somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রেমির জন্য ভালোবাসা [ছোট গল্প]

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ভ্রু কুঁচকে বিছানার দিকে তাকিয়ে আছে শায়না।
বিছানায় একগাদা নতুন কাপড়। ছোট এক বয়সী বাচ্চাদের ফ্রক, লাল নীল সবুজ হেনতেন কোন রঙই বাদ পড়ে নাই!
কাপড়গুলোর পাশে ধবধবে সাদা দাঁত বের করে বসে আছে শায়নার স্বামী নিহান।

‘এসব কি!?’ ধমকে উঠলো শায়না।
নিজের দন্তগুলো আরো বিকশিত করে নিহান বলল, ‘আমাদের মেয়েটার জন্য কাপড় কিনলাম আরকি!’

মুখ হা করে শায়না বলল, ‘আমাদের মেয়ের জন্য মানে! আর এত কাপড় আনার মানে কি? যে মেয়ে এখনো পয়দাই হয় নাই তার জন্য একদম ঘর ভরিয়ে কাপড় কেনার মানে কি!!!’
নিহান একটু কাচুমুচু মুখ করে বলে, ‘তো! আমি তো জানি আমাদের মেয়েই হবে! আর আজ এক বন্ধুর সাথে একটু মার্কেটে গিয়েছিলাম। বেচারা বলে যে আমার নাকি বাচ্চাদের কাপড়ের ব্যাপারে ভালো আইডিয়া আছে! তার এক বছরের বাচ্চাটার কাপড় কেনার ব্যাপারে আমি যেন একটু হেল্প করি। তাই একটু হেল্প করতে যাওয়া আরকি! ওকে কিনে দিচ্ছিলাম, তখন ভাবলাম আমিও কিনে নেই কিছু!’
‘অহ বাহ বা! এই তোমার কিছু? বন্ধুর মেয়ের জন্য কিনতে গিয়ে নিজেই বস্তার পর বস্তা কাপড় কিনে নিয়ে এসেছো,’ নিহানের উত্তর শুনে আরো খেপে যায় শায়না। ‘আর এখন যদি সামনে মেয়ে না হয়ে ছেলে হয় তখন এই বস্তা ভরা মেয়েদের কাপড় নিয়ে আমি কি করব? তোমার ছেলেকে পরাব?’

শায়নার অগ্নিমূর্তি দেখেও নিহানকে বিন্দুমাত্র বিচলিত মনে হয় না। সে মুখটাকে আরো হাসি হাসি করে বলে, ‘আরেহ কি যে বল না তুমি! ছেলে হবে কেন? আমি হান্ড্রেড পার্সেন্ট শিওর যে আমাদের মেয়ে হবে! এটা আমি স্বপ্নে দেখেছি! একবার না তিন তিনবার! আর মেয়ের সাথে তো আমার কথাও হয়! দেখো না, তোমার পেটে কান লাগিয়ে আমি যখন আমার মেয়েকে ডাকি তখন কি সুন্দর করে নড়েচড়ে সে আমার কথার জবাব দেয়! ছেলে হলে কি সে আমার আম্মাজান ডাক শুনে এভাবে জবাব দিত বলো!’ হিহিহি করে হেসে উঠে নিহান।

নিহানের হাসি শুনে যেন তেলেবেগুনে খেপে যায় শায়না, ‘এই এই! এইভাবে হাসবা না বলে দিচ্ছি! আর আর তুমি কি পীর ফকির যে পেটে কান লাগিয়ে বুঝে ফেলছো যে ছেলে না মেয়ে! ডাক্তাররা যখন বলতে চাইছিল পরীক্ষার পর ছেলে না মেয়ে তখন তো না করে দিছ যে যেন না জানায় কাউকে! পন্ডিতের পণ্ডিত! আমি পেট ফোলা নিয়ে দাঁড়াতে পারি না আর উনার কি পীর ফকিরি তামাশা! বদের বদ শয়তান!’ চোখমুখ কুঁচকে বলে শায়না। পড়ন্ত বিকেলের আলো জানালা দিয়ে তার মুখে পড়ায় তাকে আরো সুন্দর দেখায় নিহানের কাছে।

এট ঠিক যে আল্ট্রাসনো পরীক্ষার পর ডাক্তাররা যখন ওদেরকে জানাতে চেয়েছিল যে তাদের ছেলে হবে না মেয়ে হবে তখন রিহানই না করে দিয়েছিল। বলেছিল এটা যেন কোন ভাবেই তাদের কাউকে ডাক্তাররা না জানায়! শায়না অবাক হয়নি নিহানের এই পাগলামিতে। কারণ বিয়ের আগে থেকেই নিহান তাকে এটা বলে রেখেছিল। সে আগ থেকে জানতে চায় না তার মেয়ে হবে না ছেলে হবে। কারণ নিজের বাচ্চাকে কোলে নিয়ে সেই আনন্দটুকু পেতে চায় নিহান, সেই আবেগটুকু অনুভব করতে চায়! আর সে তো জানেই যে তার মেয়ে হবে! তাই আগ থেকে জেনে কি হবে! শায়না বিয়ের আগে নিহানের এইসব কথাবার্তাকে মজা হিসেবেই নিয়েছিল কিন্তু বিয়ের পর রিহানের কথাবার্তা আর সেই সাথে ওর প্রেগন্যান্ট হওয়ার পর থেকে তার এইসব পাগলামি দেখে এখন সে বুঝতে পেরেছে যে আগ থেকে নিহানের নিজের মেয়ে নিয়ে এই ফ্যান্টাসী কোন মজা ছিল না। অন্য সবাই যখন প্রথম সন্তান হিসেবে ছেলেই চায় তখন নিহানের প্রথমদিককার এই পাগলামি দেখে সেটা সে সত্যিই সাময়িক হিসেবে নিয়েছিল কিন্তু এখন তার সিরিয়াসনেস দেখে সেও মাঝে মাঝে অবাক হয়ে যায়। অবশ্য নিহানের এইসব পাগলামিই শায়নাকে তার প্রতি আকৃষ্ট করেছিল। ওর চোখে যা তাকে অন্য ছেলেদের থেকে আলাদা করেছিল। যার কারণেই চলতে চলতে একটা সময় শায়না নিহানের প্রেমে পড়ে যায়! মানুষটাকে সে এতো ভালোবাসে তার এই পাগলামির জন্যই!

শায়নার চেঁচামেচিতে তার শ্বাশুড়ি রাহেলা বেগমও উঠে আসেন কোরআন তেলাওয়াত থেকে, ‘কি হয়েছে বউমা! পাগল্টা আবার নতুন কি শুরু করল?’
ছেলের কর্মকান্ড সম্পর্কে রাহেলা বেগম ভালো মতই ওয়াকিবহাল আছেন। তিনি জানেন তার এই বড় ছেলেটা একটু পাগলাটে! বউমার পাশে এসে দাড়ালেন তিনি। ফ্রকগুলো নাড়তে নাড়তে বললেন, ‘বাহ এই ফ্রকগুলা তো বেশ সুন্দর! তা কত করে নিল রে?’
‘এই তো বেশি না। একসাথে এক দোকান থেকে কেনায় কিছু ছাড় পেয়ে গেছি। আসলে ঐ দোকানটায় শুধু বাচ্চা মেয়েদের জন্য পোশাক ছিল। আর যা সুন্দর ছিল না মা, তোমাকে কি বলব! ইচ্ছে হচ্ছিল আমার মেয়ের জন্য পুরো দোকানটাই কিনে ফেলি!’ মায়ের কথায় উৎসাহ পেয়ে দাঁত গুলো আরো বের করে হাসতে লাগল নিহান। খুশিতে তার চোখগুলো চকচক করছিল!

শ্বাশুড়ির হাত ধরল শায়না, ‘মা আপনিও! আপনিও ওরে লাই দিচ্ছেন! ছেলে হবে না মেয়ে হবে তার কোন খবর নাই আর এতটা টাকা নষ্ট করে আপনার ছেলে এতগুলা কাপড় কিনে নিয়ে এসেছে! এখন যদি ছেলে হয় তখন কি আমার ছেলেকে ফ্রক পড়াব বলেন!’
‘আরেহ ধুর! ছেলে হবে কেনো! তোমাকে না বলছি এত ছেলে ছেলে করবে নাতো! আমি জানি আমাদের মেয়েই হবে!’ নিহান বলে উঠে।
‘এহ বলছে তোমারে! আমি পেটে ধরছি! আমি জানি ছেলে হবে!’ কোমরে হাত রেখে যুদ্ধের ভঙ্গিতে বলে শায়না।
‘না মেয়েই হবে!’ নিহানও ছাড় দিতে রাজী না।

ছেলে ও ছেলের বউ এর মাঝে রেফারির ভুমিকা নেন রাহেলা বেগম, ‘আরে তোরা থামবি! একটু শান্তিমত আমার নাতনীর জন্য কাপড় দেখতেও দিবে না কেউ!’ জেতে যাওয়ায় নিহান শায়নার দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসে আর শায়না শ্বাশুড়ির পাশে দাঁড়িয়ে তার দিকে চোখ ছোট ছোট করে তাকায় যদিও সে সত্যিকার অর্থে রেগে নেই। তার মনের মধ্যে অদ্ভুত এক ভালোলাগা খেলা করে। নিজের পেটের মধ্যে হাত দিয়ে সে তার অনাগত সন্তানকে অনুভব করে।

তাদের নিঃশব্দতার মাঝে রাহেলা বেগম পুরনো দিনে ফিরে যান। নিহানের বাবাও এরকম পাগল ছিলেন। তারও খুব শখ ছিল তাদের যেন একটি মেয়ে হয়। রাহেলা বেগম যখন প্রথম প্রেগন্যান্ট হোন নিহানের বাবার খুশি আর দেখে কে! রাতের বেলা পাশে শুয়ে হঠাৎ করেই বলেছিলেন তার খুবই ইচ্ছা তার প্রথম সন্তান যেন মেয়েই হয়! রাহেলা বেগম খুবই অবাক হয়েছিলেন। কারণ তার শ্বশুর শ্বাশুড়ির একটাই চাওয়া ছিল তাদের জন্য আল্লাহ একটা নাতি দেন। তাই বাচ্চা হবার পরে যখন তার বাবা নিহানকে প্রথম কোলে নেন তখন উনার চেহারায় বিষাদের ছায়াটা যেন স্পষ্ট দেখতে পেয়েছিলেন রাহেলা বেগম। মুখে শুধু বলেছিলেন, ‘অসুবিধা নাই। প্রথমজন ছেলে হয়েছে, পরেরবার ইনশা আল্লাহ আমার কোলে আল্লাহ অবশ্যই মেয়েই পাঠাবেন!’ পরেরবার যখন ছোট ছেলের জন্ম হয় তখন একদিন পর তিনি ছেলেকে দেখতে আসেন। মুখে কিছু না বললেও উনি যে মনে দুঃখ পেয়েছিলেন তা রাহেলা বেগম বুঝতে পেরেছিলেন। তার ছেলের পাগলামি দেখে উনার কথা আজ ভীষণ মনে পড়ে। আফসুস, চার বছর আগে উনাকে হারানোয় তিনি কোন ছেলেকেই সংসারী দেখে যেতে পারলেন না। লালনীল ফ্রক হাতে ধরে রাহেলা বেগমের চোখ ঝাপসা হয়ে আসে।

রাতে ঘুমানোর সময় প্রতিদিনকার মত আজো শায়নার পেটে কান লাগিয়ে বসে আছে নিহান। রোজকার মত সে তার মেয়ের খোঁজখবর নিচ্ছে, ‘কি খবর আমার রেমি মামণি? আজ সারাদিন কি করলা? ঠিকঠাক মত আছো তো? মাকে বেশি কষ্ট দেও নাই তো আজ? অহ আচ্ছা, বাবা কেমন আছি। এইতো লক্ষী সোনা। আর বেশি দেরি নেই রেমি সোনা! খুব শীঘ্রই বাবার সাথে তোমার দেখা হচ্ছে!’

হিহিহি করে হেসে উঠে শায়না, ‘এই পাগল! এমন ভাবে কথা বলছ যেন ও তোমার কথা বুঝতে পারছে মনে হয়!’
মাথা তুলে নিহান, ‘হুম বুঝতে পারে তো! আমি ওর নড়াচড়া বুঝি। কার মেয়ে বুঝতে হবে না!’ শায়নাকে জড়িয়ে ধরে সে।

‘ইশ বলছে। আর এই যে রেমি নাম আমার পছন্দ না। মেয়ে হোক ছেলে হোক নাম কিন্তু আমি রাখব বলে দিলাম’ নিহানকে পালটা জড়িয়ে ধরে বলে শায়না।
‘হাহ! বললেই হল নাকি। আমার মেয়ের নাম এটাই থাকবে। রেমি! বাকি সব গোল্লায় যাক! আমার মেয়েকে আমি রেমি বলেই ডাকব!’ কপট রাগের ভঙ্গিতে বলে নিহান।

নিহানের মোটা নাকটা টিপে ধরে বলে শায়না, ‘আচ্ছা গো রেমির বাপ। আপনার কথাই থাক। এখন মেয়ে নিয়ে চিন্তা না করে বউকে একটু আদর করে ঘুম পাড়িয়ে দেওয়া যাবে?’
‘অফকোর্স মাই কুইন!’ মৃদু হেসে শায়নাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে তার কপালে চুমু খায় নিহান।

****
খবরটা পেয়েই পড়িমরি করে অফিস থেকে বের হয়েছিল নিহান। শায়নায় ব্যাথা উঠেছে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে এটুকু শোনাই যথেষ্ট ছিল ছোট ভাইয়ের কন্ঠে। ফোন রেখে আর দেরি করেনি। ভাগ্যিস বাসায় ঐ সময় তার শ্যালকও ছিল। না হলে যে কি হত! নিজের কোম্পানি ঠিকঠাক মত সবে দাড়াচ্ছে, তাই বেশির ভাগ সময় বাসায় সন্ধ্যার পরই ঢুকে নিহান। যদিও ডাক্তাররা শায়নার ডেট দিয়েছিলেন এক সপ্তাহ পর কিন্তু এসব ব্যাপারে আগ থেকে কি কিছু বলা যায়। অপারেশন থিয়াটারে ঢুকানোর আগ পর্যন্ত শায়নার হাত ধরে ছিল নিহান। ডাক্তাররা যদিও অভয় দিয়েছিলেন চিন্তার কিছু নেই তবুও সে বার বার বলে দিচ্ছিল শায়নার যেন কিছু না হয়! অপারেশন থিয়েটারের বাইরে দাঁড়িয়ে থেকে সে আরো নার্ভাস বোধ করছিল তাই ছোট ভাই মা শ্বশুর শ্বাশুড়িকে রেখে শ্যালককে নিয়ে ক্যান্টিনে চলে আসলো নিহান।

এক ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে। এত সময় তো লাগার কথা না। টেনশনে এই নিয়ে চার-ছয় কাপ চা খাওয়া হয়ে গেছে তার। নিহানের টেনশন দেখে তার শ্যালক তাকে বার বার আশ্বস্ত করছিল। কিন্তু প্রতি সেকেন্ডে সে আরো বেশি নার্ভাস বোধ করছিল। একটুপর তার ছোট ভাইকে হন্তদন্ত হয়ে আসতে দেখা গেল, ‘ভাই ভাবীকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করে আনা হয়েছে। উনি আর বাচ্চা দুজনই সুস্থ আছেন। তোমাকে সবাই ডাকছেন’।

পারলে যেন উড়ে চলে যায় নিহান। ঐ সময়ের মনের অবস্থা তার কি ছিল তা সে বলতে পারবে না! কেবিনের মুখেই ডাক্তারের সাথে তার দেখা, ‘কনগ্রেচুলেশন মিস্টার নিহান। আপনার স্ত্রী সুস্থ আছেন, একটু প্রবলেম হয়েছিল অপারেশন এর সময় তবে সেটি কোন চিন্তার বিষয় না। আপনি একটি ফুটফুটে ছেলের বাবা হয়েছেন। মা ও ছেলে দুজনই সুস্থ আছেন। যান ভেতরে যান’ মুচকি হেসে ডাক্তার তার পিঠ চাপড়ে দেন।

শায়না সুস্থ আছে শুনে তার বুক থেকে যেন একটা পাহাড় নেমে যায়। কিন্তু ছেলের কথা শুনে নিহান থমকে যায়। হৃদয়ের ভেতর কি যেন ভাঙার মত অনুভব হয়! কেবিনের ভেতরে ঢুকবে কি ঢুকবে না দ্বিধায় ভুগে সে। পেছন থেকে শ্যালক তাকে ঠেলা দেয়, ‘কি ব্যাপার দুলাভাই ভেতরে যাবেন না? চলেন চলেন! ভাগ্নেকে দেখার আমার তর সইছে না!’

আস্তে আস্তে ভেতরে ঢুকে নিহান। প্রথমেই চোখে পড়ে ওর মাকে, ওর শ্বশুর এক দিকে দাঁড়িয়ে, এরপর শ্বাশুড়ির কোলে বাচ্চাটাকে চোখে পড়ে। উদ্বিগ্ন চোখে ও শায়নার দিকে তাকায়। মুখটা একটু মলিন কিন্তু মুখের হাসি দেখে জানে পানি আসে তার! পাশে বসে তার হাতটা ধরে সে।

‘কি নিজের ছেলেকে কোলে নিবে না?’ মুচকি হেসে বলে শায়না।
বাচ্চার দিকে তাকায় নিহান। কি সুন্দর ফুটফুটে চেহারা! নিহানের বুকটা মোচড় দিয়ে উঠে। বাবা হওয়ার অনুভূতি কি এই রকম!
ওর শ্বাশুড়ি বাচ্চাকে ওর কোলে তুলে দেন। অনভ্যস্ত হাতে ছেলেকে কোলে নেয় সে। একটা সুন্দর কাঁথায় জড়ানো একদম পুতুলের মত লাগছে! এত হালকা! তার নিজেরই একটা অংশ তার কোলে। রিহান অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে!

ওর মা এসে ওর মাথায় হাত রাখেন, ‘কি মন খারাপ, মেয়ে হয় নি বলে?’
নিহান ভাবলেশহীন ভাবে তাকায় একথা শুনে। ‘তা বাবা ছেলের নাম কি রাখবা কিছু ঠিক করছিলা আগে?’ ওর শশুর মুচকি মুচকি হেসে জিজ্ঞেস করেন।
নিহান মুখ তুলে শায়নার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘ছেলের মা যেটা রাখবেন সেটাই!’

নিজের হাসি আর ধরে রাখতে পারে না শায়না। হিহিহি করে হেসে ফেলে সে, বলে ‘ছেলে হলে তো আমিই রাখতাম রেমির বাপ!’
থতমত খেয়ে যায় নিহান, ‘মানে! ডাক্তার যে বললেন ছেলে হয়েছে!’

ওর মা ওর চুলগুলো নেড়ে দিয়ে বললেন, ‘ বউমাই শিখিয়ে দিয়েছিল ডাক্তারকে, তোকে সারপ্রাইজ দিবে বলে। বোকা!’
বাকি সবাই হো হো করে হেসে উঠল। নিহান একবার সবার দিকে তাকায় একবার শায়নার দিকে আর একবার কোলের বাচ্চার দিকে। সবকিছু তার স্বপ্নের মত মনে হয়! মনে হয় ওরা মজা করছে না তো! ‘আহ! ছেলে হয়েছে শুনে ভাইয়ার চেহারাটা দেখার মত হয়েছিল!’ ওর ছোট ভাই বলে উঠে।

গভীর মমতায় কোলের মেয়ের দিকে তাকায় নিহান। তার একটা আঙুল ধরে আছে ঐ ছোট্ট হাতটা। কি ছোট কি নরম! তারই মেয়ে! তারই রেমি সোনা! চোখের কোন দিয়ে পানির একটা ধারা নেমে যায় নিহানের যা সে লুকানোর চেষ্টা করে না।

শায়না তাকিয়ে ছিল তার ভালোবাসার মানুষটির দিকে। তার রেমির বাপের দিকে। তার দিকে তাকায় নিহান। কন্ঠে গভীর ভালোবাসা নিয়ে বলে শায়না, ‘কি রেমির বাপ? এখন খুশি তো!’

নিশাত শাহরিয়ার,
রাত ১০.১২ ,সিলেট
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৬।
একই সাথে আমার ব্লগ নিশনামায় প্রকাশিত।

সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:০৭
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

টের পেলে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৭

টের পেলে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

টের পেলে গুটিয়ে যায় লজ্জাবতী/ পরিপূর্ণ যৌবনে যুবতীর নিখুঁত অনুভূতি। আমার চাওয়া, ইচ্ছে, স্বপ্ন! আমার পছন্দ বুঝদার, সুন্দর হৃদয়ের রূপ! সৌন্দর্য সুন্দর যা চিরন্তন সত্য। কিন্তু সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের চার খলিফার ধারাবাহিকতা কে নির্ধারণ করেছেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৭




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব)... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×