somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অতঃপর এক গোঁসাইয়ের গল্প

০৭ ই মার্চ, ২০১২ রাত ১১:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একদা এক যুবকের বিবাহ করিবার খায়েশ হইয়াছিলো৷ তা তাহার আর দোষ কি, যৌবনের ধর্মই এই৷ বিবাহ করিবার খায়েশের জন্য তাহাকে দোষারোপ করা যায় না৷ তবে একটু সমস্যা ছিলো যে যুবক কোনো কাজ কর্ম করিতো না৷ জীবন ধারণের জন্য সে তাহার পিতৃদেবের উপর নির্ভরশীল ছিলো এবং কাজ না করিয়া সে পিতৃদেবের ঘাড়ের উপর চাপিয়া বসিয়া খাইতো৷ বিবাহের খায়েশ জাগিবার পর সে দুরু দুরু বক্ষে পিতৃদেবের সম্মুখে দাঁড়াইয়া নিজের খায়েশের কথা ব্যক্ত করিলো৷ পিতৃদেবের অঢেল ছিলো এবং সন্তানাদি বলিতে ঐ এক পুত্রধনই ছিলো৷ তাই পুত্র কিছু না করিলেও তিনি পুত্রের বিবাহে আপত্তি করিলেন না৷

অতএব চলিলো বিবাহের জন্য পাত্রী দেখিবার পালা৷ কয়েকখানা পাত্রী দেখিবার পর একখানা পাত্রী বেশ পছন্দ হইয়া গেলো৷ পাত্রীপক্ষও পাত্রকে পছন্দ করিলো৷ অতঃপর যথা সময়ে ধুমধাম করিয়া উভয়ের বিবাহ হইয়া গেলো৷

বিবাহের পর কিছুদিন নব দম্পতির হাসি ঠাট্টা, রঙ্গ তামাশায় অতীব সুখে গেলো৷ কিন্তু পৃথিবীতে সুখ কিছু চিরস্থায়ী বিষয় নহে৷ তাহাদের এই সুখের সাগরে বাঁধ দিতে যুবকের পিতৃদেব একদিন পট করিয়া মরিয়া গেলেন৷

পিতৃদেব মরিবার পর যুবক অথৈ পাথারে পড়িয়া গেলো৷ শীঘ্রই আবিষ্কার হইলো যে যুবক নিতান্ত অলস এবং অপদার্থ গোত্রের৷ কোনো এক অদ্ভুত উপায়ে নিজের দারুণ পারদর্শিতা দিয়া অতি শীঘ্র সে পিতৃদেবের ব্যবসাকে লাটে তুলিয়া দিলো৷ লাটে উঠিবার পর উহারা কিছুদিন এর ওর কাছ থেকে চাহিয়া চিন্তিয়া ক্ষুধা নিবারণ করিলো৷ কিন্তু এইভাবে তো চলিতে পারে না৷ যুবতী তখন জীবন ধারণের নিমিত্তে একটা কাজে ঢুকিয়া পড়িলো৷

অলস এবং অকর্মন্য যুবকেরা স্ত্রীর উপার্জন ভালো চোক্ষে দেখিয়া থাকে না৷ উহাতে উহাদের আত্মসম্মান আঘাত প্রাপ্ত হয়৷ আমাদের আলোচ্য যুবকটিও সেই নিয়মের বাহিরে গেলো না৷ স্ত্রীর উপার্জন তার চক্ষুশূল হইয়া দাঁড়াইলো৷ সে প্রত্যহ নিয়ম করিয়া কর্ম হইতে ফিরিবার পর স্ত্রীকে প্রহার করিতে লাগিলো৷

স্ত্রীটির অন্য কোথাও যাইবার ছিলো না৷ নিরুপায় হইয়া অনিচ্ছা সত্ত্বেও মুখ বুজিয়া যুবকের প্রহার সহ্য করিয়া যাইতো আর মনে মনে যুবকটিকে অভিশাপ দিতে থাকিতো৷ তবে চিরকাল কাহারো সমান যায় না৷ একদিন যুবকটি সামান্য জ্বরে ইহলোকের মায়া কাটাইয়া পটল তুলিয়া ফেলিলো৷

স্ত্রীটি আনন্দের হাসি হাসিয়া কহিলো, “মরিয়াছে ভালো হইয়াছে৷ বেটা ভাত দিবার মুরোদ নাই কিল দিবার গোঁসাই৷”

ইতিকথাঃ গরম পড়িয়া গিয়াছে প্রায়৷ এখনও তেমন তীব্র গরম না পড়িলেও বিদ্যুৎ ইতিমধ্যেই মেঘে ঢাকা চাঁদের মতো হইয়া উঠিয়াছে৷ এই তাহাকে দেখা যায় তো পরক্ষণেই নাই হইয়া যায়৷ মাস দুই আগের তীব্র শীতের মধ্যে বিদুৎ ব্যবস্থার উন্নতি হইয়াছে এই মর্মে সিদ্ধান্ত জানাইয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যে জনৈক চামচ শিক্ষক মহোদয় প্রথম আলো পত্রিকায় কলাম লিখিয়া প্রধানমন্ত্রীকে সাধুবাদ জানাইয়াছিলেন তিনি এক্ষণে কি বলিবেন জানি না, কিন্তু জানিতে পারিলাম সরকার বাহাদুর অথবা বাহাদুর সরকার আরো এক দফা বিদ্যুতের দাম বাড়াইবার পাঁয়তারা কষিতেছেন৷ আমার দুর্বল পাপ মন, এইরকম কথা শুনিলেই খালি উপরের গল্পের কথা মনে পড়িয়া যায়৷
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মার্চ, ২০১২ রাত ১১:৫৬
৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×