somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুভি রিভিউ : স্প্রিং-সামার-ফল-উইন্টার এবং স্প্রিং

০৮ ই মে, ২০১৪ রাত ১২:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



স্প্রিং-সামার-ফল-উইন্টার চারটি ঋতুকে চলচ্চিত্রের নির্মাতা-লেখক কিম কি দুক মানুষের জীবনের চারটি সময়ের সাথে কাব্যিক বিশ্লেষণ করেছেন তার “স্প্রিং-সামার-ফল-উইন্টার এবং স্প্রিং” চলচ্চিত্রে । চলচ্চিত্র মানুষের জীবনকে তুলে ধরে , চারটি ঋতুকে ছবির নির্মাতা মানুষের জীবনের চারটি সময় শৈশব-তারুন্য-যৌবন- বার্ধক্যের সাথে তুলনা করেছে । সময়ের স্রোতে কিভাবে আমরা এই সময়গুলো অতিবাহিত করি তারই চলচ্চিত্র প্রকাশ ছবির গল্প ।

মানুষ কিভাবে বদলে যায় সময়ের সাথে কিংবা মানুষের জীবনের যে পরিবর্তন তা আমাদের বিভিন্ন জনের চোখে বিভিন্নভাবে ধরা পড়ে । যাকে ভাবছি আনন্দ তা হয়ত দুঃখ অন্যকোন জীবনের জন্যে কষ্ট । বেঁচে থাকার পরিবর্তনশীলতায় কতটা আমরা সময়ের সাথে খাপ খাওয়াতে পারি ? আমরা কি আসলে বুঝি আমার চাওয়া কিংবা অন্য মানুষটার প্রয়োজনটা । জীবনের আনন্দদের মাঝে বিষাদের ছোঁয়া থাকে । জীবনের বৃত্তকার বলয়ে ঘুরে ফিরে জীবনটা থমকে যেতে কি পারেনা ? আমি মানুষ সে মানুষ গল্পটা কি শুধু এইটুকুতেই শেষ হয় ? জীবন সবসময় আনন্দ দিতে পারেনা , কিছু দায়িত্ব- কিছু কর্তব্য থাকে যা সময়ের প্রয়োজনে সময়ের জন্যে করতে হয় । আর এজন্যেইতো জীবনকে মানুষ এত বৈচিত্র্যময় বলে ।



শহর থেকে অনেক দূরে একটি হ্রদ । সেখানে একটি ভাসমান বৌদ্ধ মন্দির , যাতে একজন বৃদ্ধ সন্ন্যাসী থাকেন ।তার সাথে থাকে ছোট একটা বালক যে তার কাছ থেকে দীক্ষা নেয় কিভাবে সন্ন্যাসী হবে । কিন্তু জীবনটায় একটা নির্দিষ্ট পরিমাপের মধ্যে আনা এবং ধরে রাখা কি খুব সহজ ? এখানে কি দীক্ষা নিতে আসা একটা বালককে কি কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতার স্বীকার হতে হয়না ? জীবনের বহমানতা , নিজের জীবনে নিজের সময়ের চাওয়া –পাওয়াগুলো নিজের মত ভাবতে গেলে কিংবা সবকিছু নিজের মত করতে গেলে অন্য আরেকজনের যে সমস্যায় পরতে হয় তা কি সবসময় নিজের মত হয় ? গল্পের জীবনতো মানুষেরই জীবন । সেখানে একজন সন্ন্যাসী হতে যাওয়া তরুণ কি আসলেই পারে নিজের মতন সব করতে কিংবা জীবনের অর্থবহতাকে খুঁজে পেতে । বসন্ত যায় বসন্ত আসে , এর মাঝে চলে যায় গ্রীষ্ম-শরৎ-শীত । প্রকৃতি পাল্টাতে থাকে আর সাথে সাথে কাব্যিক পরিবর্তন ঘটতে থাকে চলচ্চিত্রের ফ্রেমে সময়কে বন্দী করে। শহরের জীবনের আগ্রাসন কি একবার ছুঁতে চায়না এই জীবনের মানুষকে।প্রতিটা ঋতুর সময় যেন জানান দিচ্ছে মানুষের জীবনের ধাপ আর বেঁচে থাকার মুহূর্তগুলোতে কষ্ট-সুখ মন্দলাগা-ভালোলাগা ।



মানুষের জীবনের রৈখিকতা অনেকগুলো বিচ্ছিন্ন গল্পের সমষ্টি । জীবন যেখানে যেমন এই ধারায় চলে কালের স্রোতে মানুষের গল্প । মানুষের জীবনের প্রতিটি স্তর মানুষের মুহূর্তগুলোকে কিভাবে সাজায় মানুষ ,তাই আসলে ফুটিয়ে তোলার নিরন্তন চেষ্টা চালান চলচ্চিত্রের কবি পরিচালক কিম কি দুক । বেঁচে থাকার গল্প , আনন্দময়তা কিংবা শৈশব কিংবা কৈশোর , তারুণ্য-যৌবন, বার্ধক্য সময় সবই মানুষের একদিন স্বাদ নিতে হয় বেঁচে থাকলে । সেই সংস্পর্শ থেকে কেউ ভিন্ন হতে পারেনা । বার্ধক্যের একাকীত্ব , যৌবন কিংবা তারুণ্যের রোমান্স বা দায়িত্ববোধ সব জীবনের অংশ ।

চলচ্চিত্রের ভাষাশৈলীতে নান্দকিতার প্রকাশ ঘটানোই কাজ চলচ্চিত্রে পরিচালক- কিম কি দুক । তার চলচ্চিত্রে যেন উঠে আসে কবির কবিতার গল্প-জীবন । মানুষের জীবনের বেঁচে থাকার অর্থময়তা , জীবনের ব্যাকরণ সবকিছুর সংস্পর্শের এক অদ্ভুত মেলবন্ধন পাওয়া যায়। পাওয়া যায় মানুষের ভেতর থেকে নিংড়ে আসা জীবনের কিন্তুগুলো ,জীবনের গন্ধ । বেঁচে থাকা আসলে কি ? জীবন আসলে কি ? আমাদের পরিবেশ , সময় আসলে আমাদের কোথায় দাঁড় করিয়ে দেয় তা তার চলচ্চিত্রের পরতে পরতে উঠে আসে । জীবনের কথা , জীবনের প্রাসঙ্গিকতা , সময়ের স্রোত আমাদের ঘুরিয়ে ফিরিয়ে জীবনের কোন সমাপ্তে ডেকে আনে তার মূর্তমান প্রকাশ ঘটে কাব্যশৈলীময় তার চলচ্চিত্রের সেলুলয়েডের ফ্রেমে ।



গল্প,উপস্থিতি, কাল কিংবা সময়ের প্রাসঙ্গিকতার উপস্থাপন সবকিছুর মিলে একটা চলচ্চিত্র চমৎকার হয়ে উঠতে পারে । চলচ্চিত্রের গল্পটিও পরিচালকের নিজের লেখা আর তাই হয়ত নিজের সাথে চমৎকার বোঝাপড়া হয়েছে গল্পটিকে চলচ্চিত্রের ফ্রেমে বন্ধী করতে । অভিনয়ে ছিলেন কিম কি দুক নিজে এবং তার সাথে ছিলেন আরও ইয়ং সু ওহ , ইয়ং মীন কিম, ইউ জিন হা , জং হ কিম , জাং ইয়ং কিম প্রমুখ । শিল্পীদের উপস্থিতি , আবহ সংগীত , দৃশ্যায়ন আর্ট ডিরেকশন সবকিছুতেই ছিল চমৎকার সৃষ্টিশীলতার ছাপ । শীতের দৃশ্য কিংবা বসন্তের স্পর্শ সব মুহূর্তগুলো আন্দোলিত করবে চলচ্চিত্রে পর্দায়। কোরিয়ান ভাষায় নির্মিত দক্ষিণ কোরিয়ার এ চলচ্চিত্র মুক্তি পায় ২০০৩ সালে ।



সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:৩৯
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×