somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নীল আলোয় তার প্রতীক্ষায়

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঝন্‌ঝন্‌ এক বিকট শব্দে থরথর করে কেপে উঠল শরীরটা, সবকিছু এমন দেখাচ্ছে কেন? মৃদু নীল আলোটাও বড্ড বেশী চোখে লাগছে । চোখের পাতাটা টেনে খুলতেই মনে হল পুরো ঘরটাকে সাপে কেটেছে। আর তাই তো সেই বিষে সবকিছু এমন নীল। আচ্ছা আমার শরীরটাও কি সাপে কেটেছে। উহ্‌ কি হয়েছে আমার, কিছু মনে করতে পারছিনা কেন? কয়েক সেকেন্ড সময় লাগলো নিজেকে সামলে নিতে। ততক্ষণে অবশ্য বিছানায় উঠে বসেছি। একটা গন্ধ পাচ্ছি খুব পরিচিত কিন্ত মনে করতে পারছি না কেন, এটা কিসের গন্ধ। আমার খুব পিরিচিত তীব্র একটা গন্ধ আমার ঘরময়।ও!! এটাতো সিগারেটের গন্ধ, এই মাত্র শেষ হওয়া কোন সিগারেটের ধোয়া আর গন্ধে ছেয়ে আছে আমার ঘরটা।


হঠাৎ করেই শরীরটা ঠান্ডা হয়ে গেল। শরীরের কম্পনটা যেন আরও এক ধাপ বেড়ে গেল, কি হচ্ছে এসব? মনে পড়ল আমি ছাড়া এ ঘরেতো আর কেউ নেই তা হলে এই ধোয়া এই গন্ধ এলো কোথা থেকে।আমি কি ঙ্গান হারাচ্ছি? ঘরের নীল মৃদু বাতিটা এতোক্ষনে অবশ্য কিছুটা চোখ সয়ে গেছে। আমি সাহস সঞ্চয় করলাম আমাকে জানতে হবে কি হচ্ছে এসব। হাতটা বারিয়ে দিলাম বিছানার পাশের ডেক্সে রাখা ল্যাম্পটার দিকে।ভালো করে আলো জালিয়ে দেখা দরকার কি হয়েছে। কি আশ্চর্য!!! ল্যাম্পটা কোথায় গেল? বুকের ভিতরটা ধক্‌ধক্‌ করে উঠল। বুঝে উঠতে পারছি না কি করব। দেয়ালের সুইচটাই আমার শেষ ভরসা, চট করে উঠে দাড়ালাম । উহ্‌ .... এ কি হল মাটিতে পা রাখতেই অনুভব করলাম পায়ের নিচে কাঁচের টুকরোতে ভরা কিন্তু নিজেকে সামলে নেবার আগেই একটা কাঁচের টুকরো কচ্‌ করে পায়ে গেথে গেল। তীব্র যন্ত্রনায় ধপাস করে বিছানায় বসে পরলাম।কি আশ্চর্য ! নিমেষেই আমার ভয়টা কোথায় যেন হারিয়ে গেল।শরীরের কম্পনটা ধীরে ধীরে কমতে লাগলো।দুচোখ বেয়ে পানি আসছে.........আসুক তাতে আমার কিছু যায় আসে না।


একটু একটু করে মনে পরছে তুমিই ল্যাম্পটা ভেঙ্গেছো, তাই না? এই তো কিছুক্ষন আগে এ ঘরে আমরা দুজন গল্প করছিলাম, এই তো বিছানার এই জায়গাটায় তুমি আধশোয়া ছিলে আর আমি তোমার পাশেই ছিলাম।এই যে বিছানার চাদরটা এখনও কুচকে আছে।তুমি তোমার বাঁ হাতে আমাকে জড়িয়ে রেখেছিলে তোমার বুকের সাথে আর ডান হাতে তোমার প্রিয়তমা তোমার সিগারেট।রাগে আমার গা জ্বলছিল।প্রতিদিনের মত আজও আমি তোমাকে ওটা খেতে দিবনা আর তুমিতো নাছড় বান্দা তোমার প্রিয়তমাকে ঠোটে না নিলে না কি তোমার ঘুম হয় না।আমি যত চেষ্টাই করছি সিগারেটা তোমার হাত থেকে ফেলতে তুমি ততোই মজা পাচ্ছো।বার বার আমার হাত থেকে বাচার জন্য তোমার ডান হাতটা ল্যাম্পের কাছে নিয়ে যাচ্ছিলে।তোমার ঐ শয়তানি আর হুড়াহুড়িতেই তো ল্যাম্পটা পরে টুকরো টুকরো হয়ে গেল আর তার বিকট শব্দে আমার ঘুমটা ভেঙ্গে গেল.........

আচ্ছা আমি কি ঘুমাচ্ছিলাম? আমি কখন ঘুমালাম? তুমি কি সত্যিই এসেছিলে!!!!!এটা কি করে সম্ভব। আমি তো জানি তুমি কোনও..... দিনই আসবে না, তুমি আসতে পারোনা। মাস... বছর..... যুগ............ এমন কি আজীবন প্রতীক্ষায় ও তুমি আসতে পারবেনা। তা হলে এসবই কি ছিল? না না তুমি সত্যিই এসেছিলে......এই তো এখনও সিগারেটের গন্ধে ঘরটা ভরে আছে।স্বপ্ন এতো মধুর হয় কেন? স্বপ্নটা এতো মধুর হয় বলেই কি তা ভেঙ্গে যায়? ভেঙ্গেই যদি যাবে তা হলে স্বপ্ন আসে কেন? এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর আমাদের কারও জানা নেই কেন? .



অনুভব করছি পায়ের যন্ত্রনাটা বারছে । কিন্তু কিছুতেই উঠতে ইচ্ছে করছে না। বিছানায় শুয়ে স্বপ্নটা আবার দেখতে ইচ্ছা করছে। এবার স্বপ্নে তুমি এলে তোমায় আর সিগারেট খেতে নিষেধ করব না। তুমি তো জানো না, একদিন ধোয়ার যে গন্ধটা আমার অসহ্য লাগতো আজ সেই গন্ধটাই
আমাকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে তার মায়াজালে।যেখানেই যাই ঐ গন্ধটা আমায় তাড়িয়ে বেড়ায় আর আমি তোমায় খুজে ফিরি আমার চারিপাশে...............।


সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১১ সকাল ৯:০৮
১২টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×