somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কেন এত এত বিবাহবিচ্ছেদ হচ্ছে? এর কারণ কি?

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১১:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আজকাল খবরের কাগজ খুললেই স্বামী-স্ত্রী মনোমালিন্য; হতাহতে ঘটনা এমনকি একজনে হত্যা করে আরেকজন কে আসামী হতে খবরে দেখা যায়! এর কারণ কি? কেন এই সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলছে! গত কয়েকদিন আগে কোনো এক টেলিভিশন চ্যানেলে দেখলাম শুধু এই বছর ২২,০০০+ বিবাহবি বিচ্ছেদ ঘটেছে।যা আসলেই আশংকাজনক! কেন এত বিবাহ বিচ্ছেদ? একটু খেয়াল করে দেখলে দেখা যায় এই বিষয়টি ঘটছে মূলত অশিক্ষা, অসম স্ট্যাটাসের বিয়ে এবং প্রেমের বিয়ে!

বিয়ের পূর্বে প্রেম করা আর বিয়ের পর সংসার করা পুরাই আলাদা জিনিস! বিবাহের পূর্বে প্রেম একটা ফ্যান্টাসি! তখন ছেলে মেয়ে উভয়েই উভয়ের সামনে নিজেকে সেরা ভাবে উপস্থাপন করতে চায়! কয়েকদিন পর পর দেখা করা ছেলেটি যেমন চায় মেয়েটির চোখে তাকে হিরো লাগুক ঠিক একই ভাবে মেয়েটি চায় ছেলেটির চোখে তাকে এক পরম সুন্দরী হিসেবে দেখা যাক! আর তাই প্রেমের দিনগুলিতে ব্যাক্তিগত জীবনের নেতিবাচক ব্যপারগুলো পরস্পরের কাছে প্রকাশ পায় না! উভয়েই যতটা সম্ভব চেস্টা করে সেই নেতিবাচক বিষয় / আচরণ গুলো লুকিয়ে রাখতে!

বিয়ের পরে সংসার জীবন হচ্ছে রূঢ় বাস্তবতা! এখানে আর অভিনয় না! নিত্যদিনের অভ্যাস / বদভ্যাস প্রকাশ পাবে! কৃত্রিম ভালোমানুষের পর্দা উন্মোচিত হয়! একই ছাদের নিচে চব্বিশঘন্টা একজন মানুষের সাথে থাকলে তখন সত্যিকার ভাবে বোঝা যায়, চেনা যায়। প্রেমের দিনগুলির মত ক্ষণিকের দেখা আর ভাববিনিময়ের মধ্যে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি সহজাত আকর্ষণের চাপল্যভরা মোহনীয় সময়টা তাই সংসারজীবনে থাকেনা। সংসারজীবনে আবেগের চেয়ে বাস্তবতার ভূমিকা বেশি।
নির্জনে বসে প্রেয়সীর হাত ধরে যে রোমান্টিসজমে বুঁদ হওয়া সহজ, বিবাহিতজীবনে সারাদিন অফিস করে বাড়ি ফিরে কানের কাছে বাচ্চা ছেলের ঘ্যানঘ্যান আর বউয়ের অভিযোগের ফিরিস্তি শোনার মুহূর্তে সেই রোমান্টিসিজম থাকেনা। মনে ঘোরে একই কথা-"তোমাকে তো বিয়ের আগে এমন মনে হয়নি!"

প্রেমের সম্পর্কগুলো ক্ষণিকের ভালোলাগা থেকে গড়ে ওঠা। ওটা আর একটা মানুষের সাথে জীবন কাটিয়ে দেওয়া এক ব্যাপার না। এজন্য যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, ধৈর্য আর ত্যাগের দরকার সেটা তথাকথিত প্রেমের সম্পর্কে কখনোই গড়ে ওঠা সম্ভব না। দাম্পত্য জীবনের সমস্যাগুলো একে অন্যের সুন্দর মুখের দিকে তাকিয়ে সমাধান হয়ে যায়না।

সেক্যুলাররা প্রায়ই অ্যারেনজড ম্যারেজের দুর্নাম করতে গিয়ে বলে-'ছোটবেলা থেকে আমরা শিখি অচেনা মানুষের দেওয়া খাবার না খেতে, অথচ অ্যারেনজড ম্যারেজের মাধ্যমে একজন অচেনা মানুষের সাথে বিছানায় শুতে বাধ্য করা হয়!' অচেনা মানুষই বটে। যেমন জাফর ইকবাল বলেছিল বিয়ের আগে অন্তত তিনবছর প্রেম করে পরস্পরকে 'চিনে' নেওয়া দরকার। মারহাবা। এই 'চিনে নেওয়া' কতটা সম্ভব সেটা প্রেম করে বিয়ে করা দম্পতিদের দিকে তাকালেই বোঝা যায়। সাময়িক ভালোলাগা আর মা-বাবার পকেট ফাঁকা করা ফূর্তির দিনের উপলক্ষই যদি 'চিনে নেওয়া' হত তাহলে আর বিয়ের পর প্রিয় মানুষটির 'অন্যরূপ' দেখে কেউ হতাশ হত না।

বস্তুত বিয়ের আগের প্রেমের সময়টাতে শয়তান একে অন্যকে বিউটিফাই করে, ফলে হারাম সম্পর্কের মোহ যেমন বাড়ে তেমনি পরস্পরের আসল রূপ ঢাকা পড়ে থাকে। বিয়ের পর শয়তান সরে যাওয়ায় তা সামনে এসে পড়ে। তখন এতদিন ধরে 'চেনা' মানুষটিকেই 'অচেনা' লাগে।
শান্তি সবাই খোঁজে। বেশিরভাগই খোঁজে শান্তির যিনি মালিক, তাঁকে অসন্তুষ্ট করে।বড়ই আফসোসের বিষয়!


- মোঃ মামুন চৌধুরী
অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট


৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×