somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সিডি

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ৮:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেক দিন থেকেই ভাবছি ভুলে যাওয়ার আগেই এই জোকটা লিখে ফেলবো। তাই সাহস করে লিখে ফেলা। তবে একটু বড়। একটু না বিশালএখানে মোট পাচটি গল্প আছে।অনেক দিন ধরেই আস্তে আস্তে একটার সাথে আরেকটা মিলে একটি গল্প। পড়লে ভালো লাগবে হয়তো। তাই দয়া করে পুরোটা না পড়ে মন্তব্য করবেন না আশা করি। পড়ে ভালো লাগতেও পারে নাও পারে। তবে আমার লেখাটা সংগ্রহে থাকলো। ভালো থাকবেন।


আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বিভিন্ন আড্ডায় কৌতুক ছিলো প্রান। কে কতট ধরনের কৌতুক করতে পারে, বলতে পারে তা নিয়ে রীতিমতো প্রতিযোগীতা। একই সাথে কার কৌতুক কতটা বুদ্ধিদীপ্ত সেটাও ছিলো গুরুত্বপুর্ন। প্রথম বর্ষে পড়ার সময় একটি জোক বলেছিলাম আমি। সবাই এটি খুব পছন্দ করেছিলো। জোকটা ছোট-মাত্র কয়েক লাইন, তবে সেটা বলার আগের কাহিনী বিরাট। আমরা নতুন কাউকে এটি শোনানোর আগে বলে নিতাম এভাবে,

১. এই জোকটা প্রথম লাইনেই কেউ বুঝে ফেললে সে খুবই ভালো জোকানুরাগী পুরো পাচ নম্বর, দ্বিতীয় লাইনে বুঝলে তার চার নম্বর, তৃতীয় লাইনে বুঝলে তিন ....
যদি সে শেষ লাইনেও জোকটা না বোঝে তাহলে সে জোকানুরাগীই না।....(যিনি পড়ছেন তিনি দয়া করে মাইন্ড করবেন না।)

এর পর জোকটা বলতাম আমি।

লাইন নম্বর এক: একজন লোককে বাস্টার্ড বলে গালি দেওয়া হলো।
লাইন নম্বর দুই: লোকটা মনে খুবই কষ্ট পেল।
লাইন নম্বর তিন: সে একটা আলপিন হাতে নিলো।
লাইন নম্বর চার: লোকটা আলপিন নিয়ে একটা কনডম ফ্যক্টরীতে গেল।
লাইন নম্বর পাঁচ: তারপর সে সমস্ত কনডম ফুটো করে দিলো।

আমাদের ব্যাপক হাসাহাসি ছিলো এই জোকটাকে কেন্দ্র করে।

ফুটো কনডম বললেই হেসে গড়িয়ে পড়ার অবস্থা হতো আমাদের।

২. ছয় ছয়-সাত মাস পর এই সিরিয়ালের দুই নম্বর জোকটা আমাদের হাতে এলো। মানে বন্ধুদের মাঝে একটি ঘটনা। যাদেরকে নিয়ে বলছি তারা এখন অনেক দুরে দুরে থাকে। তাদের আনুমতি না থাকায় নামগুলো বাদ দিলাম। শুধু কাহিনীটি বলছি। আমার এক বন্ধু (ধরি তার নাম : মাহমুদ)বাসা ছিলো ফার্মগেট এলাকায়। সে তার আরেক বন্ধুর (ধরি তার নাম : রাসেল) সাথে অপেক্ষা করছিলো আরেকজন বন্ধুর জন্য। সে বন্ধুটি পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতাল এলাকা থেকে আসছিলো।

এসেই প্রথম বলা শুরু করলো, দোস্ত, মিটফোর্ডে গেছিলাম, জুয়েলের ওইখানে, হালায় একটা সিডি দিলো। সিডি পেছনের পকেটে নিয়ে....

চাপাবাজির জায়গা পাও না। সিডি আমরা সামনের পকেটেই রাখতে পারি না। তুই বেটা পেছনের পকেটে নিয়ে আসছিস... রাসেল ছিলো একটু বোকা সোকা। সে থামায় নতুন আসা এই বন্ধুটিকে। মাহমুদ দ্রুত তাল বুঝে ফেলে এগুনোর জায়গা করে দেয় আগন্তুক বন্ধুকে। রাসেল তুই বুঝবি না..থাম।

আবার শুরু করে আগন্তুক বন্ধু...তো পকেটে সিডি নিয়া বাসে উঠছি, এখন বাস থেকে নাইম্যা দেখি সিডি নাই। হালায় পকেটমার বুঝবেআনে...

আগন্তুক বন্ধু আর মাহমুদের মাঝে হাসির হিড়িক পড়ে যায়, বোকার মতো চুপ করে থাকে রাসেল। মাহমুদের কাছ থেকে পড়ে শুনেছিলাম কাহিনীটি।

আমারা কনডম কে এর পর থেকে সিডি বলা শুরু করলাম।


৩. এর পর কেটে গেল আরো অনেক দিন। আমাদের জোকের আড্ডায় এই দুটো জোক থাকতোই। বছর খানেক আমরা কাটালাম এই দুটো জোক নিয়ে হাসাহাসি করে।

আমাদের এক বন্ধুর জন্মদিন। সে এখন অনেক বড় টিভি সাংবাদিক। তার বাসায় জন্মদিনের আসর। ভট্টাচার্য মহাশয় এবার এক প্রশ্ন সুধালেন এক বান্ধবীকে। দোস্ত তোকে একটা ধাঁধা জিজ্ঞেসা করি। দেখতো উত্তর দিতে পারিস কি না। ধাঁধাঁ টা আমাদের আরেক বন্ধুকে পচানোর জন্যই। সেও এখন বড় সাংবাদিক। তাই নাম বলছিনা। ধরি তার নাম হোসেন।
ভট্টাচার্য বলে চলেছেন, গোলাম আযম, এরশাদ এবং হোসেন তিন বন্ধু। ...ওই ওরা তিন বন্ধু হতে যাবে কেন হোসেন তো ওদের চাইতে অনেক ছোট..থামায় বান্ধবী...

আরে তুই থাম। এটা নিতান্তই একটা ধাঁধা..বলে চলে ভট্টাচার্য।...এদিকে জোতিষ্যি ভবিষ্যতবানী করেছিলেন, এই তিন বন্ধুর মধ্যে যার যার বাচ্চা হবে সে মারা যাবে। যথারীতি গোলাম আযমের বাচ্চা হলো গো.আযম মারা গেল। এর পর হোসেনের বাচ্চা হলো এরশাদ মারা গেল!

আরে আরে হোসেনের বাচ্চা হলে তো হোসেন মারা যাবে...এরশাদ কেন? প্রশ্ন বান্ধবীর...

তোর কাছে ওটাই তো প্রশ্ন, উত্তর দেয় ভট্টাচার্য। তুই এখন বল এরশাদ কেন মারা গেল?

বান্ধবী সবার কাছে শুধায়..এ্যাই বল না এরশাদ কেন মারা গেল...? কেউ উত্তর দেয় না, সবাই মিটি মিটি হাসে। কিন্তু বান্ধবীও নাছোড়বান্দা।

অবশেষে আমাদের লম্বা বন্ধুটি উত্তর বাতলে দেয় তাকে, আরে বোকা এরশাদের সিডি ফুটো ছিলো।...

এ্যাই..সিডি তো ফুটোই থাকে। এরশাদের সিডি ফুটো হলে সে মারা যাবে কেন?


৪. এরশাদের সিডি ফুটো ছিলো, এটাই তখন আমাদের হাসির বিষয়। আমরা সবাইকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে এই তিনটি ঘটনা বলি। নতুন পুরাতন সবাই হাসছেই।...

আরো প্রায় এক বছর পরের ঘটনা। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় একটা জরীপের কাজ করাবে। আমরা কয়েকজন গেলাম। দুরের কাজ। প্রত্যন্ত গ্রামে যেতে হবে। ওখানে গিয়ে স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে মানুষের মতামত জানতে হবে। খুব ভালো একটি কাজ, পেমেন্টও ভালো। ট্রেনিং নিয়ে আমরা চলে গেলাম। প্রশ্নগুলো বোঝার জন্য পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক ছোট খাট একটি ট্রেনিংও দেওয়া হয়েছিলা আমাদের। পরিবার পরিকল্কিপনার জন্য কি ধরনের ব্যাবস্থা নেওয়া যায় ইত্যাদি ইত্যাদি বিষয়।

বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জে জরীপের কাজ চলছে আমাদের। একদিন সেখানে খুব দুরের একটি দ্বীপে গেলাম আমরা। লম্বা একটি দ্বীপ। এ মাথা ও মাথা প্রায় আড়াই কিলোমিটার। সাধারন মানুষের মতামত জানার পাশাপাশি স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্যও একটি প্রশ্নপত্র ছিলো। আমরা নেমেছিলাম দ্বীপের এক মাথায়। জানলাম স্বাস্থ্য কর্মীর বাসা দ্বীপের ওমাথায়। যাওয়ার কোন বাহন নেই। দুই পাই ভরসা।

হাটতে শুরু করলাম অগ্যতা। গ্রামের মানুষ সবাই সবাইকে চেনে। আমি আগন্তুক। তাই তাদের আগ্রহ আমাকে ঘিরেই।

স্যার কোই থিকা আসছেন? কই যাবেন? কি জন্য আসছেন?...

হাটতে হাটতেই দেখলাম সাত আটজন মানুষ আমার সাথে হাটা আরম্ভ করেছে।

কি করবো বুঝতে না পেরে ভাবলাম, কথা বলাই ভালো, এদের কথার উত্তর দিতে তো সমস্যা নেই। উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি প্রশ্নও শুরু করলাম। চাচা...বাড়ি কই। বাড়িতে কে কে আছে? পোলাপান কতজন?

উত্তর আসে আপনাদের দোয়ায় ১১ জন, আরেকজন জানায় তার সাত জন, আরেকজন বলে নয় জন। ভাবি পরিবার পরিকল্পনা ট্রেইনিং কাজে লাগালো যাক এবার। শুরু হলো আমার হেদায়েত।

শুরু করি...চাচা মাশাআল্লাহ চাচা আল্লায় দিলে, আপনার তো অনেক পোলাপান হইছে, এখন তো আর না নিলেও পারেন।

ক্যামনে বন্ধ করুম? চাচার প্রশ্ন

ট্রেইনিং এ বলা হয়েছে কনডম মানুষ নিতে চায না। তাদের প্রথম পছন্দু ইনজেকশন। তাই বলি...চাচা পরিবারকে ইনজেকশন নেওয়াইতে পারেন।

ইনজেকশন নিলে পরিবারের মাতা গুলায়। তাছাড়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সব সময় ইনজেকশন পাওয়া যায় না। চাচার উত্তর। অল্পবয়েসী দু একজন আবার তার সাথে মাথা নাড়ে।

আমি বলি, তাহলে চাচা অন্য আরো তো ব্যবস্থা আছে...সেগুলান তো নিতে পারেন...

না না ওই গুলানেও সমস্যা আছে।

শেষে উপায় না পেয়ে কনডম টাই হাতড়ে পাই। চাচাকে বলি চাচা কনডম তো ব্যবহার করতে পারেন।...

দেখি চাচা রেগে মেগে বলছেন: বালের এক রাজা কনডম দেয়, সেটা ঢুকাইলে ফাইট্যা যায়।

সত্যি বলতে কি হাসি চাপতে সেদিন খুব কষ্ট হয়েছিলো আমার। কিন্তু ভাবগম্ভীর ভাবেই স্থান ত্যাগ করি।

ঢাকায় এসে, সে গল্পে খুব মজা পায় সবাই। বন্ধু মহলে ফাটা সিডি জনপ্রিয় হয়ে পড়ে।

৫. তো এই গল্প শোনাতে শোনাতে শাহাদাত ভাই এর সাথে ক্যাম্পাস থেকে বাসায় যাচ্ছি। বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত আসতে আসতে গল্প শেষ হয়। রাস্তা পার হতেই দেখা লিটন ভাই এর সাথে। তিনি খুবই বেজার মুখে আসছেন আমাদের সাথে।

কি লিটন ভাই কি হয়েছে। এমন মুখ করে রাখছেন কেন?

আর বলো না, কম্পিউটারে একটা সিডি ঢুকাইসিলাম। হালায় একটু পরে দেখি সিডি ফাইট্যা গেল!

হা হা হা করে হেসে উঠি আমি আর শাহাদাত ভাই। বোকা বোকা চেহারা নিয়ে তাকিয়ে থাকেন লিটন ভাই।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ৯:১৫
৮টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×