্তান হিসেবে দেখে।
ফ্যামিলির চাচা, ফুপু, মামারা ভাবে এতগুলো টাকা জলে ফেলে দিচ্ছে বাবা মা।
বাবা মা ভাবে ছেলে মেয়ে কষ্টের টাকা উড়াচ্ছে চোখের আড়ালে।
বাসায় বেড়াতে আসা মেহমান ভাবে টাকা যখন খরচ করল ভাল একটা সাবজেক্টে পড়ে খরচ করলেই হত।
আর শিক্ষার্থীরা নিজেরা নিজেরা ভাবে- আমি একটু অন্যরকম, সবার থেকে আলাদা। কে কি বলল এটা ধরলে চলবে না।
আমার ইউনিভার্সিটির প্রথম দিনের ক্লাশে সবাইকে বলতে বলা হয়েছিল তারা কেন সাংবাদিকতা বিষয়ে পড়তে এল? একেক জনের একেক রকম উত্তর। উত্তর গুলো এমন ছিল-
*আমার ছবি তোলার ভীষণ শখ। আমি ফটো সাংবাদিক হতে চাই। তাই এসেছি।
*সাংবাদিক যেকোন খানে যেতে পারে। এটা আমার ভাল লাগে। সাংবাদিকের অনেক ক্ষমতা।
*আমি প্রচুর সিনেমা দেখি। মিডিয়াতে কাজ করা আমার ইচ্ছা। সাংবাদিকতা করে মিডিয়াতে কাজ পেতে চাই। ভবিষ্যতে সিনেমা বানাতে চাই।
*ক্রাইম রিপোর্টার হতে চাই জন্য সাংবাদিকতায় আসছি।
*আমার এডভেন্চার ভাল লাগে। তাই।
এসব থেকে এটা পরিষ্কার সবাই কিছু একটা করতে চায় সাংবাদিকতা রিলেটেড। সাংবাদিকতা তাদের কাছে একটা প্লাটফর্ম যেখানে পড়ে তাদের স্বপ্নপূরণের ট্রেন ধরতে পারবে। অর্থাৎ সবাই স্বপ্নের পিছে ছুটছে। তারা কেউ জানে না কি হবে সামনে, টিকতে পারবে কিনা এই রাজনৈতিক গোলকধাঁধাঁ , স্বজনপ্রীতি, টাকার খেলার মাঝে। বিসিএস, রাজনৈতিক পাওয়ার, দলবাজী, বিরাট টাকাকড়ির লোভে কেউ আসে নি এই সাংবাদিকতায়। এসেছে নিজের মাঝে যে একটু আগুন আছে তা বাড়াতে, সেই আগুন নিয়ে খেলতে।
এমন সাবজেক্টে যারা ভর্তি হয় তারা বাকি চার বছরে কিছু না করা পর্যন্ত বখে যাওয়া, টাকা নষ্ট করা ছাত্রছাত্রী হিসেবে পরিচয় পাবে। এদের অনেকে ঝরে পড়বে। অন্য পেশা বেছে নিতে বাধ্য হবে। কিন্তু একটা জিনিস সবসময় মনে থাকবে, যেই কাজ তারা ভালবাসত তা করার সাহস তারা দেখিয়েছিল।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:০৪