আজ আমারা ধণী গরীব ছোটবড় সবাই যে ভাবে সেল ফোন ব্যবহার করছি তা কয়েক বছর আগে ভাবাই যেত না। এযেন ছিল সপ্নের হরিণ। কারও হাতে যদি কোন সময় একটা মুঠো ফোন দেখা গেছে তখনই নিজের মনের মধ্যে খুব ইচ্ছা জেগেছে আহা ওরকম আমার যদি একটা থাকতো তবে কতই না ইচ্ছা পূরন হতো। কিন্ত সে ইচ্ছা আজবোধ হয় ঘরে ঘরে পূরণ হয়ে গেছে। এখন দিন মুজুর থেকে শুরু করে রিষ্কাচালক, ফেরিওআলা , অজপাড়াগ্রামের গৃহ বধুর হাতে এমন কি ভিক্ষুকের হাতেও সেল ফোন দেখা যায়। সেটা খুব ভালো কথা।মুঠো ফোন ব্যবহার তার ব্যক্তিগত অধিকারের আওতায় পড়ে। এর ফলে দেশ থেকে দেশান্তরে অনেক যোগাযোগের সুবিধা হয়েছে।ফলে অনেক কঠিন কাজও সহজ হয়ে গেছে। কিন্ত সেই সাথে বেড়ে গেছে যত্রতত্র সেলফোনের ব্যবহার। মাঝে মাঝে অবাক লাগে, যখনই দেখি একজন ড্রাইভার গাড়ি চালাতে চালাতে ফোনে কথা বলছে,বাসের মধ্যে যাত্রিরা অযথা উচ্চস্বরে নানা জাতিয় কথাবার্তা বলছে, ফেনো কথা বলতে বলতে চলন্ত গাড়ি থেকে নামছে, রাস্তা ফুটপাত অলিগলি দখল করে অযথা ফোন টিপাটিপি করছে,নানা রকম হাবিজাবি কথা বলছে, অফিসে কিম্বা জুরুরি কোন মিটিং এর মধ্যেও উচ্চস্বরে রিং টোন বেজে উঠে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস চলাকালিন সময়ে ফোন ওপেন রেখে নির্বিগ্নে আলাপ করছে,সারা রাত কথা বলছে,প্রতি নিয়ত অন্যায় ভাবে একে অপরকে মিস কল দিচ্ছে, দেখা যাচ্ছে স্কুলের ছোট ছেলে মেয়েদের অবাধে ফোন ব্যবহার করছে ।এমনকি রাতে ঘুমাতে যাবার আগেও মাথার কাছে ফোনটি ওপেন করে রাখছে অনেকে। আর মোবাইল কোম্পানী গুলোর কথা কি আর বলবো? এরা ব্যবসার নামে মানুষকে কোথায় নিয়ে যেতে চাই তা কোম্পানী গুলোই ভালো বলতে পারবে। কোম্পানীগুলো কত যে অস্থির তা তাদের প্রতিনিয়ত নিত্য নিতুন এ্যাড দেখলেই বুঝা যায়। সকাল,দিনরাত সর্বক্ষণ, সর্বসময় মানুষকে বক বক করানোর নিত্য নতুন কৌশল জানাচ্ছে,এবং মাছের টোপের মত নতুন নতুন টোপ মানুষের সামনে ফেলছে।আর আমরা সেটা বিবেচনা না করেই সেটা গিলে ফেলছি। ব্যবসার নামে কোম্পানীগুলো প্রতিনিয়ত কত শত শত কোটি টাকা ইনকাম করছে তা যারা ভালো অংক করতে জানেন, তারাই এর হিসাব বের করতে পারবেন। দেখে মনে হয় কোম্পানীগুলোর ইচ্ছা এই মোবাইল নামের যন্ত্রগুলো প্রতিনিয়ত মানুষকে কন্ট্রোল করুক।আসলে হচ্ছেও তাই। এই একটি যন্ত্র প্রতিনিয়তই মানুষকে কন্ট্রেল করছে। কিন্ত হওয়া উচিত ছিল উল্লোটা।মানুষ নিজেকে কন্ট্রোল করে প্রতিটি যন্ত্র ব্যবহার করবে।এই প্রসঙ্গে সেলফ কন্ট্রোল এর উপর একটি খুব সুন্দর গল্পের কথা মনে পড়ে গেল। আমাদের এক শ্রদ্ধেয় গুরুজি এক অনুষ্ঠানে আমাদের শুনিয়েছিলেন।পরবর্তীতে গল্পটি ব্লগে লিখার ইচ্ছা রইল। যাইহোক, কথা আছে বাঙ্গালিরা কাজ কম করে বেশি কথা বলে এবং সবকিছুতেই বেশি বাড়াবাড়ি করে।আমরা আমাদের কর্ম দিয়েই হয়তো একথা প্রমাণ করেছি।আমদের প্রত্যেকের ভেবে দেখা উচিত এই যে যত্রতত্র ফোনের ব্যবহার তার কতটুকু আসলেই প্রয়োজন।এর ফলে কি হতে পারে? সেটা আমাদের ভাবতে হবে। #এর ফলে একজন গাড়ি চালক যে কোন সময় এক্সিডেন্ট করতে পারে।# একজন যাত্রীও গাড়ি থেকে নামার সময় এক্সিডেন্ট করতে পারে। # রাতে ঘুমের ব্যঘাত ঘটে । # টাকার অপচয় হয়।# ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার মারাত্বক ক্ষতি হয়।# অনেকে এর মাধ্যমে আলতু ফালতু যে কোন ব্যক্তির সাথে প্রেমে অথবা অবৈধ কোন কাজে জড়িয়ে পড়ছে।#সময়ের অপচয় হচ্ছে। # টাকার অপচয় হচ্ছে। # ফোন থেকে যে রে বাহির হয় তা এবং কথার ফলে উৎপন্ন শব্দে পরিবেশ দূষন হচ্ছে।# ফোনের মাধ্যমে খুন খারাপিও হচ্ছে।# বিভিন্ন কথা এবং ম্যাসেসের মাধ্যমে হার্টের উপর চাপ পড়ছে।# ফুটপাত ,রাস্তা,ওভার ব্রিজ, স্কুল-কলেজ, যেকোন ফোরামে সেল ব্যবহারে অনেক মানুষ বিরক্তি বোধ করে। এবং অব্যশ্যই বিরক্ত বোধ করে। এবং এই যত্রতত্র কথোপকনের ফলে একজনের পারিবারিক কথা অথবা ব্যক্তিগত কথা অথবা অন্য যাবতীয় কথা অন্য কেও শুনে ফেলছে।ফোন একটা অতি জুরুরি মাধ্যম।আমরা কি পারি না শুধুই অতি জুরুরী,জুরুরী কাজে এর ব্যবহার করতে। এতে আমাদের টাকাও অপচয় কম হয় এবং সময়ও বাচে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৩:৩৩