somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অবশেষে বন্টু মিন্টুর আড্ডায় গেলাম

২৪ শে জুলাই, ২০১০ রাত ১২:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অবশেষে আজ গেলাম সেই বহু প্রতীক্ষিত বন্টু-মিন্টুর আড্ডায়। দেখা হল শাবাব মুস্তাফা ভাই, লেনিন ভাই আরও অনেকের সাথে। জানলাম অনেক কিছু।

বিকাল ৩ টার দিকে রওনা হলাম। আমাদের প্রযুক্তিফোরামে খুব সুন্দর করে বলা ছিল কিভাবে যেতে হবে। (পৈড়া দেহেন:

ভাই "আপনি কুতি থিকা আইসব্যান?" যেখান থেকেই আসুন আর ঢাকায় এসে গাবতলী/সায়েদাবাদ/মহাখালী বাসস্ট্যান্ড যে চিপায়ই নামেন না কেনো সেখান থেকে কোন না কোন বাহনে (বাস/সিএনজি/ট্যাক্সিক্যাব) চড়ে শাহবাগ/নীলক্ষেত আসুন। ওখান থেকে রিক্সায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের "মধু'র ক্যান্টিন" এ আসুন। ব্যস আপনি মোটামুটি আড্ডাস্থল থেকে ১০০হাত দুরত্বে পৌঁছে গিয়েছেন। এবার রিক্সায় বসে থেকেই দেখার চেষ্টা করুন, আমাদের কোন ব্যানার কি দৃশ্যমান? দেখতে পেলে ব্যানারের রাস্তাটা ধরে এগুতে থাকুন আরো বড়ো ব্যানার পাবেন একটা প্রবেশ দরজায়। ঢুকে পড়ুন। আর যদি ব্যানারগুলো দেখতেই না পান তবে কোন অঘা-মঘা-জঘা কিংবা দিনকানাকে জিজ্ঞেস করুন "আরসি মজুমদার মিলনায়তন টা কোথায়?" তাও না পারলে আমার মুঠোফোনে যোগাযোগ কইরেন।

এনাদের কথামত মধুর ক্যান্টিনে গিয়ে বেশ ক’জন দিনকানাকে পেলাম, যাদের কাছে জানতে পারলাম আরসি মজুমদার মিলনায়তনের অবস্থান। সেখানে হাজিল হয়ে দেখি ক’জন পেঙ্গুইন দাঁড়িয়ে (ভয় পায়েন না, পেঙ্গুইনের ফডুকওলা টিশার্ট গায় তো, তাই :P )। সামনে যেতেই হাত বাড়িয়ে দিল (না না, ভিক্ষা চায় নাই ;) )। সামনে এগিয়েও দিল। রেজিস্ট্রেশন করলাম। তারপর ঢুকলাম মিলনায়তনে। দেখতে বেশি বড় না, কিন্তু আসলে ভালই বড়, প্রায় ২৮০ জনের ক্যাপাসিটি। স্টেজের ওপরে দেখলাম দাড়িওয়ালা চিংড়ি মতন এক ভাইয়া এদিক ওদিক তাকাচ্ছে, তদারক করছে (তখনও জানিনা ইনিই শাবাব মুস্তাফা ভাই)। একটা ল্যাপটপ নিয়ে বসে থাকতে দেখলাম একজনকে, যাকে লেনিন ভাই বলে মনে হতেও পারে, নাও হতে পারে (শেষ পর্যন্ত জেনেছি উনিই লেনিন ভাই)। আর একজনকে দেখলাম আরেকটা ল্যাপটপ নিয়ে টেপাটেপি করেই যাচ্ছেন, করেই যাচ্ছেন (অনুষ্ঠান শেষ হওয়া পর্যন্ত উনি টেপাটেপিতেই ব্যস্ত ছিলেন:-*)। যাই হোক, একটা সীট বেছে নিয়ে বসলাম।

(এভাবে বিশদ বিবরণ লিখলে মনে হয় পোস্টের লেংথ সংকুলান হবে না, একটু সংক্ষেপেই বলিB-))

আড্ডা শুরু হল। প্রথমে আমরা জাতীয় সঙ্গীতের সুর বাজালাম, শ্রদ্ধা জানাতে উঠে দাঁড়িয়ে ছিলাম সবাই।



এরপর পরই শাবাব ভাই জানিয়ে দিল আমরা এখানে কম্প্লিটলি আড্ডা দিতে বসেছি, ফর্মাল কোন ব্যাপার স্যাপার থাকবে না। খুব ভাল কথা। এরপর শাবাব ভাই ফ্রিওয়্যার আর ফ্রি সফটওয়্যার এর পার্থক্য ইত্যাদি নিয়ে বেশ বকর বকর করল (খিকজ, শাবাব ভাই কিন্তু নিজেই বলেছেন উনি বকর বকর করছেন, আমার কোন দোষ নেই)। আগন্তুকরাও মন্তব্য রাখল।

এরপর আমরা দেখলাম JTS MOOR এর Revolutionary OS মুভিটি। আসলে ঠিক মুভি না, ডকুমেন্টারি। অনেক তথ্যবহুল, কিন্তু পুরো সময়টাই সাবটাইটেল পড়ায় ব্যস্ত থাকায় এনজয় করতে পারি নি বেশি (বাউরে বাউ, হেতেরা যে ইংলিশ কয়, :|বুঝি হাইরবার হারি ন)। মাঝখানে আমি একবার ঘুমিয়েও পড়েছিলাম।

মুভি শেষ হল। আবার শাবাব ভাইয়ের বকর বকর, তবে এবার উনি একা নন, আমরাও। লিনাক্স নিয়ে মজার অভিজ্ঞতা, লিনাক্স ব্যবহার করতে কোন সমস্যা, ইত্যাদি ইত্যাদি আরও নানান কথা। অনেক গল্প করলাম, অনেক আড্ডা। নাটোর থেকে এক ভাই এসেছিলেন, শুধুমাত্র এই বন্টু মিন্টুর আড্ডায় যোগ দেবার জন্য। তাকে অশেষ ধন্যবাদ।

অংকুর আইসিটি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের ম্যাক ভাই আমাদের জন্য ১০০ টা সিডি এনেছিলেন, প্রয়োজনীয় সফটওয়্যারগুলোর বাংলা ভার্সন, উইন্ডোজ ও লিনাক্স, উভয় প্লাটফর্মের জন্য। তিনি সিডি গুলো ফ্রি দিয়েছেন সবাইকে (সবাই পায়নি, সংখ্যাটা লিমিটেড ছিল, এজন্য ম্যাক ভাই প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলেন, তাঁর বিনয়ের তুলনা খুঁজতে চাই না, খুঁজে লাভ নেই)। সাথে ছিল একটা করে মোজিলার লোগো সম্বলিত ট্যাগ, শার্ট বা গেঞ্জিতে বুকের পাশে লাগানোর জন্য (এই জিনিসটা আমার মহা পসন্দো অইচে:D)।

আয়োজনকারীরা উবুন্টু ও লিনাক্স মিন্টের কাস্টোমাইজড ডিভিডিও রেখেছিলেন স্বল্পমূল্যে বিক্রির জন্যে। এই ডিস্কগুলো দিয়ে সেটাপ দিলে কোন কোডেক, সফটওয়্যার বাড়তি নামিয়ে নিতে হবে না নেট থেকে, ভেতরেই সব দেয়া আছে, জাস্ট ইনস্টল! (আমি দুইডাই কিনসি:))

অনুষ্ঠান শেষে বেরিয়ে সবার সঙ্গে কথা হল, ব্লগার কয়েকজনের সাথে পরিচয় হল, একজন তো আমাকে ডাকই দিল “মুন্না ভাই” বলে। আমি একটু হকচকিয়ে গেলাম। জিজ্ঞেস করলাম, “চিনলেন কি করে?”। উত্তরে মুচকি হাসি। (তহনি মনে পড়ল, সমস্যা কইতে গিয়া আমি তো ইস্টেজে উইঠ্যা গলা ফাডায়া নিজের নামখান কইছি ;))

সবশেষে একটা কথা না বলে পারছি না, শাবাব ভাই কথা বলতে পারেন বটে। সাড়ে ৪ ঘন্টার একটা মিনিটকেও বোরিং মনে হয়নি।

হ্যাপি লিনাক্সিং
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুলাই, ২০১০ রাত ৩:২৯
১৭টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নারী একা কেন হবে চরিত্রহীন।পুরুষ তুমি কেন নিবি না এই বোজার ঋন।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১২:৫৪



আমাদের সমাজে সারাজীবন ধরে মেয়েদেরকেই কেনও ভালো মেয়ে হিসাবে প্রমান করতে হবে! মেয়ে বোলে কি ? নাকি মেয়েরা এই সমাজে অন্য কোন গ্রহ থেকে ভাড়া এসেছে । সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=সকল বিষাদ পিছনে রেখে হাঁটো পথ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৮



©কাজী ফাতেমা ছবি

বিতৃষ্ণায় যদি মন ছেয়ে যায় তোমার কখনো
অথবা রোদ্দুর পুড়া সময়ের আক্রমণে তুমি নাজেহাল
বিষাদ মনে পুষো কখনো অথবা,
বাস্তবতার পেরেশানী মাথায় নিয়ে কখনো পথ চলো,
কিংবা বিরহ ব্যথায় কাতর তুমি, চুপসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×