জীবনের একুশতম বসন্ত বরণের আর অল্প কিছুদিন বাকি ছিল আমার। তার আগেই আচমকা নিমু চলে আসলো নীল খামে মোড়ানো জীবনের প্রথম প্রেমপত্র হয়ে। আমার ভিতরের অপ্রস্তুত প্রেমিক সত্ত্বায় মুহুর্তেই বসন্তের হাওয়া খেলে গেল, একটুও টের পাইনি আমি!
নিমু এসেছিল আপশা আলোয় দূর থেকে দেখা ঝাপসা আগন্তুকের মত, এসেই ওলট-পালট করে দিয়ে গেলো আমার মনের এপাশ ওপাশ। আমি কেবল তার গোলগাল দুইটা চোখের দিকে তাকিয়ে মুহুর্তেই স্তব্ধ হয়ে যেতাম। মুগ্ধ হয়ে নিমুতে কতবার হারিয়েছি নিজেকে!
নিমুর সাথে প্রথম সাক্ষাতের মুহুর্তটা স্পষ্ট মনে আছে আমার। আমি ছিলাম উন্মাদ নেশাগ্রস্থ প্রেমিক, আর সে ছিল তীব্র অভিমানী। মাঝখানে আমাদের দুজনের না মিলে যাওয়া অবাধ্য চাওয়া পাওয়াগুলো থাকে। কতশত অনুগ্রহ আর উন্মাদ আবেগে মুড়িয়ে যত্ন করে অগভীর প্রেমের অনুভূতি হতে চেয়েছি! সে অনুভূতির হিসাব নিকাশও কখনোই মেলানো হয়নি আমার।
একটা সময় যে বিকেলগুলো মিষ্টি রোদের নষ্ট ভালবাসার মুহুর্ত হয়ে কেটে যেত এখন ঠিক সেই বিকেলগুলোর পরেই আমার মন খারাপের সন্ধ্যাবেলা নেমে আসে। আমার ভাবনায় খেলা করে---তার সন্ধ্যেবেলাটা এখন কেমন কাটে? সে কি এখনো আগের মত জানলার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে জোছনা দেখে? হয়ত দেখে, কে জানে! ভোররাতের জোছনা দেখার গল্পটা এখন সে কাকে শোনায়!!
ফোনের ওপাশে নিমুর তীব্র আর্তনাদ মাখা ভালবাসা এখনো কানে লেগে আছে! কি এমন ক্ষতি আরেকবার যদি সে আসে নীল খামে মোড়ানো জীবনের প্রথম প্রেমপত্র হয়ে! না হয় সে ফিরে আসুক আরেকবার জীবনের অন্যতম বসন্ত হয়ে! আমি অপ্রস্তুত ভঙ্গিমায় কম্পিত হাতে লাল সূর্য এঁকে দেব তার কপালে।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৩৭