Your body, not your choice
ঢাকা ট্রিবিউনের এই নিউজটা চোখে পড়ায় পড়ে দেখলাম, লেখিকা কি বলতে চাচ্ছেন। পড়লাম আর বুঝলাম, যেভাবেই হোক না কেনো তিনি অবৈধ যৌনসম্পর্ককে কিছুটা হলেও উস্কে দিতে চাচ্ছেন। তার লেখায় তিনি একজন নারীর কথা বলেছেন যিনি ৭ সপ্তাহের গর্ভবতী, এবং ল্যাবএইডে গিয়েছিলেন গর্ভপাত করাতে। সেখানকার ডাক্তাররা কোন সহযোগিতা করেননি এবং অন্যকোথাও করানো যাবে সেটাও বলেননি।
এই লেখার মূল উপজীব্য ছিলো যে যেকোনো নারী চাইলেই গর্ভপাত করানোর অধিকার রাখেন, সেখানে আইন বা সমাজ কিছু বলতে বা করতে পারেনা। এটা একজন নারীর মৌলিক চাহিদার কাছাকাছি কিছু। আমি হয়তো সঠিকভাবে বুঝিনি, তারপরেও মনে হয়েছে যে ধর্ষণের কারণে হওয়া গর্ভবতী নারীর গর্ভপাত করানোর অধিকার দেয়ার।
আইন কি আছে সেইটা আমি সঠিক জানিনা, তাই সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আমি কিছু বলবোনা। আমি কথা বলবো দুইটি ধর্মের দৃষ্টিকোণ থেকে।
গর্ভবতী হওয়ার জন্য একটাই উপায়, তা হলো কোন একজন সক্ষম পুরুষের সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করা যেখানে পুরুষ বা নারী কেউই কন্ট্রাসেপশনের বিষয়ে চিন্তা করেনি। এখন কোন একটা কারণে নারী যদি গর্ভবতী হয়ে যায় তাহলে কি হবে সেটাও পুরুষ চিন্তা করছেন না। এমনকি নারীও সেই বিষয়ে তেমন একটা গুরুত্ব দিচ্ছেন না। যখন গর্ভবতী হয়েই গেলেন তখন গর্ভপাত করানোর কথা ভাবছেন মূলত নারীরাই। সাধারণত এবং যে লেখার প্রেক্ষিতে এই লেখা সেখানে বলা হয়েছে যে নারীটি অবিবাহিত, আসলেও তাই হয়। আবেগের বশবর্তী হয়ে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করার কারণেই বেশীরভাগ সময়ে এই সমস্যা হয়ে থাকে।
তাহলে সমস্যার সমাধান করার জন্য বেশী কিছু করা লাগেনা। শুধুমাত্র বিবাহবহির্ভূত যৌনসম্পর্ক স্থাপন না করলেই হয়। আমি একজন পুরুষ হয়ে কিভাবে বিয়ের আগে আমার নারীসঙ্গীর কাছে তার সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করার অনুরোধ করি। আবার শুধু পুরুষই যে অনুরোধ বা জোর করছেন তাও না, অনেক সময় মেয়েরাও এক্ষেত্রে আগ বাড়িয়ে পুরুষকে প্রলুব্ধ করছেন। এখন প্রশ্ন আসতে পারে, তাহলে যৌন সম্পর্ক করার অধিকারটাও কেড়ে নিতে বলছেন? জ্বী, বলছি। আজ আইন করে অধিকার দেয়া নেই তাতেই যা অবস্থা, আইন করে দিলে দিনে কতগুলো গর্ভপাত হবে, ভেবে নিন। কত মেয়ে জীবনে মা হওয়ার ক্ষমতা হারাবে, তার হিসাব থাকবেনা।
আসুন তাহলে এবার ধর্মের কথা বলি।
ইসলাম ধর্মে বলা হয়েছে নারীপুরুষের বিয়েবহির্ভূত যৌনসম্পর্ক হারাম, যাকে বলা হয়েছে "জেনা"। তাই গর্ভপাতের প্রশ্নই আসেনা। তাও যদি করতেই হয় সেটা গর্ভবতী হওয়ার ২১ সপ্তাহের মধ্যে করতে হবে, তবে সেটার জন্য অনেক বড় কোনো কারণ দেখাতে হবে, যেমনঃ ধর্ষণ, কিংবা ২/৩ এর পরে আর সন্তান পালনের ক্ষমতা না থাকা কিংবা দত্তক দিতে না পারা।
আর খ্রিষ্টান ধর্মের ব্যাপারটা আরো কঠিন। শুধুমাত্র ধর্ষণ ব্যতীত কোন কারণেই গর্ভবতী কোন নারী গর্ভপাত করানোর কথা চিন্তাও করতে পারবেন না। বিয়েবহির্ভূত যৌনসম্পর্ক খ্রিষ্টান ধর্মে আরো নিষিদ্ধ।
মানবিক দিক থেকে ভাবেন একবার, আপনার অল্প কিছু সময়ের সুখের জন্য একটা জীবনকে পৃথিবীতে আসতেই দিলেন না, কিন্তু নিজে ঠিকই উপভোগ করলেন। আজ আপনার বাবা-মা এমন করে উপভোগ করে আপনাকে ডাস্টবিনে ফেলে দিলে কেমন হতো, ভাবুন একবার। কনডম, পিল, ইঞ্জেকশন কত কিছুই তো আছে গর্ভবতী হওয়া ঠেকাতে। আর পাপ তো দিনে কম হয়না। বিয়েবহির্ভূত যৌনসম্পর্ক করে নিজেকে আরো পাপী না বানাই। একজনের দেখা দেখি আরেকজন করে। এইটাকে না ছড়াই। নিজে না করি, অন্যকেও করতে মানা করি।
সর্বশেষে একটা কথা বলি, আমার পরিচিত একজন ছেলে তার প্রেমিকার সাথে বিয়ের আগে নিয়মিত যৌনসম্পর্ক রাখতো। কিভাবে যেনো একবার তার প্রেমিকা গর্ভবতী হয়ে যায় এবং মাসখানেক পরে গর্ভপাত করায়। এর ৩ মাস পরে তারা বিয়ে করে ঠিকই, কিন্তু এখন ২ বছর হয়ে যাচ্ছে তার স্ত্রী এখন আর গর্ভবতী হতে পারছেনা। এই উপমহাদেশের এমন কোন চিকিৎসক বাকি নাই যে তারা যায়নাই, কিন্তু আর কিছুই হচ্ছেনা।
প্রতিটি শিশুই নিষ্পাপ। একটি শিশু সৃষ্টিকর্তার নেয়ামত। হেলায় ফেলায় নষ্ট করার বুদ্ধি দেয়া বুদ্ধিমানের কাজ না।
ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:০৮