ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে বর্তমান সরকার ভোটের আগে জনগণের কাছে হাজির হয়েছিল এবং তারা শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়ে ক্ষমতায় এসেছে এবং আছে। আমরা ভাবি সত্যই যদি আমাদের দেশটা আলাদিনের যাদুর চেরাগের পরশে ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়ে যেত তাহলে কেমন হত ? হয়তো খুবই ভালো হতো। কিন্ত আদৌও কি তা সম্ভব? সম্ভব না, কারণ আলাদিনের চেরাগ বাস্তবে নেই ওটা রুপ কথায় আছে।রুপ কথার কাহিনী বাস্তব জীবনে প্রতিফলিত হয় না।কারণ আমাদের দেশের জনগণ বছরের পর বছর শুধু আশার বাণী শুনেছে রাজনীতি বিদদের কাছ থেকে । কিন্ত বার বার তারা প্রতারিত হয়েছে, ব্যর্থ হয়েছে তাদের আশা -আখাঙ্খা। দেশের সার্বিক উন্নয়ন ব্যবস্থা পর্যবেশিত হয়েছে ব্যর্থতায় ,সুপার ফ্লপ হয়েছে জনগণের প্রত্যশা,আশা -আখাঙ্খা। দূরবৃত্তায়ন এবং নীতি হীনদের কাছে তারা বার বার পরাজয় বরণ করেছে।আর তাই জনগণ প্রতিবারই নতুন করে অংঙ্ক কষার হিসাব করেছে কিন্ত তারা তা মিলাতে পারিনি। বার বার হিসাব ভূল হয়েছে। তারা বার বার ফিরে গেছে পিছনের জীবনে, সামনে তারা কখনোই এগুতে পারেনি।আমরা যদি ইউরোপের কোন দেশের দিকে নজর না দিয়ে আমাদের এশিয়ার কিছু কিছু দেশের দিকে নজর দেই তাহলেও প্রশান্তিতে আমাদের মন ভরে যায়, কত অল্প সময়ে তারা নিজেদের শ্রমও মেধাকে কাজে লাগিয়ে উন্নতির চরম শিখরে উঠে এসে ডিজিটাল দেশ হিসাবে নিজেদের পরিচিতিটা তুলে ধরেছে, আর আমরা? যাক তবুও আমাদের শান্তনা যে, আমরা ডিজিটাল দেশ না পেলেও আশার বাণী অনন্ত পক্ষে শুনতে পাচ্ছি এও বা কম কি? কিন্তু শুধু মুখে বলল্লেই ডিজিটাল দেশ গড়া যায় না। এর জন্য প্রয়োজন দক্ষ নেতৃত্ব, জ্ঞান, দক্ষতা,নীতি,সততা ,উদার দৃষ্টি-ভঙ্গি,ন্যায়-পরায়নতা,ধোর্য,সাহস,সহনশীলতা, প্রো-একটিভ দৃষ্টি-ভঙ্গি ,সঠিক পরিকল্পনা ,ও সুস্থ ধারার রাজনীতি এবং এর বাস্তবায়নে নিয়মিত মনিটরিং ব্যবস্হা।ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের মন মানষিকতার আমুল পরিবর্তন সবার আগে জুরুরি। বিশেষ করে সরকার প্রধান এবং সকল রাজনীতি বিদদের। মন মানসিকতার আমুল পরিবর্তনই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। কারণ আমাদের সকল সম্যসার মূল কারণ আমাদের মনের মাঝে ,আমাদের উদার দৃষ্টি-ভঙ্গির অভাব। আমাদের মন মানষিকতা অত্যন্ত ছোট, আমারা বড় কিছু ভাবতে পারি না। কুসংস্কার , নিরক্ষতা , অজ্ঞতা, ধর্মীয় কূপমন্ডতা,লোভ-লালসা আমাদের মনকে সার্বক্ষনিক অন্ধকারচ্ছন্ন করে রেখেছে । উদার দৃষ্টি ভঙ্গির অভাবে আমরা অনেক ভালো কাজ করতে পারি না।তাই সরকারকেই সর্বপ্রথম সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে আসলেই তারা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে চায় কিনা? যদি চায় তবে তার জন্য যা যা করা প্রয়োজন সব তাদেরকেই করতে হবে। মুখে প্রচার করে জনগণের সামনে টোপ ফেললেই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া যাবে না। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে বিট্রিশ আমলের পুরানো সব নিয়ম-নীতি ঝেড়ে ফেলে সকল ক্ষেত্রে আধুনিকরণ ,স্বচ্ছ গতিশীলতা আনতে হবে।এর জন্য প্রয়োজন হবে প্রযুক্তির উন্নয়ন,সরকারী -বেসরকারী সকল প্রশাসনে আধুনিকরণ , গতিশীলতা,উৎপাদন ব্যবস্থা , স্বাস্থ্য, কৃষি,বেসরকারি খাত, শিক্ষা ব্যবস্থা ,বানিজ্যের উন্নয়ন সহ ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রে উন্নতির প্রসার ঘটাতে হবে। সেই সাথে সরকারী বেসরকারী সেবার মান উন্নয়ন সহ সকল ক্ষেত্রে দক্ষ লোকবল গড়ে তুলতে হবে।ডিজিটাল বাংলাদেশের কার্যকরী সুফলের জন্য সকল মন্ত্রালয়ের মধ্যে একটা নেটওয়ার্কিং ব্যবস্থা গড়ে তূলতে হবে।যার যেমন খুশি কাজ করা চলবে না। সর্বক্ষেত্রে জবাব দিহিতা থাকতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন সরকারের সদিচ্ছা,সুশাসনও ন্যায় ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলা।।আর এর জন্য সর্বপ্রথম আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে নজর দিতে হবে। শিক্ষা ব্যবস্থায় আনতে হবে আমূল পরিবর্তন ।পুরানো পুথিগত শিক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে তো আর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া যাবে না। প্রাথমিক শিক্ষা থেকে উচ্চতর শিক্ষা ব্যবস্থায় গুনগত মাণ নিয়ন্ত্রন করে মানসন্মত ,গুনগত, জীবন মুখী ও কর্মমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।জোর দিতে হবে আই সি টি ব্যবস্থায়।ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে শুধু ঢাকাকে নিয়ে চিন্তা করলেও হবে না । গ্রামের উন্নয়নে নজর দিতে হবে। গ্রামিন অবকাঠামোর পরিবর্তন আনতে হবে। গ্রামীন দরিদ্র জনগোষ্টির জীবন মানের উন্নয়ন ঘটাতে হবে।গ্রামীন বেকার যুবক ,গ্রামীন মহিলাদের কে ইমপাওয়ার মেন্ট করতে হবে। দেশকে চরম দূর্নীতিমূলক অবস্থা থেকে টেনে তুলে স্বচ্ছ জবাব দিহিতা মূলক রাষ্ঠ হিসাবে জাতির কাছে তুলে ধরতে হবে।এই ক্ষেত্রে বলা যায় বড়ই দুখেঃর সাথে আমাদেরকে অবলোকন করতে হচ্ছে যে, নির্বাচিত সরকার আসার পরও দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দলীয় বাহিনী যে ভাবে লাটি সোটা ,পিস্তল ,রাম দা নিয়ে ওপেনলি নিজেদের মধ্যে মারামারি করছে তাতে বলতেই হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই যে অবস্থা এটা কি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পক্ষে খু্বই সহায়ক হবে? কারণ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে যারা সহায়ক ভুমিকা পালন করবে সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই যদি এই সব দৃশ্য দেখতে হয় তাহলে আমাদের আর কিছুই বলার থাকবে না।নিরবে সহ্য করা ছাড়া। গত ১৮ ফেবুয়ারি প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের পুনর্মিলনীতে তার বক্তৃতায় বিভিন্ন পত্রিকার সমালোচনা করে বিরোধী দলের নানা কার্যকলাপ তুলে ধরে নিজের দলের মধ্যে সকল সহিংস ঘটনা আড়াল করার যে চেষ্টা করেছেন তাতে আমরা বলতে পারি তিনি নিজের দলের সকল অর্পকর্মকে অনাসেই সাই দিয়ে গিয়েছিলেন ।এর আগে আমরা স্বরাষ্ট মন্ত্রীর ও এই ধরনের বিভিন্ন বক্তব্য শুনেছি। আমরা বলতে চাই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পূর্ব শর্তই হলো সরকার প্রদানকে সকল ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে দলীয় গন্ডি থেকে বের হয়ে আসতে হবে ।তিনি যদি কোন দলের সরকার প্রধান হয়ে থাকেন তবে তিনি ডিজিটাল বাংদেশ গড়বেন কি ভাবে?
সর্বশেষে আবারও বলতে চাই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে চাই প্রচুর কাজ, উদার দৃষ্ঠি ভঙ্গি ,সৎযোগ্য নেতৃত্ব,সঠিক পরিকল্পনা,গতিশীল নেতৃত্ব, সততা,নিষ্ঠা, স্বচচ্ছ ও স্থায়ী পরিষ্কার ভিষন।যা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সাহায্য করবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১২:২৪