চারিদেকে ভীতিকর পরিস্থিতী। মনে হচ্ছে সামনে কোথাও ভয়াবহ কিছু ঘটছে। এম্বুল্যান্সের ভেতরে রোগী কিন্তু সেও সাহস করে সাইরেন বাজাচ্ছে না। আমি ড্রাইভারের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, রোগীর কি হয়েছে? সে আমার গলায় ঝোলানো আইডি কার্ডের দিকে তাকালো কিন্তু কিছুই বললো না। ড্রাইভারের পাশে বসা এক যুবক, যার চোখে-মুখে স্পষ্ট রাগ-ক্ষোভ। সে বলল, প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর যাবে তাই এদেশের মানুষকে সন্তানও জন্ম দিতে হবে দেরী করে। সেটাও তিনি নিয়ন্ত্রণ করছেন।
এই পরিস্থিতি শুধু আজ না। প্রায় প্রতিদিনই পরতে হয় আমাদের। প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর যখন যায় তখন তার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা বাহিনী পুরো এলাকাকে ভীতিকর করে তোলে। মনে হয় যুদ্ধ শুরু হয়েছে।
আজ সকালে আড়ং এর মোড়ে এসেই দেখি ডাইভারশন চলছে । সঙ্গসদের সামনের রাস্তা পুরা বন্ধ । খোজ নিয়ে জানলাম প্রধানমন্ত্রী মগবাজারের ফ্লাইওভার উদ্বোধন করছেন তাই এই অবস্থা। জিয়া উদ্যাণের মোড়ের দিকে আমি রঙ সাইড দিয়ে সাইকেল নিয়ে আগাচ্ছি এমন সময় দেখি অন্য একটা সাইকেল তীরের গতিতে এগিয়ে আমাকে ক্রস করার সময় চিল্লাইয়া বলল, ঐদিকে যাইয়েন না। আমি তবুও এগিয়ে গিয়ে একটা গাছের ছায়াতে দাঁড়িয়ে দেখতে থাকলাম কি করে পুলিশ। এমন সময় রাস্তা পাড় হওয়ার সময় এক লোককে মোটামুটি দৌড়ানি দিলো পুলিশ। লোকটি দৌড়ানি খেয়ে রোডের এপাড়ে এসে হাপাতে হাপাতে বিদ্রুপের হাসি হেসে৪ চিৎকার করে বললো, নির্বাচনের আগে বাপ আর নির্বাচন শেষ হইয়া গেলে নিজেই বাপ হইয়া যায়।
যাই হোক, এমন ভীতিকর পরিস্থিতী যিনিই ক্ষমতায় এসেছেন তিনি করেছেন বলার নেই কিছু। আমরা জনগণ শুধু এভাবে ভয়ের মধ্যেই থাকবো। কে যেন বলেছিলেন যে, প্রধানম্নত্রীর কোন দোষ নেই তার নিরাপত্তরক্ষীরা যা চায় তাই নাকি তার করতে হয়। তার মানে দেশ কি নিরাপত্তা কর্মীরা চালায় তাহলে এই প্রধানমন্ত্রীর কি দরকার আমাদের!!! আর যদি তা না হয় তাহলে এই জনদরদী প্রধানমন্ত্রীরা বললেই তো পারেন যে, আমিও জনগণের সাথে জ্যাম ঠেলে অফিসে যাবো অথবা এম্বুল্যান্স, ঔষধের গাড়ি, লাশের গাড়ি আটকানো যাবে না। কোথায় কি !! সব কিছুই নির্ভর করে ইচ্ছের উপরে। সেই ইচ্ছেটাই তাদের নেই।
এবার একটু টপিকের বাইরে কথা বলি। আজ অফিসের তাগিদে একখানা ব্যাংক একাউন্ট খুলতে গিয়েছিলাম। তো আমার ন্যাশনাল আইডি কার্ড নাই। ছিলো না পরে ঝামেলায় পরে গতবার ভোটার হইছে। কিন্তু কার্ড এখনও হাতে আসেনি। তবুও তাদের অনেক কাগজ-পত্র দিয়েও খুশি করতে পারলাম না। তাদের কার্ডই লাগবে। আমি যখন জিজ্ঞেস করলাম, এত কিছু করেন তবুও একাউন্ট হ্যাক হয় ক্যামনে? ওমনি মিন মিন শুরু করে দিলো। এদেশে আসলে কোন সিস্টেমই নাই। সবাই খালি পাকনামি করে আসল কাজে কেউ নাই। যাই হোক রাতে ঘুমাইবার আগে অন্তত মুতিয়া ঘুমাইয়েন।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৯