সরকার জনগনের পক্ষ না প্রতিপক্ষ বুঝা বড় মুসকিল। বাংলাদেশে সরকার চালায় আওয়ামীলীগ না বি.এন.পি? দেশে যত হত্যা গুম নাশকতা হয় প্রধানমন্ত্রী বলেন খালেদা জিয়ার নির্দেশে বা তাদের কোন্দলে হয়েছে। বি.এন পি'র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, সিলেট জেলার সভাপতি, সাবেক ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক, নব্বুইয়ের স্বেরাচার বিরোধী আন্দলেন রাজপথ কাপানো লড়াকু সৈনিক, সিলেটবাসীর নন্দিত নেতা, বিশ্বনাথ- বালাগঞ্জের ( সিলেট-২) দু'বারের সাবেক এম.পি জনাব এম. ইলিয়াস আলী গত মঙ্গলবার রাতে ঢাকার বনানীর বাসা থেকে বের হয়ে ড্রাইবার সহ নিখোঁজ হয়ে যান। পুলিশ তার গাড়ি ও ড্রাইভারের মোবাইল পরিত্যক্ত অবস্থায় পায়। কিন্তু তাদের কোন হদিস পায় নি।
স্বরাষ্টমন্ত্রী ইলিয়াস আলীর বাসায় গিয়ে বলেছেন, তাদের তদন্ত শুরু হয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনেই বুঝা যাচ্ছে কি রকম মুলা ঝুলানো তদন্ত হবে! তাছাড়া ইলিয়াস আলীর স্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে মিডিয়ার মাধ্যমে আবেদন করেন যে, প্রধানমন্ত্রী স্বজনহারার বেদনা জানেন।দয়া করে আমার স্বামীর সন্ধান দেন। যদি জীবিত না পান তবু তার লাশটাও অন্তত আমাকে ফিরিয়ে দিন।' কিন্তু আবেদনে একদিন যেতে না যেতে নিষ্টুর প্রধানমন্ত্রী সমবেদনা না জানিয়ে উল্টো বল্লেন রাজনৈতিক ইস্যু সৃষ্টি করা হয়েছে। নারীর বেদনা নারী বুঝে না। একেই বলে পাষাণী!
মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে তার গ্রামের বাড়ি বিশ্বনাথের রামধানা ও কামালপুর সহ আশে পাশের গ্রামে শো্কের মাতন চলছে। এ সংবাদ পেয়ে বুধবার সকাল থেকে হাজার হাজার মানুষ তার গ্রামের বাড়িতে ভিড় জমান। কয়েকটি গরু জবেহ করে তাদের খায়ানো ব্যবস্থা করা হয়। তাদের সন্তানের শোকে আশে পাশের গ্রাম মিলে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে বিশ্বানাথের রশিদপুরে।রশিদপুর থেকে শেরপুর পর্যন্ত দীর্ঘ বিশ/পচিশ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। পুলিশ সহ সরকারের এলিট বাহিনী রাস্তায় কাদানো গ্যাস ছাড়ে। পুলিশ -জনতায় দাঙ্গা বাধে। পুলিশের গুলির সামনে জনতা পিছুহটে ক্ষেতের জমি দিয়ে ও পাশ্বর্বতী গ্রামে আশ্রয় নেয়। কিন্তু কিছু জনতা স্থানীয় শাহ আবু তুরাব মসজিদে আশ্রয় নিলে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। তাদের সাথে মুসল্লিদের ও ধরে নেয়। সর্বমোট আটারো জনকে গ্রেফতার করে।
প্রত্যক্ষদর্শী বিশ্বনাথ পুরান বাজারের ব্যবসায়ী ও জনপ্রিয় ফুটবল ক্রিড়াবিদ শাহ আলম মামুন বলেন, এই উত্তেজিত জনতা যদি মহাসড়ক অবরোধ না করে বিশ্বনাথ থানা সহ সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্টানে আঘাত করতো,তবে ঘন্টাখানিকের মধ্য বিশ্বনাথ বাজার মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে পারতো। তারা সরকারের দৃষ্টি আর্কষনের চেষ্টা করেছিল। সরকারের কাছে খুঁজে দেয়ার আশ্বাস চেয়েছিল! কিন্তু সরকার তা না করে তার বিশাল বাহিনী দিয়ে নিরিহ জনতাকে গ্রেফতার করে। বিশ্বনাথের মানুষ প্রথম তাকে বের করা জন্য রাস্তায় নেমেছিল।
সিলেট বি.এন.পি বৃহস্পতিবার পালন করেছে। কেন্দ্রীয় বি.এন.পি রবিবার সারাদেশে হরতাল করবে। সবার একটি প্রত্যাশা ইলিয়াস আলীর সন্ধান চাই। হাইকোর্ট ও সরকারকে রুল জারি করেছে দশ দিনের মধ্যে ইলিয়াস আলী কে সশরীরে হাইকোর্টে উপস্থিত করার জন্য। এককথায় সবাই উদ্বিগ্ন। কেবল প্রধানমন্ত্রী নন। তিনি বাংলাদেশের কোন ঘটনা ঘটার সাথে সাথে বলে দিতে পারেন কে ঘটনা ঘটাইছে আর কে এইটার পিছনে আছে।যেমন গুম হত্যা হইলেই তিনি বিচক্ষণতায় সাথে চোখ বন্ধ না করেই বলে দিতে পারেন কে গুম করছে এবং এর হীন উদ্দেশ্য কি?
বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার তিন দিনের মাথায় গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপির এক নেতা নাকি হারিয়ে গেছে। তাদের আরেক নেতা হারিছ চৌধুরী সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় থেকেই হারিয়ে আছে। সেও হারিছ চৌধুরীর মতো লুকিয়ে আছে কি না, কে জানে! আন্দোলনের ইস্যু তৈরি করতে বিরোধীদলীয় নেত্রীর নির্দেশে সে লুকিয়ে থাকতে পারে।’ এজন্য হরতাল ডেকেছে। এটা আন্দোলনের ইস্যু সৃষ্টি করা হয়েছে। এসব যদি একজন প্রধানমন্ত্রী বলেন তাহলে সুষ্টু তদন্ত দেশে কিভাবে হবে?
বিরুধীদল যদি দেশে এত নৈরাজ্য সৃষ্টি করে সরকার কি শুধু আঙ্গুল চোষার জন্য। এসব রুধে কোন ব্যবস্থা করে রাখে না কেন? না কি এসব হাছিনার চিরন্তন মিথ্যাচারের অভ্যাস। ১৬ কোটি মানুষের সাথে বেঈমানি করলে আল্লাহ সহ্য করবেন না। যেভাবে নিকট অতীতে করেন নি।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে এপ্রিল, ২০১২ সকাল ৯:২৫