somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

“জীবনের দিগন্তে ভালোবাসার আলো”

১৯ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভালবাসা মানুষের জীবনের দিগন্তকে আলোকিত করে।এটা বিস্ময়কর ও চমৎকার ক্ষমতার অধিকারি।ভালবাসা মানুষের বস্তুগত ও আত্মিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে গভীর ভূমিকা পালন করে।এ শক্তিকে মানুষের বিবেকের ভিতরে প্রোথিত করে দেওয়া হয়েছে এবং এটা বৃদ্বি পেতে পেতে কোন কোন ব্যাক্তির জীবনে সীমাহীন সমুদ্বের মতো হয়ে যায়।

আমরা যদি আমাদের জীবনের দিগন্ত হতে ভালোবাসার আলো নিভিয়ে ফেলি তাহলে হতাশার অন্ধকার ও নির্জনতার ভীতি আমাদের শক্তিকে আচ্ছন্ন করে ফেলবে এবং গোটা পৃথীবিটাকে বিষাদময় মনে হবে।

মানুষকে সমাজের উপযোগী করে সৃষ্টি করা হয়েছে।তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য সামাজীকতার দরকার রয়েছে।মানুষের মাঝে মানুসিক ভারসাম্যহীনতার কারনেই, তার মধ্যে সমাজের প্রতি অনীহা,নির্জনতা ও একাকীত্বের প্রতি অধিকতর আগ্রহী হতে দেখা যায়।এটা সুস্পষ্ট সত্য যে মানুষ অন্যদের ছাড়া জবিনে সুখী হতে পারেনা।কেননা তার দৈহিক চাহিদাসমূহ যেমন তাকে অন্য লোকদের সাথে মেলামেশা করার দিকে পরিচালিত করে তেমনি তার আত্মা ও তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য কিছু দাবী পেশ করে,যা হচ্ছে সামাজীকতা।আত্মা ভালোবাসা চায় এবং মানুষ তার এ আত্মিক চাহিদা পূরনের জন্য অব্যাহত প্রচেষ্টা চালাতে থাকে।

মানুষ তার জীবনের সূচনালগ্ন থেকে অবিরত স্নেহ-মায়া-মমতা ও ভালোবাসার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে থাকে।তার জীবন পথের শেষ মূহূর্তটি পর্যন্ত এ প্রয়োজনীয় ধারা অব্যাহত ভা্বে চলতে থাকে।মানুষ তার বিবেকের মধ্যেও ভালোবাসার সুফল অনুভব করতে থাকে।মানুষ যখন তার জীবনের বোঝা বইতে অক্ষম হয়ে পড়ে,তার দুর্ভাগ্য ও দুর্দশাক্লিষ্ট অন্তর যখন দুঃখে ভরে যায়,আশার ক্ষীণরশ্মিটিও যখন জীবনকে আলোকিত করে না,ঠিক এই মূহূর্তে মানুষের মধ্যে ভালোবাসা ও সহানূভূতির আকাঙ্খা তীব্রভাবে বেড়ে যায়।এ আকাঙ্খাই তার অন্তরকে স্বস্তি ও উপশমের আশায় আলোকিত করে।ঠিক এমনি মূহূর্তে ভালোবাসার ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহন ছাড়া আর কিছুই তার অন্তরের প্রশান্তি ও আনন্দের নিশ্চয়তা দিতে পারে না।দুঃখ-দুর্দশা ও যন্ত্রনার চিকিৎসা যে ভালোবাসার মাধ্যমে হয়ে থাকে এ কথার সত্যতা এখানে প্রমাণিত।

ভাইয়ের প্রতি ভাইয়ের সহানূভূতি হচ্ছে মানবীয় সহানূভূতির সত্যিকারের বহিঃপ্রকাশ যা সকল মহান নৈতিক গুণাবলী ও প্রশংসনীয় ভাল দিকসমূহের উৎস হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

ভালোবাসা স্থানান্তরযোগ্য এবং এটা প্রত্যেকের ক্ষেত্রে প্রযোয্য।আমাদের সমগোত্রীয় মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও সহানূভূতি প্রদর্শন করা যে আমাদের দায়িত্ব,এ উপলব্দি এবং অন্যদের প্রতি আন্তরিকতাপূর্ণ দয়া ও সহানূভূতি প্রদর্শনের দ্বারাই আমরা মানুষের ভালোবাসা লাভ করতে পারি।

প্রতিদান লাভের দিক থেকেও অন্যদের প্রতি সহানূভতি প্রদর্শন অধিকতর লাভজনক,কেননা একজন লোক যখন তার এই মহামূল্যবান অনূভূতির কিছু অংশ অন্যদের দান করে যখন সে অন্যদের নিকট হতে এর বিনিময়ে আরো অধিক পাবে।মানুষের অন্তরের চাবিকাঠি মানুষের হাতেই,যে এই মহামূল্যবান রত্নরাজির অনুসরন করতে চায় তাকে অবশ্যই অন্যদের প্রতি রুষ্ট হওয়ার মনোভাব সম্পূর্ণভাবে পরিহার করতে হবে এবং মনকে সততা ও প্রশান্তির আলো দিয়ে ভরে দিতে হবে।দার্শনিকদের মতে,কোন জীবের পূর্ণতা তার পরিনতি ও বৈশিষ্ট্যসমূহের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়ে থাকে এবং মানুষের বৈশিষ্ট্য, ভালোবাসা ও সামাজিকতার মধ্যে নিহিত।

মানুষের মধ্যে বিরাজমান পারস্পরিক ভালোবাসা ও আত্মিক সম্পর্কই হচ্ছে ঐক্যবদ্বভাবে স্থায়ী শান্তিতে বসবাসের ভিত্তি। ডাঃ কার্লের মতে:
“একটা সমাজকে সুখী হতে হলে এর সকল সদস্যকে অবশ্যই একটা দালানের ইটের মতো পরস্পর মিলে মিশে থাকতে হবে।ভালোবাসাই হচ্ছে একমাত্র উপাদান যা সমাজকে এমনিই ঐক্যবদ্ব করতে পারে,যা সমগ্র মানব পরিবারের মধ্যে বিদ্যমান।অন্য মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসার দু’টি অংশ রয়েছে-প্রথম প্রয়োজনীয় দিক হচ্ছে অন্যকে ভালোবাসা এবং দ্বিতীয় দিক হচ্ছে অন্যর নিকট হতে সসম্মানে ভালোবাসা লাভ করা।তথাপি প্রতিটি মানুষ যতক্ষণ পর্যন্ত না অন্যদের প্রতি রাগান্বিত হওয়ার বদঅভ্যাসসমূহ পরিহার করতে আন্তরিক প্রচেষ্টা না চালায়,ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে না।যে দুর্নীতি মানুষকে পরস্পর হতে বিচ্ছিন্ন করে রাখে,মনস্তাত্বিক বিপ্লবের মাধ্যমে তা হতে মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের পক্ষে এ লক্ষ্যে উপনীত হওয়া সম্ভব নয়।আর এ সময়ই আমরা প্রতিবেশীদের পরস্পরের প্রতি সদয় আচরন করতে এবং মালিক-কর্মচারী প্রত্যেকে প্রত্যেকের প্রতি সৌহাদ্যপূর্ণ ও সম্মানজনক ব্যাবহার করতে দেখতে পাবো।ভালোবাসাই হচ্চে একমাত্র উপাদান যা মানব সমাজে ঐ ব্যাবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পারে যা পিপীলিকা ও মৌমাছিদের সমাজে সহস্র বছর ধরে বিদ্যমান।অহমিকা মানুষের মধ্যে পরস্পরের প্রতি রুষ্ট হওয়ার মনোভাব জন্মায়।"
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আইনের ফাঁকফোকর-০৩

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২

যেকোনো চাকরির নিয়োগের পরীক্ষা চলছে। সেটা পাবলিক সার্ভিস কমিশন, বিভিন্ন সংস্থা, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক বা উপজেলা পর্যায়ের কোনো কার্যালয়ে হতে পারে। এই নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হতে পারে। একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×