
উত্তরা এলাকার সাথে আমার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক।
এখনো বাবা মা ভাই বোন মামা চাচা খালা খালুর প্রায় সবাই সেখানেই থাকে।
আমার ইমেইল এড্রেসে ডাক নাম 'নীল' এর সাথে 'উত্তরা' যোগ করে করা, [email protected]
'উত্তরা মডেল টাউন' এর শুরু থেকে সেখানে আমার ঘুরাঘুরি-থাকা-আড্ডা, আরও কতো কি। আমার নানার বাড়ি যখন হল তখন শুধু ১ নাম্বার সেক্টরে ২/৩ টা বাড়ী। আর ৩ নাম্বারে কিছু বাড়ি হচ্ছে। আমরা তখন নানার বাড়িতে বেড়াতে যেতাম। নানা আমাদের নিয়ে পাশের রেললাইনের ওপারে বাজারে নিয়ে গিয়ে চুল কাটিয়ে দিতেন। আমরা ছোটরা কেউ রাজি না থাকলেও নানার ওখানে গ্যালে এই কাজ কর্তেন। যাইহোক তখন মনে হয় বুড়ো মানুষের একটা অভ্যাসই ছিল ছোটদের চুলে বাটি ছাট নামের সেই ছাট দিয়ে দেয়া।
বলছিলাম উত্তরার কথা। বলতে গেলে চোখের সামনে সেই ছোট ছিমছাম কয়েকটা বাড়ি-ঘর-সেক্টর থেকে দিনে দিনে পুরো এলাকা নিয়ে বিশাল হয়ে উঠলো। এখন সেই উত্তরার নানাদিকে বিশাল বিস্তৃতি। অথচ একটা সময়ে জসীমউদ্দীনের মোড়টাই ছিল গাছগাছালিতে পূর্ণ একটা জায়গা। সাত নাম্বার সেক্টরের ওদিকে ছিল বিশাল বিশাল গাছ।
একবার বিজয় দিবসের আগে ৩ দিনব্যাপী একটা মেলা করেছিলাম আমরা।
লেকের পাড় ঘেঁষে দু দিকে সারি সারি স্টল। টিকেট কেটে সেখানে লোকজন ঢুকেছে। কদিন আগে যেখানে কাবাব ফ্যাক্টরি ছিল আর দুই সারি চকচকে বাড়ি ফ্ল্যাট। আমার ছেলেবেলার বন্ধু কবীর এর বাসা ছিল ৬ নম্বর সেক্টরে। সেখানে গেলে মনে হতো গ্রাম ঘেঁষা কোন জায়গা। ওদিকের অনেকে তখন সব কাজ সারতো পার্শ্বস্থ টঙ্গী হতে। এই ছিল উত্তরা।
রাজলক্ষ্মী কমপ্লেক্স নামের একটি মাত্র শপিং কমপ্লেক্স। আজমপুরে বাঁশের বেড়া দেয়া দু তিনটে দোকান। তার বহু পরে হলো আমির কমপ্লেক্স, বেলি কমপ্লেক্স। দীর্ঘদিন সেখানে রিকশা ভাড়া ২ টাকায় অনেক দূর যাওয়া যেতো।
ঢাকার এদিকে কাজ থাকলে বলতো 'ঢাকা যাব'।
আমরা যখন উত্তরার দিকে যেতাম এখন যেখানে নিকুঞ্জ সেদিকটা নদীর মতো দেখা যেতো। আরও ১৫ বছর আগেও সেখানে দ্বীপের মতন কয়েকটি বাড়ি ঘর দেখেছি। ডান দিকেও ছিল নদী। যেটা এখন খিলক্ষেত।
যাইহোক সেই উত্তরায় এখন বহু মানুষের বসতি। সেক্টরের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে এদিক দিয়ে মিরপুর এসেছে উত্তরা।
ঢাকার নানাস্থান হতেই উত্তরা আসা যাওয়া একটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। জ্যাম থাকলেতো কথাই নেই এমনিতেই সেখানে গেলে আর ফিরে এলে পথে চলে যায় ২/৪ ঘণ্টা।
মেট্রো রেল চালু হলে মিরপুরের ও উত্তরার সাথে পুরো ঢাকার মানুষের যোগাযোগটা কিছুটা হলেও সহনীয় হবে।
উত্তরার কথা শুরু করে অনেক বছর আগে চলে গেলাম। উত্তরা নিয়ে বহু স্মৃতি মনে হলো। আপাতত ট্রেন চালুর জন্য অপেক্ষা। ট্রেনে উত্তরা যাবো আসবো ভাবতেই সুখ হচ্ছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১০:৩১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


