এম. সোলায়মান
মানুষের জ্ঞান ও চিত্তের উৎকর্ষের জন্য, মানব সভ্যতা ও সংস্কৃতির বিকাশের জন্য, চরিত্র গঠন ও মানবীয় মূল্যবোধের জন্য, সর্বোপরি মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য শিক্ষা হচ্ছে প্রধান নিয়ামক। কিন্তু বিশেষ কিছু কারণে আজকের ছেলে মেয়েরা প্রকৃত শিক্ষা থেকে জড়ে পরছে। প্রত্যেক বাবা-মা তাদের সন্তানকে প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করার লক্ষ্যে স্কুল কলেজে ভর্তি করে। অনেক ছাত্ররা দূর থেকে এসে কলেজ হোস্টেলে থাকে। কিন্তু বাবা মায়ের সেই আদরের সন্তান যখন তাদের স্বপ্নগুলো ভেঙে বাড়ি ফিরে মাদকাগ্রস্ত হয়ে। এর থেকে বড় কষ্ট আর কি হতে পারে। প্রত্যেক বাবা মায়ের স্বপ্ন থাকে তার ছেলে প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করে একদিন বড় হবে। কিন্তু মাদকের ভয়াবহ ছোবলে সেই স্বপ্ন নিমিশেই শেষ হয়ে যায়। কলেজে থাকা প্রায় শিক্ষার্থীরা মাদকাগ্রস্ত হয়ে পরে। শিক্ষক ও অভিভাবকদের অসচেতনতার কারণে এর প্রভাব আরও বেড়ে যায়।
দেশের প্রায় কলেজগুলোতে চলে মাদকসেবীদের আড্ডা। বিশেষ করে কলেজ হোস্টেলে এ ধরণের ঘটনা বেশী ঘটে থাকে।
অনেক দিন আগে বরগুনা সরকারি কলেজ জ্ঞান রঞ্জন ছাত্রাবাসে থাকাকালীন অবস্থায় কিছুটা অভিজ্ঞতা হয়েছিল। সেই সময়ে ওই ছাত্রাবাস ছিল মাদকসেবী ও বখাটেদের দখলে। ছাত্রাবাসে বসবাসকারী ছাত্রদের রুমে থেকে বের করে দিয়ে বহিরাগতরা নিয়মিতভাবে মাদক সেবন করতো। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা বার বার কলেজ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলেও তাদের পক্ষ থেকে কোনো জোড়ালো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
হোষ্টেলের কিছু শিক্ষার্থীদের সহযোগীতায় বহিরাগতরা আসা যাওয়া করতো। হোষ্টেল সুপারের আসার খবর শুনতে পেলে বাহির হয়ে যেত এবং অনেকেই লুকিয়ে থাকতো।
ওই ছাত্রাবাসে হোষ্টেল কর্তৃপক্ষের একটি আলাদা রুম থাকলেও সেখানে কেউ না থাকায় আরো বিশৃখলা বেশী সৃষ্টি হতো।
হোস্টেলে বসবাসকারী এক ছাত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন দফায় দফায় কলেজের পার্শ্ববর্তী এলাকার বখাটে সন্ত্রাসী ও মাদক সেবীরা মাদক সেবনের জন্য হোস্টেলে এসে থাকে। রুমে প্রবেশ করে ছাত্রদের বের করে ঘন্টার পর ঘন্টা রুমে বসে তারা ইয়াবা, গাঁজা, ফেন্সিডিল সহ বিভিন্ন ধরণের মাদক সেবন করেণ। তবে কোন সময় তার প্রতিবাদ করলে ছাত্রদের উপর নির্যাতন করা হয়। এ কারনে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায় না।
কলেজ কর্তৃপক্ষ বলেন, বিভিন্ন সময়ে বহিরাগতদের উৎপাত ঠেকাতে উদ্যোগ নিলেও তা কোন কাজে আসছেনা। তবে সরকার দলীয় ছাত্র নেতা ও জেলার ক্ষমতাসীন নেতারা চাইলে বহিরাগতদের দখল থেকে ছাত্র হোস্টেলটি রক্ষা করে ছাত্রদের শিক্ষার সুষ্ঠ পরিবেশ ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব।
তা ছাড়া কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন একবার হলেও হোস্টেল পরিদর্শন করেন এবং রাতে একজন শিক্ষক হেস্টেলে থাকার ব্যবস্থা করলে শৃখলা ফিরিয়া আনা সম্ভব বলে মনে করেন অনেকে।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৪৮