গত দুই দিন ধরে দেশের শিক্ষাতায়ন গুলোতে( ইনফ্যাক্ট সারা দেশেই) আওয়ামী নরপশুরা যে তান্ডব লীলা চালাচ্ছে তা এক কথায় চেংগিস খানের বর্বরতা কেও হার মানিয়েছে। (দেশে আইন শৃংখলা বলে কিছু আছে সেটা বোঝার কোন উপায়ই নেই।সরকারের বাঘা বাঘা কর্তা ব্যক্তিরা যে ভাবে দায়িত্ব গ্ব্যান হীন মন্তব্য করে সন্ত্রাসীদের উসকে দিচ্ছেন তাতে আসলেই ভয়ে হৃদয় কেপে উঠছে। আল্লাহই জানেন এর শেষ কোথায়??)
কিন্তু কেন এই তান্ডব?? কেন এই বর্বরতা???
কারন, শিবির রাবি তে সরকারী দলের অংগ ছাত্র সংগঠনের এক জন কে খুন করেছে( যদিও একথা প্রমানিত নয়, কারন উভয় পক্ষই একে অপরকে দোষারোপ করছে, এবং ঘটনার কোন চাক্ষুস প্রমান নেই)।
তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম যে শিবির ই একে খুন করেছে।
ত অবশ্যই খুনীকে গ্রেপ্তার করতে হবে। এটা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। দেশের মানুষ কে নিরাপত্তা দেওয়া হল রাষ্ট্রের একটি অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। এই জন্য দেশে জনগনের টাকায় পুলিশ, বিডিআর সহ নিরাপত্তা বাহিনী রাখা হয়।
তাহলে শিবিরের ঐ খুনী বা খুনীদের ধরতে আইন প্রয়োগ কারী বাহিনী কে নামিয়ে দিতে হবে। প্রয়োজনে মাটির নিচে থেকেও তাদের খুজে বের করতে হবে( যদি সত্যি সত্যি মাটির নিচে তারা লুকিয়ে থাকে, গেল টার্মের দেশ মন্ত্রী অবশ্য ওখানেই সন্ত্রাসী খুজতে ভাল বাসতেন, জানিনা বর্তমানের টার কি চয়েস!!) তারা এই সব খুনী সন্ত্রাসীদের ধরে আইনের কাঠগড়ায় দাড় করাবেন। আদালতে এই খুনীদের বিচার হবে( নিরপেক্ষতার কথা নাই বা বললাম)। বিচারে ফাসী হবে( কারন এখন পর্যন্ত দেশের আইনে খুনের শাস্তি মৃত্যুদন্ড)। ব্যাস।
দেশটা যদি একটা সভ্য জনগোষ্ঠি দ্বারা পরিচালিত হত, তবে এই হত মুটামুটি একটা পক্রিয়া ( অন্তত আর দশ টা সভ্য দেশে এ রকমই হয়, স্থানীয় আইন ভেদে)।
কিন্তু ভীষন দু:খের বিষয় এর সম্পুর্ন বিপরীত ঘটনা টাই আমাদের দেশে সব সময় ঘটে এবং ঘটল।
সম্পুর্ন বিপরীত !! কি অদ্ভুত!! কি প্রগতিশীল ( প্রগতিশীল বললাম এই জন্য যে প্রগতিশীলতার দাবিদার রা এতে খারাপ কিছু পান না) !!!
খুনী ধরা পড়ল না( ধড়া হবে কিনা যথেষ্ট সন্দেহ আছে বৈকি!, বলা ত যায় না , যদি সত্যি সত্যি ধরতে যাওয়া হয়, আবার থলের বিড়াল বেড়িয়ে না আসে )। খুনী কে তা জানা হল না ( হা জানা অবশ্য গেছে। প্রথম আলো, সমকাল, জনকন্ঠ গং রা গায়েবী আওয়াজে জেনে গেছে কে খুনী, এবং সে মোতাবেক তারা ঘোষনাও দিয়ে দিয়েছে)।
কিন্তু বিচার( প্রতিশোধ) হয়ে গেল। সব কটি শিক্ষাতায়নে জ্বলাও পোরাও, মারো কাটো, ভাংচুর এবং তিনটা লাশ !! বই পোড়াও!! ( মজারই বটে!! খুনী হল মানুষ, পুড়ল বেচারা বই!!)
হুম ! ভালো বিচার!! একটার বদলে তিনটা! ( কেবলত শুরু, কয়টায় গিয়ে থামে, গড নোজ বেটার!)।
আচ্ছা, এবার একটু ভিন্ন প্রসংগে আসি।
আপনারা নিশ্চই সবাই কম বেশি ম্যাজিক দেখেছেন( হলপ করে বলতে পারি অনেকে সে সবের ট্রিকও জানেন)। শোনা কথা, যারা ম্যজিক দেখায় তারা নাকি মোক্ষম অবস্থায় যখন আসে তখন দর্শকদের দৃষ্টি/মোনযোগ অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেবার জন্য চমকদার( ঐ টা ম্যাজিশিয়ানের কাছে কিন্ত চমকদার না) কিছু একটা করে। দর্শক যখন ঐ খানে ব্যস্ত, ব্যস, রুমালের ভিতর থেকে আস্ত কবুতর( আরো কত কি)।
এটাও শোনা কথা( কিন্তু বাস্তেবে দেখেছিও), অনেক বড় বড় মাপের সেলিব্রেটি রা যখন একটু বেকায়দায় পড়ে যায় তখন এমন একটা কিছু করে বসে যে মিডিয়া সেই বিষয় নিয়েই তখন মাতামাতি শুরু করে দেয়। ফল হয় আসল বেকায়দা টা ঢাকা পড়ে যায়। হুম!! মোক্ষম অস্ত্র!!
হুমমম!
সবাই তাকিয়ে হাতের দিকে......রুমালের দিকে( কারন কবুতর বেরবে)!!
পছনে দাড়িয়ে আছে একজন, হাতে লুকানো কবুতর!!(নিতে হবে রুমালের নিচে) সবাই দেখছে!! কি হয়, কি হয়??
হঠাৎ বাহারি আলোর ঝলকানি, আচমকা ঝাঝালো মিউজিক!!
সবারই একটু নড়ে চড়ে বসা!!.......।
ব্যস, হাতে রুমালের জায়গায় কবুতর!!
বাহবা !!! হুররে!!! হাততালি!!!!
একটা খটকা!! একটু দাড়ান !!!
হুমমমমমমমমমমমম!!
কিছু একটা ঢাকতে হবে!! ঢাকতে হবে !! প্রচন্ড দুর্গনদ্ধ বের হচ্ছে।
কি দরকার ?? কি দরকার ???
প্রচন্ড আলোর ঝলাকানি !!! হঠাৎ ঝাঝালো মিউজিক!!!
মিলে যায় মনে হয়। ম্যাজিক , ম্যাজিক !!!
একটা লাশ !! আর শিবির !!
শিবির !! আর একটা লাশ !!
ঢাকতে হবে আবু বকরের হত্যাকান্ড! ঢাকতে হবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর বেফাস কথা!!
ঢাকতে হবে লীগের সন্ত্রাস!! ঢাকতে হবে জনগনের না পাওয়ার দীর্ঘশাস!!
ঢাকতে হবে ট্রানজিট দেওয়া!! ঢাকতে হবে চট্টগ্রাম বন্দর ইজারা দেওয়া !!
ঢাকতে হবে ডিজিটাল ব্যর্থতা!! ঢাকতে হবে চালের দাম ৩৭ টাকা!!
ঢাকতে হবে........ ঢাকতে হবে.......... ঢাকতে হবে........... ঢাকতে হবে!!!
চাই মিউজিক!!!!! চাই ঝাঝালো আলোর ঝলকানি!!!!
এমন আলো, যাতে চোখ ঝলসে থাকবে অনেক দিন।
এমন ঝাঝালো মিউজিক, যাতে কান ধাপসা খেয়ে থাকবে অনেক দিন।
কুশিলবরা (প্রথম আলো, সমকাল, জনকন্ঠ গং) রেডি!!
শুধু দরকার.........
প্রচন্ড ঝলকানি!!! ঝাঝালো মিউজিক!!!!!
শিবির!!!! আর একটা লাশ!!!!
হুমমম।
হতভাগা ফারুকের মা ।
হতভাগা ফারুকে বাবা।
কিন্তু ওদের যে একটা লাশের খুবই দরকার ছিল মা!
খুবই দরকার ছিল মা ............তোমার ফারুকের লাশের !!
আমরা হতভাগা ১৫ কোটি মানুষকে তুমি ক্ষমা করো মা।
( তবে কথা দিলাম মা, বীর জনতা একদিন জেগে উঠবেই, বিচার করবেই এই কুশিলবদের, ম্যাজিশিয়ানদের!!আর তোমার মুখে একদিন হাসি ফোটাবই ফোটাব।)
(লেখটা আবু বকর, ফারুকের প্রতি উৎসর্গ কৃত)
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৪৯