"
পৃথিবীতে যতোদিন কসাইখানা থাকবে, ততোদিন যুদ্ধক্ষেত্রও থাকবে"- এ ধরনের গভীর জীবনবোধ সম্পন্ন উক্তি যাঁর তার নাম লিও টলস্তয়।
তলস্তয় আর রবীন্দ্রনাথ আমাদের প্রিয় বহুমাত্রিক লেখক-ব্যক্তিত্বদের মধ্যে অন্যতম। লিও তলস্তয়ের জন্ম ৯ সেপ্টেম্বর ১৮২৮ সালে এবং মৃত্যু ২০ নভেম্বর ১৯১০ সালে।
তলস্তয় এবং রবীন্দ্রনাথ দু'জনেরই জন্ম সামন্তীয় কুলীন স্বচ্ছলতার আবহে হলেও সেই গজদন্ত মিনার-বাতায়নের দৃষ্টিসীমা পেরিয়ে তাঁরা অর্জন করেছেন যেই গভীর অন্তর্দৃষ্টি যা আলো ফেলে মানুষের যাপিত জীবনের বিভিন্ন স্তরে, যেখানে ব্যক্তি মানুষের এবং সামষ্টিক মানুষের হাসি, আনন্দ, বেদনা, শঠতা, নীচতা, মহত্ব , প্রেম-ঘৃণা, দ্রোহ এমন সব বিষয়ই যুগপৎ প্রতিবিম্বিত হয় বিন্দুতে সিন্ধু দর্শনের মতো ঘনীভুত ব্যাপ্তির তীব্র জীবন বোধে ঠাসা ছোট গল্পর পরিসরে এবং এপিক বা মহাকাব্যিক ঘরানার বিশাল ঔপন্যাসিক ক্যানভাসে। শান্তি নিকেতনকে ঘিরে যেমন রয়েছে রবীন্দ্র প্রেমীদের আগ্রহ, তেমনি ইয়াসনায়া পলিয়ানাকে ঘিরে রয়েছে তলস্তয়প্রেমীদের দারুন রোমান্টিক ভালো লাগা। 'পূনরুজ্জীবন' পাঠের মধ্য দিয়ে তলস্তয় প্রীতির শুরু। তার পর পড়া হয়েছে 'যুদ্ধ ও শান্তি', 'আনা কারেনিনা', 'হাজি মুরাদ' এসব উপন্যাস এবং 'কয় একর জমি দরকার', 'ফাদার সের্গেই' এসব নামের দারুন সব ছোটগল্প। এই মহান লেখক নোবেল পুরষ্কার পেলেন কি পেলেন না তাতে কিছুই যায় আসে না। কোন লেখার গুরুত্বই আসলে পুরষ্কারের মাপ কাঠিতে নয়, বরং লেখকের জীবন বোধের গভীরতার বিস্তার পাঠকের প্রিয়তা পর্যন্ত পৌঁছানোর নিরিখেই বিবেচিত হওয়া উচিত বলে মনে হয়।
আজ ২০ নভেম্বর লিও তলস্তয়ের ১১১ তম মৃত্যুদিবসে এই মহান লেখকের স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে নভেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৪৯