সবার ধারণা বাঙালি শুধু ধর্মের ব্যাপারে গোড়া, উগ্রবাদী আর কট্টর। মানে ধর্মে যা বলা আছে বা বলা হইছে তার বাইরে এক লাইনও নিজের মাথা থেকে চিন্তা করতে পারে না। কিন্তু এটা ভুল ধারণা! বাঙালি সব ক্ষেত্রেই গোড়া।
ছোট একটা উদাহরণ দেই। ধরুন একজন ফেসবুকে দেখলো, দেশের কোন এক জায়গায় এক গরুর নাকি দুই মাথা। ব্যাস তাকে আর কোনভাবেই আপনি মানাতে পারবেন না এটা ভুল। সে বলেই যাবে, আরে ভাই ফেসবুকে দেখছি তো এটা। মনে হবে ফেসবুকে এদের পবিত্র ধর্মীয় গ্রন্থ , যেখানে ভুল থাকতেই পারে না।
এবার আসি আরেকটা বিষয়ে। এই ধরেন, কেউ যদি একবার বলে 'অমুক' বিশেষ পত্রিকায় দেখছি এই নিউজটা হইছে। আপনি আর বোঝাতেই পারবেন না, যে তারাও ভুল করতে পারে। কোনভাবেই পারবেন না।
সাধারণ মানুষ তো মানুষ। আমি অনেক সাংবাদিকই দেখছি নিজের হাউজ বাদ দিয়ে, সারাদিন অন্য "অমুক" মিডিয়াতে কি নিউজ দিছে সেটাই ফলো করতে থাকে। যেন তাকে বেতনই দেয়া হয়, অমুক হাউজের লেখা ফলো করার জন্য। আসলে এরা হয়তো টুইটারে এক্টিভ না বলে , সেই ফ্রাস্টেশন এভাবে ফলো করে কমায় আর কি।
একটা মজার বিষয় বলি, দেশের বেশিরভাগ মানুষ যেসকল সংবাদ মাধ্যমকে মহাপবিত্র সংবাদ মাধ্যম মনে করে, তেমনি এক সংবাদ মাধ্যমে একবার দেখছিলাম রাষ্ট্রপতির নামই ভুল দিয়া রাখছিল। আরও নানান ভুল করে। কিন্তু মহাপবিত্র পত্রিকা বলে কেউ কিছু বলেনি, ভুলটাই পবিত্র ওহী মনে করে চুপচাপ মেনে নিছে। এখনও সেটাই ফলো করে যায়। আসলে তারা কি করবে, চিন্তা বা নতুন কিছু করার ক্ষমতা তো তাদের নেই।
এই মানুষগুলোর ধারণা , ফলো করলেই ভাল কিছু করা যায়। অথচ চিন্তা করতে পারে না। তারা যদি চিন্তা করতে পারতো তাহলে বুঝতো, একটা মানুষ যখন একটা বিষয়কে ফলো করতে শুরু করে তখন তার চিন্তা-ভাবনা সীমাবদ্ধ হয়ে যায়। সে নতুন কিছু তৈরি করার ক্ষমতা হারায়। তার চিন্তা তার ফলো করা বিষয় বা ব্যক্তির সমানই হয়ে যায়। সে কখনও তার থেকে বেশি যাওয়ার কথা ভাবতেই পারে না। ফলে সে হয়ে যায় একটা পরগাছা টাইপ। যার কাজের গুনাগুণের একটা অংশে তার কোন কৃতিত্ব থাকে না।
যাইহোক এসব বলে কোন লাভই নেই। কারণ এরা তো সবাই কোথাও না কোথাও সীমাবদ্ধ হয়েই আছে। এদের বলে তো আর সীমার বাইরে আনতে পারবো না। আর সীমার বাইরে না আসলে এরা নতুন কিছু ভাবতেও পারবে না। থাকুক সীমার মধ্যেই। তবে সীমার ভেতর টানতে চাইলে, একটু দূরে থাকুন যদি সত্যিই নতুন কিছু করতে চান।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৫২