আমরা চার বন্ধু দুই দিনের একটি সফরে গিয়েছিলাম সিলেটে। এই দুইদিন ৩৬০ আউলিয়ার পুণ্যভূমি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের লিলাভূমি সিলেটের রাতারগুল,বিছানাকান্দি,পান্থুমাই দেখে এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য আমাদের সবার মন কেড়ে নিয়েছিলো। সবার খুব ফুরফুরে মেজাজ ছিলো এই সৌন্দের্য্যের সাক্ষী হতে পেরে।তবুও জীবনের তাগীদে সবারই যার যার কর্মস্থলে ফেরা লাগবে।
আমাদের বাসের টিকেট গ্রীনলাইন বাস সার্ভিস থেকে নেওয়া হয়েছিলো। বাসের কাউন্টারে যাওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। কিছুটা বাগ পেতে হলো একটি সিএনজি অটোরিকশা পেতে বাস কাউন্টার পর্যন্ত যাওয়ার জন্য। টিকেটে উল্লেখিত বাস কাউন্টার সোবহানি ঘাটে যথারীতি উপস্থিত হলাম সবাই কাকভেজা হয়ে। কাউন্টারের লোক কিছুটা বিরক্তিকরভাবেই বললেন এইখানে বাস আসে না! । এর কারন জানতে চাইলাম না আর কেননা হাতে সময় খুব কম দেরি হলে বাস মিস হয়ে যেতে পারে।
এর পরে আবার সেই সিএনজি অটোরিকশার কল্লানেই হুমায়ুন রশিদ চত্তরে গ্রীনলাইনের বাস ডিপোতে পৌঁছালাম। যদিও আমাদের বাস ছাড়ার কথা ছিলো ১১:৫৫ তে তবুও বৃষ্টির কারনে ১২:৩০ তে বাস ছাড়ে। সবাই একটু শান্তির নিঃশ্বাস ফেললাম বাস ছাড়ার পরে।
বিধিবাম! কিছুদূর যেতে না যেতেই খেয়াল করলাম আমাদের সিটের তলায় পানি !! পরে দেখলাম আমাদের সিটের নিচে না শুধু পুরা বাসের ভিতরেই পানি!
আমার ডানদিকে বসা একভদ্রলোক দেখলাম বাসের সুপারভাইজারকে ডাক দিয়ে বললেন একটা বালতি আনতে ? কারন জানালা দিয়ে পানি ঢুকে উনার পুরো শরীর ভিজে একাকার হয়ে যাচ্ছে! এই রকম চিত্র পুরো বাস জুড়েই শুরু হয়ে গেল। এর একটু পরে বাসের ছাদ বেয়ে পানি নামা শুরু করলো!! আমি কোন মতে বাসের দেওয়া কম্বলখানা আমার গায়ে দিয়ে এই পানি থেকে বাঁচার ব্যর্থ চেষ্টা চালালাম। বাস কিছুদূর যাওয়ার পর বৃষ্টি থেমে গেলে কিছুটা রক্ষা পাওয়া যায়। একটা সময় মনে হচ্ছিলো বাসের ভিতরেই না আবার বন্যার সৃষ্টি হয়!!
ঢাকায় পৌঁছে বাস থেকে নামার পরে একটা কথাই সবার মনে হচ্ছিলো গ্রীনলাইন কি যাত্রীবাহি ? নাকি পানিবাহি বাস ?