বর্তমান আওয়ামী সরকার গত চার বছরের ব্যাপক দুঃশাসন সেইসাথে কিছু মহাকেলেংকারী ভূমিদস ব্যবধানে জয়লাভ করা সরকারকে একেবারেই জনবিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে।সরকার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অধিকাংশ বাস্তবায়নে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।সর্বশেষ সরকারের হাতে বাকী ছিল সরকারের জনপ্রিয় প্রতিশ্রুতি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। সরকার এরই মধ্যে অনুধাবন করতে পেরেছে এই প্রতিশ্রুতিতেও সরকার ব্যর্থতা প্রকাশ শুধুই সময়ের ব্যাপার।কারণ সরকার অনুধাবন করতে পেরেছে অভিযোগকৃত ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে রায় দেওয়ার মত পর্যাপ্ত প্রমাণ আনতে পারেনি।নয় ছয় করে ট্রাইবুনালের মাধ্যমে কিছু রায় দিলেও আপিল বিভাগে কোন মামলাই টিকবেনা।আর সরকারের ভয় ধরেছে এই চিন্তাভাবনা থেকেই।আর এর থেকে যুদ্ধাপরাধের পক্ষে বিপক্ষে উভয় পক্ষই যে সরকারকে বয়কট করবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।কারণ যুদ্ধপরাধের পক্ষ শক্তির ধারণা হবে সরকারের গাফিলতির কারণে এই ব্যর্থতা।আর যু্দ্ধাপরাধের বিরুদ্ধ শক্তি আরও শক্ত ভাবেই বলতে পারবে জুলুমবাজ সরকার নিরপরাধ এই ব্যাক্তিগুলোকে অযথাই আটকিয়ে রেখেছিল।দুই পক্ষের রোষানলে পড়ে সরকার তথা আওয়ামীলীগ ৭৫ সময়ের চেয়ে জটিল পরিস্থিতিতে পড়বে। এসব বুঝতে পেরেই সরকার এমন একটি রায় দেওয়ালো যেখানে বলা হলো অভিযুক্তব্যাক্তি অনেকগুলো মারাত্মক অপরাধে জড়িত বলে প্রমাণিত। কিন্তু রায় দিলো যাবজ্জীবন। পূর্ব পরিকল্পনার আলোকে তারা ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করল আর রাতারাতি কতগুলো দলীয় লোক হয়ে গেলো নির্দলীয় লোক। আওয়ামী দলীয় সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎষক পরিষদ নেতা যে ইমরান শাহবাগ আন্দলোনের মূল সমন্বয়ক, ছাত্রলীগ সভাপতি বদিউজ্জামান এরা হয়ে গেল নির্দলীয়লোক। সেইসাথে বাংলাদেশের সকল সামরিক সরকারের পদলেহনকারী, ইহুদিদের এজেন্ট একটি পত্রিকা এবং এই সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় চলা পত্রিকাগুলো দেশের অন্যসকল নিউজ বন্ধ রেখে মানুষের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে এটি হচ্ছে পুরো বাংলাদেশের গণজাগরণ। যেখানে অন্যকোন দল কোন মিছিল করলে সরকার জনসাধারণের দৈনিন্দন জীবনে ব্যাঘাত ঘটে বলে পুলিশ দিয়ে, প্রয়োজনে লাঠি, টিয়ারগ্যাস মেরে বন্ধ করে দেয়। সেখানে গত পাঁচদিন শাহবাগের মত গুরুত্বপূর্ণ সিগনাল পয়েন্ট অবরুদ্ধ করে রেখেছে সরকারের সহযোগীতায়। সেখানেই রয়েছে দেশের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল। এই কয়েকদিনে রোগীদের অবস্হা কি হয়েছে তা সবার বোধগম্য।
পুরো বিষয়টা সরকারের সর্প হয়ে দংশণ আর ওঝা হয়ে ঝারার মত।আর সেটা সরকারের জন্য ভাল কাজ দিয়েছে। ফলাফলও ইতোমধ্যে তারা ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছে। মানুষ সরকারের অপকর্মগুলো ভুলে যুদ্ধাপরাধ নিয়ে আলোচনায় মত্ত। আর বিএনপি চুপ থেকে অপদার্থের পরিচয় দিয়েছে। বিএনপি উচিৎ ছিল আন্দলোনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে একে নিয়ে রাজনীতি বন্ধ করা এবং ট্রাইবুনাল আন্তর্জাতিক করার ঘোষণা দেওয়া। বিএনপি এই চুপ থাকা তাদের রাজনৈতিক দেউলিয়াপনা ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ বাংলাদেশের পেক্ষাপটে এই বিচার বন্ধ করার কোন সুযোগ নেই। কারণ বিচার হীনতার এই সংস্কৃতি এই দেশে আর চলতে দেওয়া যায়না। সেটাই সবাই বিএনপি মুখ থেকে শুনতে চেয়েছিল। এখনও সময় আছে বিএনপির ঘোষণা দেওয়া উচিৎ আন্তর্জাতিক মানের নিরপেক্ষ ট্রাইবুনালের মাধ্যমে শুধু জামায়াত না বরং বিএনপি, আওয়ামীলীগ, জাতীয়পার্টি সহ ছড়িয়ে চিটিয়ে থাকা সকল প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সম্মূখীন করা হবে। আর আমরা চাই এই ট্রাইবুনাল এমন মানে উন্নতি করা যাতে শুধু স্বাধীনতা যুদ্ধ নয় বরং এর পরবর্তিতে যত মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছে সবগুলোর নিরপেক্ষ বিচার করা। আমরা বিশ্বাস করি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ হয়েই এই জাতি এগিয়ে যাবে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৫৪