somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অরুন্ধতি রায়ের লেখা - মুম্বাই ট্রাজেডি ভারতও নয় আমেরিকা

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(লেখাটি নিরপেক্ষ দৃষ্টিভংগিতে লেখা। আমার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে, তাই পোষ্ট দিলাম)
আমাদের নিজস্ব ট্রাজেডিকে আমাদের করে নেয়ার অধিকারও আমরা খুইয়ে ফেলেছি। হত্যাযজ্ঞ মুম্বাইকে তছনছ করে তখন সার্বক্ষনিক টিভি চ্যানেলগুলো আমাদের জানায় যে, আমরা দেখছি ‌ভারতের ৯/১১’। এবং পুরানো হলিউডি ছবির নকলে বানানো বলিউডি ছবির পাত্র-পাত্রীদের মত আমরাও যেন সেই মোতাবেক অভিনয় করে চলি, এমন আশাও বোধ হয় রাখা হয়। যদিও আমরা জানি যে সমস্ত সংলাপই আগে বলা হয়ে গেছে; আগেই মঞ্চস্থ হয়ে গেছে এই নাটক।
উত্তেজনা তুঙ্গে উঠে। মার্কিন সিনেটর জন ম্যাককেইন শিগগিরই ‌মন্দ লোকদের’ গ্রেপ্তার না করলে পাকিস্তানের সন্ত্রাসী শিবিরগুলোয় ভারত বিমান হামলা করবে বলে হুশিয়ারি দেন। আর তা হলে যুক্ত রাষ্ট্রের কিছু করার থাকবে না।; কারণ মুম্বাই হলো ভারতের ৯/১১।
কিন্তু নভেম্বর মাস তো সেপ্টেম্বর নয়, ২০০৮ সাল নয় ২০০১ সাল, পাকিস্তান নয় আফগানিস্তান, এবং ভারত নয় যুক্তরাষ্ট্র। সুতরাং আমাদের ট্র্যাজেডিকে আমাদের বলেই দাবী করার উচিত। ধ্বংসস্তুপের ভেতর থেকে আমাদের ছিন্নভিন্ন মস্তিস্ক ও ভগ্ন হৃদয়কে উদ্ধার করাও জরূরি, যাতে আমরা আমাদের মত করে সিদ্ধান্তে আসতে পারি।
আহমেদাবাদ, বেঙ্গালুর, দিল্লি, গুয়াহাটি, জয়পুর ও মালেগাওয়ের মতো ভারতীয় শহরগুলোয় ধারাবাহিক বোমা হামলায় শত শত সাধারণ মানুষকে নিহত ও আহত করার ঘটনার সঙ্গেই মুম্বাই হামলা সম্পর্কিত। এসব হামলার জন্য পুলিশের হাতে আটক ব্যক্তিদের মধ্যে হিন্দু মুসলিম উভয়ই রয়েছে। পুলিশের সন্দেহ অনুযায়ী হামলাকারীরা সবাই ভারতীয় হওয়ায় আমাদের বুঝতে হবে, দেশের ভেতরই মারাত্নক সমস্যা ঘটে চলছে। সন্ত্রাসবাদ বিষয়ক চালু দৃষ্টিভংগির মধ্যে গভীর বিবাদ লক্ষ্য করা যায়। ক. পক্ষ মনে করে সন্ত্রাসবাদ, বিশেষত ইসলামি সন্ত্রাসবাদ হলো নিজের অক্ষে ঘুরতে থাকা এক ঘৃণিত যন্ত্রণাদায়ক প্রবণতা। চারপাশের দুনিয়া, ইতিহাস, ভূগোল ও অর্থনীতির সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। অতএব ক. পক্ষের বক্তব্য হলো, একে রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে দেখা বা বুঝতে চাওয়া বা এর কার্যকারণ খুজতে যাওয়া ওই সন্ত্রাসের মতোই অপরাধূলক কাজ। খ. পক্ষের মত হলো, সন্ত্রাসবাদকে কোনো কিছু দিয়ে যুক্তিযুক্ত করা না গেলেও সন্ত্রাসবাদের আবির্ভাব ঘটে একটি নির্দিষ্ট স্থান, কাল ও রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে। সেই পরিপ্রেক্ষিতকে হিসাবে না নিলে সমস্যা আরো বাড়বে এবং আরও বেশি মানুষ বিপদের মধ্যে পড়বে এবং এই পর্যালোচনা থাকাও এক ধরণের অপরাধ।
লস্কর-ই-তাইয়েবার প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ সাইয়েদও প্রথম পক্ষের চিন্তাকে জোরদার করে তোলেন। আত্নঘাতী বোমার পক্ষে এবং ইহুদী, শিয়া ও গণতন্ত্রের প্রতি ঘৃণাকে তিনি অনুমোদন দেন এবং যতক্ষণ না ইসলাম (তার নিজস্ব ইসলাম) বিশ্বকে শাসন করেছে, ততক্ষণ পর্যন্ত জিহাদ চালানো জরুরি মনে করেন। তার বাণীগুলোর একটি এ রকম: যতক্ষণ পর্যন্ত ভারত অক্ষত রয়েছে, ততক্ষণ শান্তি আসবে না। তাদের কেটে ফেলো, এমনভাবে ভেঙ্গে ফেলো, যাতে তারা হাটু গেড়ে বসে ক্ষমা চায়। তিনি আরও বলেন, ভারতই আমাদের এ পথে নামিয়েছে। কাশ্মীরে মুসলিম হত্যার জন্য আমরা তাকে উচিত শিক্ষা দিতে চাই এবং হত্যা করতে চাই হিন্দুদের।
কিন্তু ভারতের আহমেদাবাদের বাবু বজরঙ্গীর বাণীকে ক. পক্ষ কোথায় ফেলবেন? বজরঙ্গী নিজেকে সন্ত্রাসী না বলে বলেন গণতন্ত্রী! অথচ ২০০২ সালের গুজরাট গণহত্যার অন্যতম হোতা তিনি। ক্যামেরার সামনে তিনি বলেছেন: ‍আ‍মরা মুসলিমদের একটি দোকানও রেহাই দেয়নি; সবকিছু জ্বালিয়ে দিয়ছি . . .লুট করেছি . . . বেজন্মাদের আগুনে পোড়াতে আমাদের ভাল লাগে . . . কারণ ওরা নাকি চিতায় পুড়তে ভয় পায় . . . আমার একটি মাত্র শেষ ইচ্ছা আছে . . . আমাকে ফাসিতে ঝুলালেও আমি পরোয়া করি না . . . তার আগে আমাকে দুটো দিন সময় দিন। আমি জুহাপুরা বস্তির সাত-আট লাখ মুসলিমের যত জনকে পারি একনাগাড়ে সাবার করে দেব . . . ওদের আরো মরতে হবে . . . অন্তত আরও ২৫ থেকে ৫০ হাজার।
ক. পক্ষের লোকেরা বাবু বজরঙ্গী কিংবা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আর এস এস) প্রতিষ্ঠাতা এম এস গোলওয়াকারের সাম্প্রদায়িক হিংসার মতাদর্শকে কোন দৃষ্টিতে বিচার করবেন? ডানপন্থী হিন্দুদের বন্দুকের নিশানায় কেবল মুসলমানেরাই নয়, খ্রিষ্টানেরাও রয়েছে। সম্প্রতি ৪০ জন আদিবাসী খ্রিষ্টানকে হত্যা এবং ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে ৪০ হাজার জনকে।
এত বছর ধরে হাফেজ সাইয়েদ জামাত-উদ-দাওয়ার প্রধান হিসাবে লাহোরে সম্মানের জীবন কাটিয়ে এসেছেন। এ সময় তার উদ্ভ্রান্ত চিন্তার জেহাদি পথে অনেক তরুণকে তিনি শামিলও করেছেন। ১১ ডিসেম্বর ২০০৮ জাতিসংঘ জামাত-উদ-দাওয়াকে নিষিদ্ধ করলে আন্তর্জাতিক চাপে পাকিস্তান সরকার তাকে গৃহবন্দী করে। অন্যদিকে বাবু বজরঙ্গী গুজরাটে প্রতিপত্তির মধ্যে বাস করেছেন। গুজরাট গণহত্যার বছর কয়েক পর তিনি বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ছেড়ে শিব সেনা দলে যোগ দিয়েছেন। বজরঙ্গীর পৃষ্ঠপোষক নরেন্দ্র মোদী মুখ্যমন্ত্রী পদে কয়েক দফা পুননির্বাচিতও হয়েছেন। ভারতের বৃহত্তম করপোরেট কম্পানী রিলায়েন্স ও টাটার চোখে তিনি প্রায় ভগবান। যে পুলিশ কর্মকর্তারা গুজরাট গণহত্যায় সাহায্য করেছেন ও অংশ নিয়েছেন, তারা পুরস্কৃত ও পদোন্নতিপ্রাপ্ত হয়েছেন। ভারতজোড়া আর এস এস এর রয়েছে ৪৫ হাজার শাখা; রয়েছে অগাধ সম্পদশালী দাতব্য প্রতিষ্ঠান এবং ৭০ লাখ স্বেচ্ছাসেবী। সমগ্র ভারতেই তারা ঘৃণার মতবাদ প্রচার করে যাচ্ছে। তাদের দলে রয়েছেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী এ বি বাজপেয়ি এবং হালের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী এল কে আদভানিসহ অনেক অনেক আমলা, পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মকর্তা। একই সঙ্গে ভারত জুড়ে অজস্র মুসলিম সংগঠনও তাদের সংকীর্ণ মতাদর্শ প্রচার করে যাচ্ছে। এ হলো ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের সত্যিকার প্রতিচ্ছবি।
সুতরাং আমাকে যদি ক. ও খ. পক্ষের মধ্যে বাছাই করতে বলা হয়, আমি খ. পক্ষেই যাব। আলবত, আমাদের পরিপ্রেক্ষিতের দিকে নজর দেওয়ার দরকার রয়েছে। সব সময়ই।
এই পারমাণবিক উপমহাদেশে হিংসার পটভূমি হলো ১৯৪৭ সালের দেশ ভাগ। ব্রিটিশ রাডক্লিফ লাই ভারত ও পাকিস্তানকে আলাদা করে দিয়েছে। রাডক্লিফ সাহেবের সেই দাগ এক রাতের মধ্যেই প্রদেশ, জেলা, গ্রাম, মাঠ সম্প্রদায়, পানির প্রবাহ, বাড়িঘর ও পরিবারগুলোর ভেতর দিয়ে তাদের দুই ভাগে ভাগ করে চলে গেছে। আর এটাই ছিল ভারতবাসীর প্রতি ব্রিটিশ উপনিবেশের অন্তিম লাথি। দেশভাগের দাঙ্গায় গণহত্যার শিকার হয় পাচ লাখ মানুষ। সাম্প্রাতিক ইতিহাসের সব থেকে বৃহত দেশ ত্যাগের ঘটনা ছিল সেটি। এতে ঘর ছাড়া হয় ৮০ লাখ মানুষ। এক কাপড়ে হিন্দুরা পাকিস্তান ছেড়ে পালায় আর মুসলমানরা ছাড়ে নতুন ভারত। যাওয়ার পথে তারা বহন করে নিয়ে আসে কল্পনাতীত যন্ত্রণা, ঘৃণা এবং প্রতিশোধের বাসনা। সেই ক্ষত এখনো ব্যাথা দেয়।
দেশভাগ কাশ্মীরের ভূমি ও মানুষকে ভারত-পাকিস্তানের দ্বন্দ্বের ফাদে আটকে ফেলে। শুরু হয় দু:সপ্নের দিনরাত। নিহত হয় ৬০ হাজার মানুষ। অন্য দিকে ইসলামি রাষ্ট্র পাকিস্তান দ্রুতই পরিণত হয় একটি কপট, উগ্র সামরিক রাষ্ট্রে। আর ভারত নিজেকে ঘোষণা করে সহনশীল ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসাবে। কিন্তু বাবু বজরঙ্গীর পূর্বসুরিরা স্বাধীনতার আগে ১৯২০-এর দশক থেকেই ভারতের দেহে ক্রমাগত ঢালতে থাকে সাম্প্রদায়িক হিংসা ও হিন্দুত্ববাদের বিষ। ১৯৯০ থেকে তারা ক্ষমতার হিস্যা দাবী করতে থাকে। ১৯৯২ সালে হিন্দু জনতা এল কে আদভানির প্ররোচনায় বাবরি মসজিদ ভেঙ্গে ফেলে। ১৯৯৮ সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসে এবং ২০০২ সালে ঘটে গুজরাট গণহত্যা। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের হাওয়া বিজেপির হিংসার পালকে ফুলিয়ে-ফাপিয়ে তোলে। মওকা বুঝে তারা খোলাখুলি গণহত্যা চালায় এবং তাদের ধর্মীয় ফ্যাসিবাদকে বিশৃঙ্খল গণতন্ত্রের বৈধ পন্থা হিসাবে হাজির করে। এ সব যে সময় ঘটে, সে সময় ভারতের বিরাট বাজার ও অর্থনীতি আন্তর্জাতিক পুজির জন্য খুলে দেয়া হচ্ছে। এ সব বহু জাতিক কোম্পানি ও তাদের মালিকানাধীন গণমাধ্যম ভারতকে এক সব ভাল’র দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালায়। এ রকম দায়মুক্তি ও সু রক্ষার পরিবেশে হিন্দু জাতীয়তাবাদ আরও লাগাম ছাড়া হয়। এটাই হলো উপমহাদেশের এবং মুম্বাই সন্ত্রাসের বৃহত্তর পরিপ্রেক্ষিত। তাই অবাক হই না যে লস্কর-ই-তাইয়েবার প্রধান হাফেজ সাইয়েদের জন্ম ভারতের সিমলায় আর রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের এল কে আদভানির জন্ম পাকিস্তানের সিন্ধুতে।
মুম্বাই হামলার জন্য ভারত সরকার জোরের সঙ্গে দায়ী করেছে পাকিস্তানের আইএসআইয়ের মদদপুষ্ট লস্কর-ই-তাইয়েবাকে। এর মধ্যে পুলিশ জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ পুলিশ বাহিনীর কর্মকর্তা শেখ মুখতার ও কলকাতা নিবাসী তাওসিফ রেহমানকে আটক করেছে। সুতরাং কেবল পাকিস্তানি নাগরিকদের দোষারোপ করাটা কিছু কুঠন হয়ে দাড়াল। সব সময়ই দেখা যায় সন্ত্রাসবাদের গোপন কাহিনীর সঙ্গে সঙ্গে বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক উম্মোচিত হয়। তারা কেবল দুটি দেশের মধ্যেই কাজ করে না; তাদের কাজকারবার আন্তর্জাতিক। আজকের দুনিয়ায় কোনো সন্ত্রাসী হামলার জন্য একক কোন দেশকে দায়ী করা অবাস্তব, যেমন অবাস্তব আন্তর্জাতিক পুজিকে কোনো একক দেশের বলে চিহ্নিত করা।
এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের প্ররোচনায় পাকিস্তানে আক্রমণ করলে সন্ত্রাসীদের শিবির হয়তো ধ্বংস হবে, কিন্তু সন্ত্রাসীরা রয়ে যাবে। মনে রাখা দরকার পরাশক্তির বন্ধু হয় না হয় এজেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বেশী মাখামাখির পরিণতি সর্বনাশা। ইরাক. পাকিস্তানের উদাহরণ সামনেই আছে। অন্যদিকে যুদ্ধে জড়িত হলে ভারতের লাভ একটাই-অভ্যন্তরীণ সমস্যা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে দেওয়া।
যুক্তরাষ্ট্রের কায়দায় হোমল্যান্ড সিকিউরিটির জন্য দরকার বিলিয়ন বিলয়িন ডলার। অতটাকা ভারতের নেই। আর আমাদের মাতৃভূমিতে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য দৌড়িয়ে কী লাভ, যখন পাশেই রয়েছে পারিমাণবিক ক্ষমতাধর প্রতিবেশী, যখন আমরা দখল করে রয়েছি কাশ্মীরকে, যখন নির্লজ্জভাবে বিনাশ ঘটিয়ে চলছি সংখ্যালঘু ও দলিতদের! দরিদ্র, বঞ্চিত ও লাঞ্ছিত অবস্থায় তাদের পিঠ দেয়ালে গিয়ে ঠেকেছে। কোথাও কোনো আশা না দেখে তারা মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা বাচতে চায় না, মেরে মরতে চায়। কমাণ্ডো আর কামান দিয়ে কোনোকালে কিছু কি ঠেকানো গেছে? মাত্র ১০ জঙ্গি যদি সন্ত্রাসবিরোধী কমান্ডোদের তিন দিন ধরে ঠেকিয়ে রাখতে পারে, কেবল কাশ্মীর দখলে রাখতে যদি আড়াই লাখ সেনা দরকার হয়, তাহলে গোটা ভারতে কত সেনা প্রয়োজন? অংকটি কষুন, তারপর হোমল্যাণ্ড সিকিউরিটির কথা ভাবুন।
অতীতে এ ধরণের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আটক ব্যক্তিদের মধ্যে দোষী ছিল কতজন? মাত্র দুই শতাংশ! অন্যরা নিদোর্ষ হয়েও নির্যাতিত হয়েছে, এনকাউন্টারে মারা পড়েছে বা পঙ্গু হয়ে গেছে। আমরা আজ যা দেখছি, তাহলো পাল্টা মার-প্রতিশোধ। দশকের পর দশকের দ্রুত বিচার ও জঘন্য কাজকর্মের প্রতিশোধ। আমাদের পায়ের তলার গালিচা সরে যাচ্ছে। সন্ত্রসবাদ মোকাবিলার একমাত্র পথ হলো আয়নায় দানবের প্রতিবিম্বটি দেখা। ওটাই আমাদের প্রতিবিম্ব।
এখন আমরা দাড়িয়ে আছি এক সড়কসঙ্গমে। একদিকের পথে লেখা রয়েছে ন্যায়বিচার, অন্য পথটি গৃহ যুদ্ধের দিকে গেছে। তৃতীয় কোনো পথ আর নেই। নেই ফিরে যাওয়ার কোনো উপায়। বেছে নিন।
(দৈনিক প্রথমআলো -১৫ ডিসেম্বর ২০০৮ থেকে সংকলিত)
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ সকাল ৯:২৯
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×