somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাসে গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা বাঁচতে গিয়ে চাকায় পিষ্ট

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাভারের শিমুলতলা এলাকায় গত শুক্রবার রাতে বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে এক গৃহবধূর (১৯) মৃত্যু হয়েছে। ধর্ষণের চেষ্টার শিকার গৃহবধূ সম্ভ্রম বাঁচাতে চলন্ত বাস থেকে লাফ দিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। তবে সাভার থানার পুলিশ ওই ঘটনাকে ছিনতাইয়ের চেষ্টা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার মুখার্জির নেতৃত্বে পুলিশের একাধিক দল অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন চালক ইব্রাহিম ওরফে সজল (৩২), চালকের সহকারী ফিরোজ মোল্লা (২৫) ও ওই বাসে থাকা অন্য একটি বাসের চালক আলী আকবর ওরফে সুজন (২৫)।
এলাকাবাসী জানান, গত মে মাসে ওই গৃহবধূ বিয়ে করেন। তাঁর স্বামী আশুলিয়ার জিরানী এলাকায় বোতামের ব্যবসা করতেন। সেখানেই তাঁরা ভাড়া বাসায় থাকতেন।
গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ির লোকজন জানান, ওই দিন বিকেল পাঁচটার দিকে গৃহবধূকে নিয়ে তাঁর স্বামী বখতারপুরে নিজেদের বাসায় বেড়াতে আসেন। রাতে সাভারে থাকার কথা থাকলেও এক আত্মীয়ের অনুরোধে তাঁরা রাত সাড়ে ১১টার দিকে জিরানীর উদ্দেশে বাসা থেকে বের হন।
গৃহবধূর স্বামী জানান, রাত ১২টার দিকে সাভার বাসস্ট্যান্ডের রাজ্জাক প্লাজার সামনে অজ্ঞাত এক লোক এসে তাঁদের গন্তব্যস্থলের কথা জানতে চান। তাঁরা জিরানী যাওয়ার কথা বললে ওই লোকটিও জিরানী যাবেন বলে জানান। এরপর লোকটি মুঠোফোনে কথা বলার কয়েক মিনিট পর ‘গ্রামীণ সেবা’ পরিবহনের একটি বাস সেখানে থামে। এ সময় চালকের সহযোগী ‘জিরানী, জিরানী’ বলে ডাকতে থাকেন। বাসটিতে তখন ছয় থেকে সাতজন লোক ছিল। তারা ওই বাসে ওঠে। ওই লোকটিও তাদের সঙ্গে বাসে ওঠেন। অনেক আসন খালি থাকার পরও তাঁদের পেছনের আসনে বসানো হয়।
গৃহবধূর স্বামী আরও বলেন, বাসটি ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক হয়ে নবীনগরের দিকে কয়েক গজ যাওয়ার পরই বাসে থাকা লোকজন বাসের দরজা বন্ধ করে আলো নিভিয়ে দেয়। এরপর কয়েকজন তাঁর স্ত্রীকে টানাহেঁচড়া করে আসন থেকে তুলে ধর্ষণের চেষ্টা করে। ওই লোকটিও বাসের লোকের সঙ্গে যোগ দেন। এ সময় মুঠোফোনে তিনি তাঁর মায়ের কাছে ফোন করতেই অন্যরা মুঠোফোনটি ছিনিয়ে নেয়। বাসটি শিমুলতলা এলাকায় পৌঁছালে তাঁর স্ত্রী দুর্বৃত্তদের কাছ থেকে ছুটে জানালা দিয়ে সড়কে লাফিয়ে পড়েন। এ সময় তিনিও জানালা দিয়ে লাফ দেন। এতে তিনি বেঁচে গেলেও ওই বাসের চাকায় তাঁর স্ত্রী পিষ্ট হন। দ্রুত তাঁকে পার্শ্ববর্তী সুপার ক্লিনিকে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসকেরা তাঁকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। এনাম মেডিকেলে নেওয়া হলে কর্তৃপক্ষ তাঁকে ঢাকা নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। ঢাকায় নেওয়ার পথে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ল্যাবজোন নামে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই ক্লিনিকের কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর তাঁর লাশ বখতারপুরের বাসায় নিয়ে গিয়ে সাভার থানাকে বিষয়টি জানান।
সাভার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম বলেন, গতকাল সকালে খবর পেয়ে তিনি তাঁদের (ওই গৃহবধূর স্বামী) বাসায় যান। সেখানে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়ে দেন।
সাভার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুর রহমান বলেন, ওই বাসে যাত্রীবেশে কয়েকজন ছিনতাইকারী ছিল। বাসটি ছাড়ার পর তারা দরজা বন্ধ করে বাতি নিভিয়ে তাঁদের কাছে থাকা টাকা, মুঠোফোন ও স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় তাঁরা বাস থেকে লাফিয়ে পড়লে বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে ওই গৃহবধূ মারা যান। তবে ধর্ষণের চেষ্টার বিষয়টি আড়াল করার কারণ জানতে চাইলে আমিনুর বলেন, ‘ওই গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে গতকাল থানায় মামলা করেছেন। ওই মামলায় তিনি যেমন অভিযোগ দিয়েছেন আমরা তেমনই বললাম।’
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার মুখার্জি বলেন, স্বাভাবিকভাবেও মনে হয় সম্ভ্রম বাঁচাতেই ওই গৃহবধূ চলন্ত বাস থেকে লাফ দেন। তবে তদন্তের পর বিষয়টি পরিষ্কার হবে।
Click This Link
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×