somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সেলুলয়েডের পাতায় লাইফ অফ পাই ..........

০৮ ই জুন, ২০১৪ সকাল ১১:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



"লাইফ অফ পাই" বেঁচে থাকার লড়াইয়ে লিপ্ত এক কিশোরের জীবনের গল্প । যেখানে একদিকে নিজের বেঁচে থাকার লড়াই গভীর সমুদ্রে, অন্যদিকে হিংস্রপ্রাণী বাঘ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার এক প্রাণান্তকর চেষ্টা । এ যেন দুই বিপরীত মেরুতে অবস্থান করা দুই প্রাণী মানুষ এবং বাঘের বেঁচে থাকার এক ভ্রমণ গল্প ।

জীবন খুব অদ্ভুত । মানুষ যেখানে ভাবে তার জীবনের সমাপ্তি হয়ত এখানেই , ঠিক সেখানেই হয়ত নতুন করে শুরু হয় বেঁচে থাকার গল্প । পৃথিবীর নিয়মের এক অদ্ভুত কারণে মানুষ সবকিছু হারিয়েও বেঁচে থাকার সংগ্রামে নতুন করে লিপ্ত হয় । পাই এর পরিবার পশুর ব্যবসা করে । যেখানে মানুষ বেঁচে থাকার জন্যে কিংবা জীবিকার জন্যে বিভিন্ন পেশায় লিপ্ত । সেখানে জীবিকার জন্যে হিংস্রপ্রাণীদের সাথেই পাই এর পরিবারের বেঁচে থাকা এবং জীবন । সেলুলয়েডের পাতায় যেন এ অদ্ভুত মেলবন্ধন প্রাণীদের সাথে মানুষের আবার ঠিক তেমনি এক সাদৃশ্যময় পার্থক্য । আর তা হয়ত মানুষ বলেই সম্ভব হয়েছে ।

একটা সমুদ্রের ঝড় যেখানে লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে একটা পরিবারকে , যেখানে বিচ্ছিন্ন কিশোর পাই তার পরিবার থেকে । সেখানেই প্রিয়জনদের হারিয়ে সমুদ্রে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার এক প্রাণান্তকর চেষ্টা । জীবনের প্রতিটা ক্ষণ মৃত্যুর হাতছানি তবু বেঁচে থাকার এক আকুল চেষ্টা । জনমানবহীন সমুদ্রে তার চিৎকার পৌঁছায়না কোন মানুষের কাছে । কোথায় কেউ নেই একটা মানুষ কথা বলার । সেখানেই নৌকায় আশ্রয় নেয়া পাই এর জীবনটা আরও বিভীষিকাময় হয়ে উঠে যখন সেই নৌকাতেই আশ্রয় নেই হিংস্র বাঘ ।একদিকে হিংস্র বাঘ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা , অন্যদিকে সেই হিংস্রপ্রাণীকে বাঁচিয়ে রাখার এক প্রাণান্তকর চেষ্টা। এ যেন সেলুলয়েডের পাতায় এক অদ্ভুত মেলবন্ধন মানুষ এবং হিংস্রপ্রাণী বাঘের । একটা বাঘের সাথে কিভাবে খাদ্য ভাগাভাগি করে খাওয়া পাই এর সাথে চলতে থাকে ,আবার সেই বাঘের কাছ থেকেই নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা । একাধারে নিজের ভেতর মানবিকতা ও নিজের বেঁচে থাকার জন্যে এক সাহসী চেষ্টা ।

মানুষ ও হিংস্রপ্রাণীর বেঁচে থাকার চেষ্টার এ যেন এক বহিঃপ্রকাশ সেলুলয়েডের পাতায় । অসাধারণ স্ক্রিনপ্লে , অসাধারণ গল্পের উপস্থাপনার সাথে অভিনয়ের মেলবন্ধন । একদিকে স্বজন হারানোর কষ্ট অপরদিকে একজন কিশোরের বেঁচে থাকার লড়াই এবং মানবিকতা । ইয়াং মারটেলের গল্প অবলম্বনে ডেভিড মেগ এর স্ক্রিনপ্লেতে পরিচালক এংলি যেন বাস্তবতায় থেকেও মানবিকতার সংস্পর্শ দেয়ার চেষ্টায় ছিলেন লাইফ অফ পাই ছবিতে । অসাধারণ গ্রফিক্সের কাজ , সমুদের ওপর মাছেদের ঝড় যেন ১২৭ মিনিটের ছবিটিকে আরও প্রাণবন্ত ও ছবিকে যেন আরও বেশি অর্থবহ করে তুলেছে । যেখানে বিপর্যয়ের পর বিপর্যয় , সেখানেই মাছেদের ঝড় সে বিপর্যয়টা কিভাবে একটা কিশোর পাই কিংবা হিংস্র রয়েল বেঙ্গল টাইগারের জন্যে যে কি রকম আশীর্বাদ বহে এনেছে তার এক অসাধারণ শৈল্পিক ব্যবহার দেখিয়েছেন পরিচালক এংলি ।

অভিনয় দিয়ে যেন ছাপ রেখে গেছে কিশোর পাই দর্শকের চোখে মানবিকতা এবং বেঁচে থাকার থাকার সংগ্রামের । গল্পকে আরও শক্ত অবস্থানে নিয়ে গেছে যেন পাই এর অভিনয় । ছবির বিভিন্ন দৃশ্যায়নে অভিনয় করেছে সুরজ শর্মা , ইরফান খান , আদিল হোসেনসহ আরও অনেক । পোশাক থেকে শুরু মেকআপ , দৃশ্যায়ন , সংলাপ যেন একই সুতোয় বেঁধেছেন পরিচালক অ্যাং লি ।

এক একটি দৃশ্য যেন মানুষের মনে জাগিয়ে তুলবে কিছু প্রশ্ন । বেঁচে থাকা আসলে কাকে বলে ? মানবিকতা কিংবা পশুত্ব । এ এক অদ্ভুত , তবু যেন মানুষের ভেতর আরেকটা সুন্দর মনের মানুষকে জাগিয়ে তোলার এক প্রচেষ্টা ,আর তার যেন এক সার্থক প্রয়াস লাইফ অফ পাই । চোখ জুড়িয়ে যাবে, কিছু প্রশ্ন জাগবে মনেএবং জীবনের অর্থ কি তার জিজ্ঞাসা জাগবে ২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ভ্রমণ বিষয়ক জীবনের গল্প লাইফ অফ পাই ছবির ফ্রেমের মাধ্যমে ।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুন, ২০১৪ সকাল ১১:২৩
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×