somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আক্কেল গুড়ুম

২৮ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১১:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রবাসে মাঝে মাঝে মাতৃভাষায় কথা বলার মজা আছে। আশে পাশে কোন বাংলাদেশী বা বাঙ্গালী নেই, তাই মুখে যা আসে ইচ্ছে মত বলে ফেল, লজ্জা পাবার কিছু নেই।
ফিলিপাইনে বাংলাদেশীদের সংখ্যা খুব কম। তাই নিয়মিত বাংলা বলার সুযোগ না থাকায় কোন বাংলাদেশী বন্ধুকে পেলে মাঝে মাঝেই আমরা এমন লাগামহিন বাংলায় মেতে উঠি। মজার ব্যাপার হল, দীর্ঘদিন পুরো ইংরেজিতে কথা বললেও আমরা তখন শতভাগ বাংলা বলি যেন অন্যরা কিছু বুঝতে না পারে। একবার দেশে যাবার সময় এক বাংলাদেশী সহকর্মী বন্ধু ছিল সহযাত্রী। শুরুথেকেই দুজনের চলছিল নানা ননভেজ বাংলা আলাপ। সেই সাথে কারও গাধামোতে বিরক্ত হয়ে হাঁসি মুখে বাংলায় গাধা বলছি, গাধাও হাসছে, হাসিমুখ দেখে ভাবছে খুশি হয়ে কিছু বলছি।
এই সুবিধার যে কি অসুবিধা সেটা বুঝলাম একটু পরে। ম্যানিলা এয়ারপোর্টের ডিপারচার লাইঞ্জে আমাদের পাশেই বসেছেন এক সুন্দরি মহিলা। পোশাকে অতি আধুনিক। ছোট শর্টস আর গেঞ্জি। সাথে ফূটফুটে এক মেয়ে। কয়েকবার তাকিয়েও বুঝতে পারছিলাম না উনি কোন দেশের নাগরিক। তবে চেহারা আর পোশাক আশাক দেখে যেটা মনে হচ্ছে আর যেদেশেরই হোক বাংলাদেশী নয়। তাই আমি আর আমার বন্ধু মিলে মনের সুখে চালিয়ে যাচ্ছিলাম আমাদের ননভেজ কথাবার্তা। সেই সুন্দরিকে নিয়েও দুএকটি টিপ্পনি চলছে। এর মধ্যে বিমানের দরজা খুলে গেল। সুন্দরি মহিলার আসন পড়েছে আমাদের অনেক পেছনে। তাই আমাদের আলোচনার বিষয় থেকে তিনি হারিয়ে গেলেন। মাঝ খানে বেশ কয়েকটা ঘন্টা পার হয়ে গেছে। এর মধ্যে আমরা নেমেছি সিঙ্গাপুর এয়ারপোর্টে। আমাদের যাত্রা বিরতি শেষে দাঁড়িয়েছি বাংলাদেশগামি বিমানের ডিপারচার লাউঞ্জে। একি, সেই সুন্দরিতো আমাদের সামনে! তবে এখন তিনি শর্টস ছেড়ে জিন্স পরেছেন আর গেঞ্জির সাথে এক টুকরো ওড়না জড়িয়েছেন। আমি আর আমার বন্ধু দ্বিধার সাগরে ভাসছি। এই মহিলাই কি সেই মহিলা! না হবার তো কোন কারন নেই, সাথের মেয়েটিতো সেই মেয়েই। তাহলে কি তিনি আমাদের সব কথা বুঝেছেন? মনের মধ্যে শুধু একটাই ভরসা, উনি বাংলাদেশে যাচ্ছেন কিন্তু হয়তো বাংলা বোঝেন না। তাই আমাদের আলাপের শব্দ গুলো নতুন মাত্রা পেল এবং তিনি শুনতে পেলে সমস্যা নেই এই ভেবে বেশ শব্দ করেই কথা বলছি। এই আলাপের মাঝেই আমার বন্ধু আমাকে বলছে, হয়তো তিনি বাংলাদেশী নয়, বাংলাদেশ হয়ে ভারতে যাবেন। মহিলা এবার আমাদের দিকে মুখ ফিরিয়ে ঠোঁটে হাঁসি ফুটিয়ে বললেন “ না ভাই আমি ভারতে যাচ্ছিনা। আমি বাংলাদেশী এবং বাংলাই আমার মাতৃভাষা।“
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১১:৫৫
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×