আইডিওক্র্যাসি নামে হলিউডের একটা মুভি দেখেছিলাম।
সেখানে ভয়ঙ্কর একটা বিষয়কে খুবই চমৎকারভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
মুভিটিতে ৫০০ বছর পরের পৃথিবী কেমন হতে পারে মুলত তার ট্রেইলার দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
বর্তমানের দুইজন টপ আইকিউ ধারী মানুষকে বিশেষ পদ্ধতিতে প্রিজার্ভ করে রাখা হয়। তারা ঠিক ৫০০ বছর পরে জেগে উঠে।
দেখে মনুষ্য প্রজাতির চূড়ান্ত অধঃপতন।
অনেকগুলো পয়েন্ট সেখানে তুলে ধরা হয়েছে।
আমি শুধু একটি বিষয়ে দৃষ্টিপাত করব।
তারা টোটাল কৃষিকে বাইপাস করে,আবাদী জমিগুলোতে পানীয় বানানোর কারখানা বানিয়ে রেখেছে। বাকী জমিগুলো পতিত। কোন কৃষি নেই। কেউ কৃষি কাজ করতে চায় না।
পানীয়ের কারখানায় লাখ লাখ মানুষ চাকরী করছে। তৃষ্ণা পেলেও তারা ঐ রঙিন পানীয় খায়। দেশের সকল সাধু পানি ব্যবহৃত হয় এই পানীয় কারখানায়।
একটা কোম্পানি সুকৌশলে সরকারকে বোকা বানিয়ে তাদের ব্যবসা চাঙ্গা রাখছে।
সরকার সহ কেউই এই পাজল সলব করতে পারে না।
কারণ, ৫০০ বছর পরে, ২৫০৫ সালে দেখা যায় পৃথিবীর মানুষের অাইকিউ জিরো। প্রযুক্তিরর উপর তারা এমনভাবে ডিপেন্ডেড হয়ে গেছে যে তাদের আর কোন কসরৎ করতে হয় না।
তারা স্বাভাবিক ২+২=? এই গনিত সলভ করতে পারে না।
যাইহোক, অতীত পৃথিবীর ঐ দুজন মানুষ জেগে উঠে বিভিন্ন প্রাণনাশের হুমকি মোকাবিলা করে তাদেরকে কৃষি সমস্যা সমাধানে বুদ্ধি দেয়।
তাদের সেই বুদ্ধিতে কর্পোরেট কালচার হুমকির মুখে পড়ে। লাখ লাখ মানুষ চাকরী হারায়। বেকার হয়ে যায় তারা। শুরু করে ধ্বংস। সে এক এলাহি কারবার। ফের প্রাণনাশের হুমকিতে পড়ে অতীতের সে দুজন মানুষ।
যাইহোক, কৃষি বিমুখতা মানুষের জীবনে কি রকম ক্রাইসিস নিয়ে আসতে পারে, প্রযুক্তির হাতে অন্ধভাবে নিজেকে সঁপে দিলে কি বিপদ হতে পারে তা এখানে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
মানুষ যতই প্রাযুক্তিক মাস্টার হোক না কেন, তাকে তার বুনিয়াদ ভুললে চলবে না।
আমরা গত শত বছরের ইতিহাস ঘাটলে দেখতে পাই, তখন সমাজে যারা ধনী ছিল, যারা সম্মানিত ছিল তাদের পেশা কি ছিল?
এক কথায় কৃষক।
যারা কৃষি করত।
এই সমাজে এখনো অনেক পরিবার আছে যারা শুধুমাত্র কৃষিকাজ করে সমাজে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। নিজের জমি ছিল না।
অন্যের জমি চাষ করে আজ সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ঠিকই কিন্তু আস্তে আস্তে তারা পেশা বদল করে ফেলছে। তারা আর টিকতে পারছে না।
যখনি আমাদের মনে বাবু হওয়ার বাসনা জেগেছে তখনি আমাদের অধঃপতন শুরু হয়েছে। যা আমরা টের পাইনি।
বাই দ্যা ওয়ে, এখনো টের পাচ্ছি কি?
সবচেয়ে মারাত্মক যেটা সেটা হল, আমাদের কৃষকরা এখন বীজ সংরক্ষণ করে না। বাজার থেকে কিনে আনে। বাজারে বীজ আসে বিদেশ থেকে ইম্পোর্ট হয়ে।
সুকৌশলে আমাদের কৃষি ধ্বংস হচ্ছে।
মজা টের পাচ্ছেন?
এই আধুনিক প্রাযুক্তিক সভ্যতার বয়স কত?
১০০ বছর? হয়েছে?
এর মধ্যেই দেখেন প্রকৃতির সাথে মানুষের লড়াই চলছে। প্রযুক্তির লড়াই।
প্রযুক্তি নিয়ে প্রকৃতির বিরুদ্ধে লড়াই।
প্রযুক্তি এসেছে ভাল উদ্দেশ্য নিয়ে। আর আমরা এর মিসইউজ করছি।
আপনি বুজতে পারছেন না, আপনি বাঘের খাঁচায় ডুকে বাঘকে ভেংছি কাটছেন।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মে, ২০২০ দুপুর ২:৩৬