তার জীবনে রয়েছে করুন এবং ব্যতিক্রমী একটি অভিজ্ঞতা।
আমার দাদা(ফুপাতো ভাই)প্রায়ই সুন্দরবন ভ্রমনে যান। 12/13বছর আগে সুন্দরবন গিয়ে এই অসহায় হরিণশাবকটিকে পেয়ে যান।হয়তো মা মারা গিয়েছিল অথবা শিকারীদের শিকার হয়েছিল।দাদা হরিণশাবকটিকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।ফিডার খাইয়ে মানুষের বাচ্চার মতই তাকে বড় করা হয়।
ওহ.....এটা ছিল হরিণী। বড় হওয়ার পর যখন তার সাথীর প্রয়োজন হল তখন তার জন্য একটি হরিণ আনা হল। আর এদেরই সন্তান হচ্ছে বাকী হরিণগুলো।
খুব আহলাদি ছিল হরিণীটি।বাড়ির প্রতিটি আনাচে-কানাচে সে টো টো করে ঘুরে বেড়াত।গাছ তলায় কাউকে দেখলেই নাক দিয়ে বার বার ঠেলা দিয়ে গাছের ডাল-পাতা পেড়ে দিতে বলত।একবার তাকে খাওয়াতে গিয়ে আমার হাতের অনেকটাই তার মুখের মধ্যে চলে যাওয়ায় একটু ভয়ও পেয়েছিলাম। ক্ষিধে পেলে খাবার রুমে গিয়ে হাড়ি-পাতিল কামড়ে টানাটানি করা অথবা আমার ফুফুর জন্য তুলে রাখা রুটি খেয়ে ভাল মানুষের মত ডাগর ডাগর চোখে তাকিয়ে থাকা ছিল তার স্বভাব।
আহ! কি সুন্দর সেই চোখ। এতো কাছ থেকে না দেখলে হয়তো কোনদিন বুঝতেই পারতামনা কেন কবিরা প্রেয়সীর চোখের সৌন্দর্য্যের বর্ণনায় হরিণীর কাজল কালো টানা চোখের উপমা দেয়।
আমার বিড়াল হুটি খুব অদ্ভুত ভাবে তার সাথে খেলা করত।পিছন থেকে গিয়ে হরিণীটির পিছনের পায়ে একটা থাপ্পড় দিয়েই টী-টেবিলের নিচে লুকিয়ে এক চোখ বের করে অবজার্ভ করত।বোকা হরিণীটি এদিক-ওদিক তাকিয়ে ঘটনা কি বুঝতে না পেরে আবার নিজের কাজে মন দিত।পরবতর্ীতে দ্বি-গুন উৎসাহে চলত হুটির খেলা ।
আমরা অবাক হয়ে দেখতাম হরিণ-বিড়ালের খেলা।
সেদিন জানতে পারলাম হরিণীটি মারা গেছে।খুব কষ্ট পেলাম। আমাদের ভালবাসা সে পেয়েছে সত্যি কিন্তু তার চেয়ে দ্বি-গুন ভালবাসা দিয়ে আমাদের ধন্য করে গেল।।