somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডায়রিয়া

২৫ শে মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১২:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ডায়রিয়া এখনও আমাদের দেশে একটি ভয়াবহ রোগ হিসাবে ধরা হয়। কারণ প্রতি বছর আমাদের দেশে কয়েক লাক শিশু ডায়রিয়া আক্রান্ত হয় এবং এদের একটি বিরাট অংশ মারা যায়। ডায়রিয়া এখনও আমাদের দেশের শিশু মৃত্যুর অন্যতম একটি কারণ।ডায়রিয়া সাধারণত ছড়ায় অপরিষ্কার নোংড়া পানি পানকরা,অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ,বাসি পচাঁ, বাহিরের খোলা খাবার গ্রহন,অস্বাস্থ্যকর নোংড়া পায়খানা ,যেখানে সেখানে মল ত্যাগ করা, পায়খানার পর এবং খাবারের আগে হাত না ধুয়ে খাবার গ্রহন ইত্যাদি ডায়রিয়া আক্রান্ত হবার পূর্বশর্ত ।
গতকিছু দিন থেকে দেখা এবং শোনা যাচ্ছে হঠাৎ করেই রাজধানীতে ডায়রিয়ার প্রোকপ খুব বেড়ে গেছে। ফলে আইসিডিডিআরবিতে নাকি ডায়রিয়ার রোগীদের হিড়িক পড়ে গেছে। ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী এসে ভিড় জমাচ্ছে আইসিডিডিআরবিতে।কর্তৃপক্ষ এসব রোগীদের নিয়ে পুরোদমে হিমশিম খাচ্ছে। আক্রান্তদের মধ্যে শিশুরাই বেশি।যদিও প্রতি বছর আমাদের দেশে মে থেকে জুলাই পর্যন্ত সময়কে ডায়রিয়ার মৌসুম হিসাবে ধরা হয় সেই হিসাবে এবার একটু আগেই এর প্রদুভাব দেখা দিয়েছে। প্রতি বছর এই সময়ে আমাদের এই ঢাকা নগরীতে প্রচন্ড পানির আভাব দেখা দেয়। এবং এই সময় আমাদের দেশে প্রচন্ড গরমের মৌসুম থাকে ফলে দেখা যায় আমাদের প্রয়োজনের তুলনায় পানি সরবরাহ খুবই কম থাকে। প্রায় সমই আমরা একটি খবর পেয়ে এবং দেখে থাকি যে, রাজধানীর ওয়াসার লাইনের পাইপ এবং সুয়ারেজ লাইন প্রায় এলাকায় একাকার হয়ে ময়লা দুর্গগন্ধযুক্ত পানি সরবরাহ করা হয়।যারা এর ভুক্তভোগী একমাত্র তারাই এর ভয়াবহতা সম্পর্কে বলতে পারবেন। অথচ আমরা এই একটি বিশাল মহামারি রেগের হাত থেকে অনাসেই রক্ষা পেতে পারি শুধুমাত্র আমাদের একটু সচেতনতা বোধ থেকে। ডায়রিয়া প্রতিরোধ করা মোটেই কোন কঠিন কাজ নয় এবং ব্যয়বহুলও নয়। শুধু প্রোয়োজন স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং খাদ্যাভাস এর পরিবর্তন। আর এই সচেতনতাটুকু আমাদের নেই বলেই ডায়রিয়া আজও আমাদের কাছে মহামারীরোগ হিসাবে গন্য। ডায়রিয়া প্রতিরোধের জন্য আমাদের সকলকে অবশ্যই কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। যেমন: ১. ময়লা দুষিত নোংড়া পানি না পান করা। বিশেষ করে বাইরের হোটেল ,ফুটপাতের,রাস্তার নোংড়া পানি,যে কোন প্রকার সরবত।২. বাইরের যে কোন প্রকার খোলা খাবার না খাওয়া। বিশেষ করে কাটা শশা,গাজর,তরমুজ বুট,খোলা যে কোন ফল-মূল নানা প্রকার আচার,যে কোন প্রকার ভাজা-পোড়া। ৩.বাসি-পচাঁ, নোংড়া ,মাছি বসা খাবার না খাওয়া।৪. বাজার থেকে কোন ফল-মূল কেনার পর সেটা সরাসরি না খেয়ে ধুয়ে খাওয়া। ৫.খাবারের আগে এবং পায়খানার পর অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত ধোয়া। ৬. খাবারের পানি অবশ্যই ফুটিয়ে অথবা পানি বিশুদ্ধ করণ ট্যাবলেট দিয়ে বিশুদ্ধ করে পানি পান করা।
ডায়রিয়া হলে একটি শিশুর শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি,লবণ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পদার্থ বের হয়ে যায় ফলে আক্রান্ত শিশুটি অতি তাড়াতাড়ি পানি সল্পতার কারণে দুর্বল হয়ে পড়ে এবং তখন তার যথাযত চিকিৎসা না হলে শিশু মৃত্যু মুখে পতিত হয়। আমাদের দেশে এই ডায়রিয় নিয়ে আবার নানা প্রকার কুসংষ্কার আছে। ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুকে অনেকেই ভুতে ধরা ও বাতাস লাগা বলে আখ্যায়িত করে থাকেন। অনেক সময় ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশু অথবা ব্যক্তিকে সব প্রকার খাবার দেওয়া থেকে বিরত রাখেন। যেমন মায়ের বুকের দুধ, ভিটামিন যুক্ত খাবার,ফলমূল ইত্যাদি। যা আমাদের একটা বড় অজ্ঞতা । ডায়রিয়া আক্রান্ত কোন শিশু অথবা ব্যক্তিকে সময়মত অধিক পরিমানে তরল জাতীয় খাবার যেমন: স্যলাইন,ভাতের মাড়,চিড়ার মাড়, ডাবের পানি. সরবত, সহ পুষ্টি কর খাবার ,মায়ের বকের দুধ দিতে হবে। কারণ ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে এমনিতেই প্রচুর লবন পানি এবং প্রোয়েজনীয় পদার্থ বাহির হবার ফলে তার শরীরে পানি শূন্যতা এবং ভিটামিনের অভাব দেখা দেয় সেখানে যদি তাকে আরও খাবার থেকে বিরত রাখা হয় তাহলে তার জন্য জীবনের ঝুকি আর বেড়ে যায়। ডায়রিয়া আক্রান্ত ব্যক্তিকে যদি প্রথম থেকে প্রপারলি চিকিৎসা (তরল খাবার দেওয়ার মাধ্যমে )দেয়া যায় তবে সেখানে মৃত্যুর হার অনেকাংশে কম থাকে। আর এটাই ডায়রিয়ার সর্বোত্তম ও প্রথম চিকিৎসা। অবস্থা খারাপ হলে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তারের শরনাপন্ন হতে হবে। তবে ডায়রিয়া চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধের উপায় অনেক সহজ এবং বুদ্ধিমানের কাজ। আর এর জন্য প্রোয়োজন আমাদের একটু সচেতনতা ও মুখের কন্ট্রেল রাখা প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা মেনে চলা । আমাদের মন চাইলেই যাতে আমরা যাতে যা কিছু খেয়ে না ফেলি। আমাদের একটু সচেতনা বোধ থেকে ইচ্ছা করলেই আমারা অনেক মানুষের জীবন রক্ষা করতে পারি।

সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১২:৪৯
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×