somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মধ্যবিত্ত পাখি

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৯:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি আসলে কেউ না, একটা পাখি মাত্র। হয়তো ঘাস ফড়িং হতে পারতাম, হতে পারতাম একটা ঘুড়ি। অথবা হতে পারতাম জলে তোলা মৃত্যু প্রতীক্ষিত ইলিশ। মাত্র তো কয়েক মুহূর্ত। তার পরেই মৃত্যু। এমন হলে বোধ হয় ভালোই হতো। নয়তো কি? পাখি হয়েই বা কি হয়েছি। নিজের নামই জানি না। তারচেয়ে ভালো হতো যদি ইলিশ-ই হতাম। কি হতো তবে? আমি চলে যেতে পারতাম এই আশ্রয়ের মায়া ছেড়ে। অন্য নতুন কোনও আ্শ্রয়ে। অথবা জেলের জালে ধরা পড়লেও তার হাসিমাখা মুখ দেখে ভুলে যেতাম তার ও আমার কথা। তারচে’ বরং গান করি-
আমরা তো অল্পে সুখি, কি হবে দুঃখ করে।
আমাদের দিন কেটে যায়, সাধারণ ভাত কাপড়ে।
ইলিশ হইনি তো কি, পাখি তো হয়েছি। তবে ডানাহীন পাখি আর কি। তবে কি নাম নেয়া যায় আমার বলো তো? যেহেতু আমার পাখিদের মতো ডানা নেই তারপরও আমি উড়তে পারি। তবুও কিন্তু আমি ঠিক পাখি প্রজাতির নই। কিন্তু আমার তো পাখির মতোই দুটো পা, এক জোড়া ঠোঁট, এক জোড়া চোখ আছে। আছে প্রকৃতই উড়ার মতো একটা মন। আসলে সমস্যা ঐ মনটাই। মনটাই তো পাখির মতো। আসলে মধ্যবিত্ত মন। বাহ্্ নাম তো হয়ে গেলো, মধ্যবিত্ত পাখি! নামটা সুন্দর না? আমার কিন্তু বেশ লেগেছে। এই নামের কথা ভাবতে ভাবতে আগামী কয়েকদিন সুথে কাটানো যাবে। যাবে মনের ডানায় ভর করে কিছুদিন অস্থির পায়চারি করা। তারপর? তারপর আবার সেই মধ্যবিত্ত পাখি নেমে আসবে মধ্যমিত্ত মনে। মানে শেষ পর্যন্ত পাখি ও প্রজাপতির ডানা হারিয়ে সে নেমে আসবে রাস্তায়।
কি আর করা। নিজেকে টিকিয়ে তো রাখতে হবে, চাল ডাল আর তেলের দাম বৃদ্ধিতে দিনকে দিন আমাদের পাছা আরও তৈলাক্ত হচ্ছে, ভাগ্যিস সেখানকার তেল রপ্তানি করা যায় না। নইলে কবেই আমেরিকা আইসা আক্রমন করতো! হি হি হি, আমরা আসলে মধ্যবিত্ত পাখি। পাখিদের যেমন লজ্জা নেই, তেমন আমাদেরও লজ্জা নেই। আমাদের লজ্জা নিবারণের জন্য কোনও কাপড় প্রয়োজন পড়ে না। আমরা ভুলে যাই আমাদের পূর্ব পুরুষেরা নিজেদের জন্য নয় আমাদের জন্যই দিয়েছিলো জীবন। আমরা আসলে মনে রাখি আমরা কিছু পারি না। আমরা এটা মনে রাখতে পারি না, আমরা কিছু করি না। হায় রে, কত আর প্যাঁচাল পারবো নিজে নিজে।
ভাই বন্ধুগন, দেখেন তো এত এত প্যাঁচাল পারতে গিয়া আমি আমার মলম বিক্রির কথা ভুলেই গেছি কখন। অথচ যতই নায়িকা শাবনূর আর মৌসুমীর লগে কারিনা ক্যাটরিনার চেহারা দেখাই পেটে কিছুই যাইবো না। আসলে এইভাবেই তো আমাদের দিন যায়, তাই অভ্যস্ত হয়ে গেছি। অথচ গতকাল রাতে আমার লাল বন্ধু ফোন করে কিনা বলে- দোস্ত, বর্ষাকালে নিলিগিরি গেলে নাকি মেঘ ছুয়া যায়। নিজের দেশের এই সম্পদ কি অবহেলায় পার করে দেয়া উচিৎ? আমার তখন রক্ত টগবগ করে উঠে। বলি, কখনোই না।
-তাইলে চল, সামনের বৃহস্পতিবার রাতেই রওনা দেই। উত্তর করি চল। কিন্তু কেমনে? গাজার নৌকা পাহাড় দিয়া যায় ...। আমাদের ঘরিতে টান দিয়ে রেখেছে সেই নির্লজ্জ পাখি। শুক্রবার সকালে তাই ঘুম থেকে উঠে ফোন লাগাই দোস্ত রে। কিরে কাইল রাইতে না রওনা দেয়ার কথা তোর আর আমার? দোস্ত কয়- অমুকরে ছাড়া কেমনে যাই? সে তো আবার সময় করতে পারতেছে না। আমি কই, আমাগোর জীবনের সময় আর সময়ের জীবনে আমরা এই হিসেব মেলাইতে গিয়া জীবন পার হয়া যাইবো দোস্ত হিসেব মিলবো না।
হিসেবের খাতার কি দোষ? আমাদের মধ্যবিত্ত পাখি মন, কেবলই উড়ে বেহিসাবি। উড়তে চাইলে মেলে দেয় ডানা। অথচ জেনে এসেছি একই বৃত্তে বাঁধা আমাদের প্রবাহমান জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা। কি’ইবা বলার আছে এই ঘুরি স্বভাবকে? কেই বা বাধবে এই ডানাহিন পাখিকে। সড়কের কালো স্রোতে স্রোতে বয়ে চলে এই উড়া। মনের ডানায় বসত করে নিজেরই অপরিচিত আয়না। সামনে থাকা মানুষগুলোর মুখ দেখি কেবল, ভাবি নিজের মুখও কত বিশ্রি। আত্ম প্রবঞ্ছনায় এর চেয়ে স্বস্তির চকলেট আর পাই না। দেখি কেবল ছেলে ভোলানো ছড়া নিজেকেই শোনাই নিজেরা। এভাবেই রুটিনে বেধে রেখেছি নিজেদের। আস্ত এক মধ্যবিত্ত খাচায়, ভোলামন মধ্যবিত্ত পাখি।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস শুধু দেশের রাজধানী মুখস্ত করার পরীক্ষা নয়।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪

"আমার বিসিএস এক্সামের সিট পরেছিলো ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ, প্রিপারেশন তো ভালোনা, পড়াশুনাও করিনাই, ৭০০ টাকা খরচ করে এপ্লাই করেছি এই ভেবে এক্সাম দিতে যাওয়া। আমার সামনের সিটেই এক মেয়ে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×