somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দি সেকেন্ড জাহিলিয়া। ইনফরমড ইগনোরেন্স

১৬ ই আগস্ট, ২০০৭ সন্ধ্যা ৬:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ডায়ালগ অফ সিভিলাইজেশন বিষয়ে কবীর হেলমিনস্কির একটা আর্টিকেল পড়ার সময়ে আজকের দিনে জাহিলিয়াতের উদাহরন দিতে গিয়ে তিনি ভায়োলেন্সের কথা উল্লেখ করছিলেন।

The great jahiliyyah is the belief that violence solves problems, whether through the bullying tactics of national power or the tactics of terror that justify the killing of non-combatants. These people do not understand that unjustified violence, which is the vast majority of violence today, is a downward spiral that takes us from the light into the darkness

নবী মুহাম্মদ, যার প্রতি সালাম তার নবুয়্যতের আগের সময়টাকে জাহিলিয়াতের সময় বলে পরিচিত। জাহিলিয়া কাছাকাছি অনুবাদ হলো অজ্ঞতা, অন্ধকারাচ্ছন্নতা। থিওলজীর পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে ইসলামে এর অর্থ: "ignorance of divine guidance" or "the state of ignorance of the guidance from God"

কিন্তু থিওলজীর অর্থ ছাড়াও এটার আসল অর্থটি মূলত সাইকোলজীক্যাল। সহজ করে বলতে গেলে, গ্রুপ অর কালেক্টিভ সাইকোলজিক্যাল কন্ডিশন।

সাইকোলজীর পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে জাহিলিয়াত অর্থ হলো, deep rooted ignorance in the mind of the people and at the same time being arrogant of that ignorance in behaviour and practice। কেউ কেউ একে বলেন, বর্বরতা।

কবীর হেলমিনস্কির আর্টিকেলটা পড়ার সময়ে জাহিলিয়াতের ক্যারেক্টারিস্টিক নিয়ে পড়তে গিয়ে সেকেন্ড জাহিলিয়া সম্পর্কে নবীর একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা চোখে পড়েছিলো। তিনি বলতেন, “The second Jahiliyya is going to be worst than the first one.”।

তবে প্রথম জাহিলিয়া (নবীর সময়ে) সময়ে মানুষের মনমানসিকতা কতটা জঘন্য ও পাশবিক ছিলো সেটা বুঝতে একটা ঘটনা উল্লেখ করা যেতে পারে। ইসলাম গ্রহন করার পরে জাহিল আচরনে নিমজ্জিত অনেক সাহাবী নবীর কাছে তাদের পূর্ব বর্বর আচরনের কথা বলতেন। এরকম এক বর্ণনায় এক সাহাবী বলছেন,
O Messenger of God, I had a daughter. One day I told her mother to dress her as I was taking her to her uncle - the poor mother knew what this meant, but she could do nothing but obey and weep. My wife dressed the infant, who was rejoicing at the news of going to the uncle. I took her near a well, and told her to look down into the well. While she was looking into the well, I kicked her into it. While she was rolling down, she was shouting ‘Dad, Dad!’

As he was recounting this, the Prophet, upon him be peace and blessings, sobbed as if he had lost one of his nearest kinsfolk.


এই রকম কুতসিত বর্বরতা এবং মানবিক গুন থেকে বিচ্ছিন্ন পাশবিক মানসিকতায় রূপান্তরিত হয়েছিলো জাহিলিয়াতের সময়ের মানুষগুলো। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও কুপ খনন করা হতো জীবন্ত কন্যা সন্তান পুঁতে ফেলার জন্য, অসহায় দাসদের অমানবিক নির্যাতন করার জন্য।

কিন্তু নবীর ভবিষ্যতবাণী ছিলো, সেকেন্ড জাহিলিয়া হবে প্রথমটির থেকেও ভয়ংকর।

২.
আজকেই দেখছিলাম: ইরাকের দুইটি গ্রামে চারটি সুইসাইড বোমায় নিহত হয়েছে ৫০০ জন মানুষ, পুরো গ্রাম মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং সম্ভবত আরো অনেক মানুষ ধুকে ধুকে মারা যাবে, চিরজীবনের জন্য পঙ্গু হবে শতশত। ইরাকে এভাবে সুইসাইড বোমায় প্রতিদিন নারী, শিশু, বৃদ্ধ নির্বিশেষে মারা যাচ্ছে। মানবিকতার লেশ মাত্র নেই এই জঘন্য অপরাধে।

দৈনন্দিনের কাঁচা বাজারে, ঘরে, গ্রামে, শহরে সর্বত্র নিরীহ সিভিলিয়ান মানুষকে এইভাবে হত্যা করার নজীর পৃথিবীর ইতিহাসে এই একবিংশ শতাব্দীতে দেখতে হবে এ অকল্পনীয়। এই সুইসাইড বোমায় হত্যা করাকে জেনোসাইড ডাকা হচ্ছে। ধর্ম বাদ দিলাম, বিশ্ব রাজনীতির নোংরামী, তেলের দখল সব বাদ দিলেও - একটা গ্রামে ৫০০ জনকে ঠান্ডা মাথায় বোমা মেরে সেই মানুষকে হত্যা করার এই যে প্রবণতা এ বড় ভয়ংকর।

নিউজ মিডিয়ায় অহরহ দেখতে দেখতে আমাদের মন ভোঁতা হয়ে গেলেও ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করলে এ শিউরে ওঠার মতো। পাশবিকতার কাছে মানবিকতার বিসর্জন। আর জাহিলিয়াতের একটা বড় বৈশিষ্ট্য হলো, জাহিল আচরন নিয়ে নির্বিকার থাকা যা আজকের দিনে খুব বেশি দেখা যাচ্ছে। আফ্রিকায় এখনো কলোনাইজেশনের শোষণে দূর্ভিক্ষ, সোনা, তেল আর হীরার খনির দখলে পুরো আফ্রিকা জুড়ে গৃহযুদ্ধ, দূর্ভিক্ষ, শিশুদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ভাড়াটে সৈনিক হিসাবে, এইডস মহামারী - অথচ তার ঔষধটুকু নিয়েও চলছে নোংরা কর্পোরেট ব্যাবসা, মানব ইতিহাসের জঘন্যতম দারিদ্র অথচ বিপুল সম্পদের পৃথিবীর বাকিরা নির্বিকার। ইরাকে প্রতিদিন শত নিরাপরাধ সিভিলিয়ান মারা যাচ্ছে, তাদের সাথে অমানুষিক যন্ত্রনা, কষ্টে নিমজ্জিত হচ্ছে শতশত পরিবার, স্বজন হারা - পৃথিবী নির্বিকার। কতো তথ্য, কত প্রযুক্তি, ইনফরমেশন ওভারলোড, অথচ কারো কিছু যায় আসে না। সেকেন্ড জাহিলিয়াতের অন্যতম বৈশিষ্ট্য এই 'ইনফরমড ইগনোরেন্স'।

Holy Prophet (peace be upon him) is saying, “They are going to be ignorant with what they read and write. They are going to become ignorant with the knowledge that they know.”

দু:খজনক হলেও সত্য আমরা বাস করছি এই সময়ে যখন চারিদিকে ইনফরমড ইগনোরেন্সের ছড়াছড়ি।
২৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×