somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মা-দিবস আর বাবা-দিবস আলাদা কেন

২৪ শে মে, ২০১৫ রাত ১০:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মে আর জুনের মা দিবস এবং বাবা দিবসে সবাই বাবা মায়ের প্রতি তাদের ভালবাসার বিভিন্ন অভিব্যক্তির প্রকাশ ঘটায়, মার্কিন সংস্কৃতির অনুকরনে। যদিও আমি বিশ্বাস করি বছরের অন্যান্য দিনগুলোতেও বাবা মা এর প্রতি সবার ভালবাসার কোনো কমতি থাকেনা। বাবা, না মা, কাকে বেশী ভালবাসে সেটা তুলনা করার অবকাশ খুব কম। প্রথমে মা দিবস এবং অব্যবহিত পরেই বাবা দিবস চালু হয় সেই গত শতাব্দীতে।
যাহোক, আমি দুই দিবসের মধ্যখানে দুজনকে নিয়েই লিখছি, কারন ল্যাপটপের পর্দায় ক্যালেন্ডারের পাতায় যখন দুই প্রান্তে দুইটি দিবস চোখে পড়ল তখনই ভাবলাম কেন একটি দিবস নয়? যার নাম হতে পারতো বাবা-মা অথবা মা-বাবা দিবস? অন্তত বাংলাদেশে আমরা এর বাতিক্রম ত করতে পারতাম? মধুমাস জ্যৈষ্ঠের এই দিনে বাবা আমাদের জন্য আম কাঠাল নিয়ে ফিরতেন আর মা যত্ন করে আমাদের সেগুলো পরিবেশন করতেন। কেন জ্যৈষ্ঠের কোনো একটি দিন কে আমরা বাবা-মা দিবস করতে পারিনা? অথবা অন্য কোন একটি দিন?
পিতা মাতার প্রতি সন্তানের কর্তব্য বিষয়ে ছোটবেলায় মক্তবে, স্কুলে পড়েছি, জেনেছি, বুঝেছি এবং শিখেছি যা আমার মূল্যবোধের ভিত্তি রচনা করেছে। মা দিবস আর বাবা দিবসের কথা তখন কোথাও শুনি নাই। জেনেছি সন্তানেরা যে কোনো সময়, যে কোনো স্থানে, যে কোন আবস্থায় পিতা মাতা কে স্মরন করতে পারে এবং তাদের আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা করতে পারে। পিতাকে আর মাতাকে আলাদা করে দেখার কোনো বিষয় তো কোথাও পাই নাই।
আমার জন্ম, বেড়ে ওঠা, বেঁচে থাকা, এবং জীবন জীবিকার সংস্থানে দুজনেরই তো ভুমিকা আছে! কারটা বেশি আর কারটা কম, কখনও মাথায় আসে নাই। মনে পরে, ছোট বেলায় কোন অন্যায় কাজ এ বা আচরনে বাবার শাস্তি এবং মার খাওয়া, কিশোর এবং যুবক বয়সে অনেক অবাধ্যতার বিপরীতে বাবার অপরিসীম ধৈর্য্য, পরিনত বয়সেও আমাকে সেই ছোট্টটি মনে করা ইত্যাদি। অন্যদিকে অনেক ভাই বোন থাকা সত্তেও আমার তথাকথিত অল্প শিক্ষিত মা এর সবাইকে যথাযথ ভাবে লালন পালন করার অসামান্য দক্ষতা । আমাদের কেউ কখনো পুষ্টির সমস্যায় পরি নাই। মার তো কোনো পুষ্টি প্রশিক্ষণ ছিলনা? গুগল কিংবা উইকির সহায়তা ছাড়া আমাদের কত ছড়া, ছোটো গল্প নীতিকথা শুনিয়েছেন; কৃপণ এবং পাপি এক লোকের কবরে আধখানা তরমুজ যেটা তার জীবনের একমাত্র দান, কিভাবে সেই বাক্তিকে সাপের মুখ থেকে রক্ষা করেছিল, কিভাবে এক মৃতপ্রায় শকুন তাকে প্রহারকারী যুবকের একটা চোখ তুলে নিয়ে প্রতিশোধ নিয়েছিল, বৃষ্টির ফোঁটা কিভাবে খুনির সাক্ষি হয়েছিল, আরো কত কি। মার মুখে শোনা গল্পগুলোর ম্যাসেজ তারসাথে স্কুলে বাংলা পাঠের কবিতা ছড়া গল্প; মহানবীর পথে বুড়ির কাটা ফেলে রাখা, চড়ুই পাখির বড়াই, টুন্টুনির দাওাত খাওয়া, দিবসে মোমের বাতি, বাঘের গলার হার ইত্যাদি গল্পের শিক্ষা যে কত শক্তিশালী এবং সুদুরপ্রসারী এখন বুঝতে পারি। মক্তবে হুজুরের পাঠ, প্রাইমারি স্কুলের বাংলা আর প্রতি সন্ধায় হারিকেনের আলোতে, পড়ার ফাকে মায়ের গল্প বলার যে আবহ, সব মিলিয়ে মানুষ গড়ার যে পরিবেশ, আমার মনে হয় সেটা এখনকার চেয়ে ভাল ছিল। সম্ভবত মা এর ভালবাসাহীন হতভাগা ছেলেরাই মেয়েদের সম্মান দিতে শেখেনা।
মা-বাবা দিবস ত শুধু তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো না। এর লক্ষ্য হওয়া উচিত পারস্পরিক কর্তব্য পালনের সচেতনতা, নিশ্চয়তা বিধান ও একটি সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি। এর অভাব টাই মনে হয় বর্তমান অবক্ষয়ের একটি প্রধান কারন। বাবা না হোলে বোধ হয় বাবার পূর্ণ অবদান বোঝা যায়না, ঠিক তেমনি মা নাহলে, তার মমতার পূর্ণ উপলব্ধি হয়না। তাই আমার মনে হয়েছে বাবা-মা দিবস একসাথে করলে বিষয়টিকে একটি পুর্ন আঙ্গিকে দেখার সুযোগ হবে। শুধু আবেগ আর আনুষ্ঠানিকতা নয়, মানুষ আর সমাজ গঠনে এবং সংশোধনেও তা কার্যকর ভুমিকা রাখতে পারবে।






সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০১৫ রাত ১০:০৮
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×