Click This Link
টাইগার হিলে সূর্যোদয় দেখার জন্য বিশ্বের সব দেশের পর্যটকরা ছুটে আসে। আমি যাওয়ার আগে ধারনা করতে পারছিলাম না ঘটনাটা কেমন হবে। ভোর ৪ টায় উঠে সবাই মিলে আবার জীপে করে যাত্রা শুরু। রাতের অন্ধকার ভেদ করে আমাদের গাড়ী ছুটে চলছে টাইগার হিলের দিকে। এই ভোরেও অনেকেই জীবিকার প্রয়োজনে বের হয়েছে দেখলাম। রাতের আধারের মধ্যেই পৌছে গেলাম 'টাইগার হিল'। টিকেট কেটে নামতে না নামতেই চা/কফির ডাক। টাইগার হিলের সূর্যোদয় দেখার জন্য ৩ তলা এক বাড়ি আছে। গ্যালারী, ১ তলা, ২তলা এভাবে বিভিন্ন জায়গায় বসে সূর্যোদয় দেখা যায়। অবস্থানভেদে টিকিটের দামও হেরফের করে। অনেকটা সিনেমা হলের মত।
আমরা তাকিয়ে আছি পাহাড়ের চূড়ার দিকে। যদিও অন্ধকারে ভাল বুঝা যাচ্ছিল না। প্রচন্ড ঠান্ডা বাতাসে থরথর করে কাপছিলাম। হঠাত করে উকি দিল সূর্য। মনে হল পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে বের হল। আমরা যাকে পাহাড়ের চূড়া ভাবছিলাম তা ছিল পাহাড়ের উপরের মেঘ। এখন এই মেঘ ফুরে বের হয়েছে সূর্য। জীবনানন্দ হয়ত কোন এক ভাবে এই সূর্যোদয়ের বর্ননা দিত। আমি সাধারনভাবেই বলি। টকটকে লাল সূর্য ডিমের লাল কুসুমের মত মনে হচ্ছিল। এমন টকটকে লাল আর কিছুতেই দেখি না। এক অভূতপূর্ব দৃশ্য চেয়ে চেয়ে দেখলাম। চোখের পলক পড়ল না কিছুক্ষন। আরও কিছুক্ষন সূর্য আর মেঘের উড়াউড়ি দেখে ফিরে আসলাম।
ফিরার পথে ঘুম রেল স্টেশন। পৃথিবীর সবচেয়ে উচু এই রেল স্টেশনে অন্যান্য স্টেশনের মত এত ভীড় দেখা যাবে না। তবে একটি শান্ত নিরিবিলি আর ঐতিহাসিক একটি স্টেশনের অনুভূতি আপনি পাবেন।
তারপর বাতাসিয়া লুপ। পাহাড়ের উপর থেকে দেখা যায় নেপাল আর ভূটানের বর্ডার। আরও কিছু স্থান এই অবজারভেশন পাহাড় থেকে দূরবীন দিয়ে দেখা যায়। এখানেই সেরে নিতে পারেন নাস্তা পর্ব।
এসব ঘুরতে ঘুরতেই চলে আসবেন দার্জিলিং। বিকেলে আরও অন্য কোনদিকে যেতে পারবেন। বা আইনক্স সিনেমা হলে সিনেমা দেখে নিতে পারেন। বিগ বাজার বা মহাকাল মার্কেট থেকে বা 'কলাকেন্দ্র' থেকে ভাল শাল বা অন্য যে কোন কিছু কিনে নিতে পারেন। দাম কিছুটা কমই।
*আমার ঘুরাঘুরি প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। পরের পর্বেই হয়ত শেষ হয়ে যাবে।