আজকের খেলা উপলক্ষে গতকাল ফয়সাল ভাই আমাকে আর রহিম ভাইকে তার বাসায় দাওয়াত দিয়েছিলেন। উদ্দেশ্য সবাই মিলে আড্ডা দিব, বাংলাদেশের খেলা ও জয় দেখব আর ভাবীর রান্না সুস্বাদু খাবার সাবাড় করব। যথাসময়ে হাজির হলাম। খেলার ৫/৬ ওভারের সময় সবাই একমত হলাম আজ বাংলাদেশ ৩০০ রান করবে। অত্যন্ত পুলকিত মনে একসাথে খাওয়া ও খেলা দেখা চালাতে লাগলাম। ভাবীর হাতের অসাধারণ বিরিয়ানি যখন শেষ করছি, তখনও ভাবতে পারিনি একটু পর আমাদেও জন্য কি অপেক্ষা করছে। আমাদের বিমূঢ় করে একএক করে ততক্ষণে ৪ উইকেট যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেল।
খেলার যখন এ হাল, ফয়সাল ভাই ও রহিম ভাই সন্দিহান আজ বোধহয় বাংলাদেশ ২৫০ রান ও করতে পারবে না। আমার তখনও দৃঢ়বিশ্বাস আমরা ৩০০ না হোক ২৬০-২৭০ রান অবশ্যই করব। তর্ক শুরু হল। তারা কোনমতেই আমার সাথে একমত নয় যে, আমরা ২৫০ পেরুতে পারব। ততক্ষণে আমিও নাছোড়বান্দা । বরং আরো একধাাপ এগিয়ে দৃঢ়কন্ঠে বল্লাম-বাংলাদেশ আজ অলআউট হবে না। তর্ক তখন তুমুল গতি পেয়েছে। কেউ তার মত থেকে একচুলও নড়বে না। তাই লাগাও বাজি, লাগল বাজি।
আমি বল্লাম- বাংলাদেশ আজ যদি অলআউট হয়, তবে আমি ফয়সাল ভাইকে একপ্যাকেট ব্যানসন এন্ড হেজেস দিব। আর যদি বাংলাদেশ অলআউট না হয়, তবে আমি ফয়সাল ভাই আমাকে একপ্যাকেট গোল্ডলিফ দিবে ।
রহিম ভাইকে বল্লাম- বাংলাদেশ যদি ২৬০ রানের বেশী করতে না পারে, তবে আমি তাকে ২০০ টাকা দিব। আর যদি বাংলাদেশ ২৬০ রানের বেশী করে, তবে তিনি আমাকে ২০০ টাকা দিবেন ।
উনারা সানন্দে আমার বাজি গ্রহণ করলেন।
আমার কেন জানি তখনও খুব বিশ্বাস ছিল, বাংলাদেশ খুব সহজেই ২৬০ বা তার বেশী করবে, হাতেও শেষপর্যন্ত ২/১ টি উইকেট থাকবে।
ওভারের সাথে সাথে মন খারাপ হতে থাকল। তবে অবশ্যই বাজিতে হারছি বলে নয়। কারণ বাজিতে যে জিততে চলেছে ফয়সাল ভাই ও রহিম ভাই-এর ও সেদিকে খেয়াল নেই। বরং তাদের চেহারা দেখছি ততক্ষণে আমার থেকেও বেশী অন্ধকার হয়ে আছে।
১ম ইনিংস্ খেলা শেষে, বিরতির সময় তারা তাদের দাবি উত্থাপন করছে না দেখে আমিই বললাম আমারতো দল ও টাকা দুটিই যাচ্ছে। যদিও আমি মনে মনে জয়ের আশা ধরে রাখতে চাচ্ছিলাম।
২য় ইনিংস্ েবাংলাদেশ যখন ওদের ৫ উইকেট ফেলে দিল, আমি আর ফয়সাল ভাই একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে গেলাম আমরা জিততে চলেছি। রহিম ভাই বলছে না এখনো তিনি নিশ্চিত হতে পারছেন না বরং তিনি ৫০/৫০ আশা দেখছেন। ফলাফল---আবার তর্ক--আবার বাজি।
ফয়সাল ভাই বলল-- লাগান বাজি ১০০ টাকা। রহিম ভাই রাজি হয়ে গেল। আমি ভাবলাম আমিও একটা চান্স্ নেই। আমি বললাম ৫০০ টাকার বাজি। রহিম ভাই তাতেও রাজি হয়ে গেল।
তারপরটা আপনাদের সবার নিশ্চয় জানা। মজার ব্যাপার হল- বাজিতে হেরেও রহিম ভাই এখন অনেক খুশি। শুধু তাই নয় বাংলাদেশের জয় উপলক্ষে উনি কাল আমাদের সবাইকে লাঞ্চ করাবেন।
(বাংলাদেশের আরো সাফল্য কামনা করছি।)