somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সেই সময়!! ...

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১০ রাত ১১:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মদের নেশায় নটুবাবুর চক্ষু ঢুলু ঢুলু! .......সহসা ঘুঙুরের ছন্দ ধীর হইতে দ্রুতলয় হইতে লাগিল..... অধিকতর বেগে তবলায় চাঁটি পড়িতে লাগিল...... মন্দিরার টুং-টাং পৌঁছিল উচ্চলয়ে! সঙ্গীতের মূর্ছনা আরও উচ্চাঙ্গে উঠিল।

চম্পাবাই-এর দেহ সৌষ্টব অধিকতর অবগুন্ঠনমুক্ত করিয়া দোপাট্টা খসিয়া পড়িল..... দেহখানি স্বর্পিনীর ন্যায় বাঁকাইয়া পদ যুগলের উপর ভর করিয়া একই বিন্দুতে চক্রাকারে ঘূর্ণন করিতে লাগিল... ঘাগরার মুড়ি বাতাসে ভাসিয়া উর্দ্ধমূখী হইয়া ছাতার রূপ ধারণ করিল। থিরি থিরি কম্পমান চম্পাবাই!.......আসরের সকলে পুলকিত হইয়া ধুঁয়া ধরিতে লাগিল। নটুবাবু চকিতে সম্বিত ফিরিয়া পাইয়া কহিল--- সাধু সাধু!

রাসবিহারী নটুবাবুর পানপাত্র পুনরায় ভরিয়া দিতে উদ্যত হইল বটে... তবে তাহাতে তাঁহার দৃষ্টি চম্পাবাই-এর দেহসৌষ্টব দর্শন হইতে কিছুমাত্র দিকভ্রষ্ট হইলনা। নৃত্যের তালে তালে চম্পাবাই-এর বক্ষদেশ এবং নিতম্ব যতটা না কাঁপিয়া উঠিতেছে.... রাসবিহারীর তৃষ্ণার্ত হৃদয় ততোধিক কাঁপিয়া কাঁপিয়া উঠিতে লাগিল। সুদূর বানারস হইতে আগত জাত বাইজি চম্পাবাই! কি তাঁহার রূপ-যৌবন! কি তাঁহার স্বর্পিনীর ন্যায় বাঁকানো দেহপট! কি তাঁহার নৃত্যের ঠমক!... আহা!

নটুবাবু প্রত্যহই রাঁড়বাড়ী যান। নিত্যদিনই যান। নটুবাবু, অর্থাৎ নটবিহারী মুখার্জী.... ঠাকুর্দার বিশাল জমিদারী, এখন তিনিই জমিদারীর উত্তরাধিকার। যদিও জমিদারী এখন পরতির দিকে... তবুও আরও দুই পুরুষের আরাম আয়েশের নিমিত্তে যথেষ্ট! রাসবিহারী তাঁহার মাইনে করা খেদমদগার। চম্পাবাই.... নটুবাবুর বাঁধা রক্ষিতা!

মদের জলসা শেষ হইতে হইতে নটুবাবু প্রায়শঃই পাঁড় মাতাল হইয়া পড়েন। সকলে প্রস্থান করিলে বাঁদীরা নটুবাবুকে চম্পাবাই-এর খাস কক্ষে লইয়া শুয়াইয়া দেয়... গা হাত-পা টিপিয়া দেয়! ইহাতে নটুবাবুর আরাম বোধ হয় বিলক্ষণ। নটুবাবু হুঁসে থাকিলে চম্পাবাই স্বয়ং তাঁহার সেবা যত্ন করেন বৈকি! তবে বেহুঁস থাকিলে সে বালাই নাই.....

আজ নটুবাবু মাতাল হইলেন বটে..... তবে মদের নেশায় বেহুঁস হইলেন না, বেহুঁস হইলেন চম্পাবাই-এর উত্তাল নৃত্যকলায়! গলার মুক্তার মালাখানি চম্পাবাই-এর উদ্দেশ্যে ছুঁড়িয়া দিয়া তিনি টলটলায়মান পদে উঠিয়া দাঁড়াইলেন। রাসবিহারী তাঁহাকে দাঁড়াইতে সাহায্য করিল এবং পরক্ষণেই বাঁদীগণের হাতে নটুবাবুকে সঁপিয়া দিয়া নিজে ভারমুক্ত হইল।

চম্পাবাই-এর খাস শয়ন কক্ষ! নটুবাবু চক্ষু মুদিয়া চিৎ হইয়া শুইয়া আছে। স্নান সারিয়া চম্পাবাই কক্ষে প্রবেশ করিল ...... সদ্য প্রস্ফুটিত স্নিগ্ধ গোলাপের ন্যায় ভেজা চুলে ইসৎ স্বচ্ছ গোলাপী বর্ণের মিহি কাপড়ে নিজেকে জড়াইয়া চম্পাবাই নটুবাবুর পাশে আসিয়া বসিল...... নটুবাবুর মাথায় পরম আদরে হাত বুলাইতে লাগিল... চম্পাবাই-এর বক্ষদেশ হইতে বসন খসিয়া পড়িল.. তাহাতে সে বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ করিলনা। দুধে-আলতা গাত্র বরণ... যৌবনের দ্যুতি যেন আলোকচ্ছটার ন্যায় ঠিকরাইয়া বাহির হইতে লাগিল! অত্র দৃশ্যপটে চম্পাবাই-এর যৌবনের রূপ বর্ণনার অতীত! চক্ষু মুদিয়া মানস চক্ষে তাঁহার কিঞ্চিৎ অনুভব করিলেও করা যাইতে পারে বটে... তবে তজ্জন্য প্রকৃত রসিক মন থাকা বাঞ্চনীয়!

রাসবিহারী নটুবাবুর ভারমুক্ত হইয়া স্বীয় তাড়নায় ভারাক্রান্ত হইল। চম্পাবাই-এর রূপ-যৌবন উপভোগ করিবার সুযোগ তাঁহার আপাতঃ নাই বটে... তাহাতে কি?! কমলা-তো রহিয়াছে। চম্পাবাই-এর বাঁদী কমলা সুযোগ বুঝিয়া রাসবিহারীর চোখে চোখ রাখিয়া ইঙ্গিতপূর্ণ ইশারা করিল। রাসবিহারী সে ইশারার মর্ম বিলক্ষণ বোঝে! কমলা কৃষ্ণবর্ণ হইলেও তাঁহার দেহের বাঁধন এখনও অটুট এবং যথেষ্ট আকর্ষণীয়া বটে। সেই আকর্ষণ রাসবিহারী উপেক্ষা করিবে ক্যামনে! কমলা রতিক্রিয়ার যথেষ্ট পারদর্শী... রাসবিহারীর সেই বিষয়ে সম্যক ধারণা রহিয়াছে!

নটুবাবু মদের নেশায় কতটুকু আচ্ছন্ন রহিল, আর..... চম্পাবাই-এর যৌবন সুধা কতটুকু পান করিল সেই বিষয়ে বাহির মহলে বিতর্ক চলিতে পারে, কিন্তু রসিক রাসবিহারী প্রণয় রস সিঞ্চনে কিছুমাত্র কার্পণ্য করিলনা। আজ কেন জানি রাসবিহারী অধিক ভাবাবেগে আপ্লুত হইল।.......কমলাকেই চম্পাবাই জ্ঞান করিয়া নিজের মানসপটে মোহনীয় এক তৃপ্তি উপভোগ করিতে লাগিল। প্রণয়ে প্রিয়ার পদতলে নিজেকে সঁপিয়া দিয়া কল্পনায় চম্পাবাই-এর নৈকট্য অনুভব করিতে লাগিল। চম্পাবাই-এর প্রণয় সাগরে রাসবিহারী অবগাহন করিল..... ঘটি ঘটি জল পানে তৃপ্ত হইল ......পরম তৃপ্তিতে স্বগোক্তি করিল...... সাধু.. সাধু!


(নিরাপদ হবার আগে এই গল্পটি পোস্ট দিয়েছিলাম একবার। তখন ৫০-৫০% মিশ্র প্রতিক্রিয়া পেয়েছিলাম। প্রথম পাতার পাঠকদের জন্য দূরু দূরু বুকে আবারও রি-পোস্ট দিলাম। জানিনা পাঠক কিভাবে নেবেন এবার! সকলকে শুভকামনা)



সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০২০ রাত ৯:৩০
২৫টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঘরে ফেরার টান

লিখেছেন স্প্যানকড, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ ভোর ৬:৩১

ছবি নেট।

তুমি মানে
সমস্ত দিনের ক্লান্তি শেষে
নতুন করে বেঁচে থাকার নাম।

তুমি মানে
আড্ডা,কবিতা,গান
তুমি মানে দুঃখ মুছে
হেসে ওঠে প্রাণ।

তুমি মানে
বুক ভরা ভালোবাসা
পূর্ণ সমস্ত শূন্যস্থান।

তুমি মানে ভেঙ্গে ফেলা
রাতের নিস্তব্ধতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বজলুল হুদাকে জবাই করে হাসিনা : কর্নেল (অব.) এম এ হক

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:৫৯

মেজর বজলুল হুদাকে শেখ হাসিনা জবাই করেছিলেন।

(ছবি ডিলিট করা হলো)

শেখ মুজিবকে হত্যার অপরাধে ২৮শে জানুয়ারী ২০১০ এ মেজর (অব.) বজলুল হুদা সহ মোট ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। রাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মি. চুপ্পুর পক্ষ নিয়েছে বিএনপি-জামাত; কারণ কী?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৬


বিএনপি গত ১৬ বছর আম্লিগের এগুচ্ছ কেশও ছিড়তে পারেনি অথচ যখন ছাত্ররা গণহত্যাকারীদের হটিয়েছে তখন কেন বিএনপি চু্প্পুর পক্ষ নিচ্ছে? অনেকেই বলছে সাংবিধানিক শুন্যতা সৃষ্টি হবে তার সংগে বিএনপিও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগারেরা প্রেসিডেন্ট চুপ্পুমিয়াকে চান না, কিন্তু বিএনপি কেন চায়?

লিখেছেন সোনাগাজী, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৪



**** এখন থেকে ১৯ মিনিট পরে (বৃহ: রাত ১২'টায় ) আমার সেমিব্যান তুলে নেয়া হবে; সামুটিককে ধন্যবাদ। ****

***** আমাকে সেমিব্যান থেকে "জেনারেল" করা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিকাহের পরিবর্তে আল্লাহর হাদিসও মানা যায় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪




সূরা: ৪ নিসা, ৮৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
৮৭। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নাই। তিনি তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন একত্র করবেন, তাতে কোন সন্দেহ নাই। হাদিসে কে আল্লাহ থেকে বেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×