"সক্ষম কিন্তু অক্ষম, অক্ষম কিন্তু মারাত্মক।"
কে জানেন?
হোটেলের বয় আর চাওয়ালারা।
পৃথিবীতে এই দুই ধরনের লোকেরা সবচেয়ে বেশী বকা খায়। কারনে অকারনে মাইর খায়। কিন্তু এরা কখনো কাউকে কিছুই বলতে পারেনা। নীরবে অপমান সয়ে যায়। আবার কেউ কেউ নীরবে ঘৃন্য প্রতিশোধ নিয়ে নেয়।
পানি দিতে দেরী হয়েছে, খাবার আসতে সময় লেগেছে, চায়ে চিনি কম দিয়েছে ব্যাস গালের মধ্যে ঠাস করে চড় মেরে বসেন গ্রাহকেরা। অথচ এইসব ক্ষেত্রে অনেক সময় বয়দের দোষ থাকেনা। ফিল্টারে যদি পানি না থাকে, ভিতর থেকে খাবার দিতে দেরী করে, বাবুর্চি যদি চায়ে চিনি বা তরকারীতে লবন ঠিকমত না দেয়, তাহলে তার কি করার আছে! তার কাজই হচ্ছে সাপ্লাই দেওয়া। টেবিল পরিস্কার করে অর্ডার অনুযায়ী খাবার পরিবেশন করা। অযথা এরা মার খায় বেশী। মাঝখানে বেচে যায় বাবুর্চী আর ম্যানেজার।
হোটেলের শাটার ফেলে দিয়ে সব বয়রা যদি গ্রাহককে পিটিয়ে আধামরা করে ফেলে, তাহলে কিছু করার আছে? কক্ষনোনা । পরে হয়তো অনেক কিছুই করতে পারবে। পুলিশ বা মহল্লার পোলাপানদের দিয়ে মাইর খাওয়াতে পারবে। কিন্তু তার আগেতো মার খেতে হবে গ্রাহককে। প্রেস্টিজ কিছুটা সেখানেই অর্ধেক পাংচার।
মজার কথা হচ্ছে, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও বয়রা ভুলেও এইসব কাজ করতে যায়না। তার কারন মালিকদের প্রতিবন্ধকতা। একটু গ্যাঞ্জাম হলেই হোটেলে বদনাম। আর হোটেলের বদনাম মানে গ্রাহক শুন্য মানে ব্যাবসা লোকসান। তাই বেশীর ভাগ মালিকেরা এইসব ঝামেলায় যেতে যায়না। স্টাফদের কঠোর ভাবে বারন করে দেন। অনিচ্ছা সত্ত্বেও মেনে নেন স্টাফরা। কারন প্রতিবাদ করলে অভিযোগ যাবে মালিকের কাছে। ফলাফল চাকুরী নট।
এই হচ্ছে সক্ষম কিন্তু অক্ষমদের কথা।
অক্ষম কিন্তু মারাত্মক ভয়াবহ এর কথা কি?
এবার বলি...।
জাতি হিসাবে মানুষ প্রতিশোধ পরায়ন। বিশেষ করে অশিক্ষিত যারা। এরা ভাল-মন্দ কোন কিছু ভাবেনা। হুট করে হামলা করে বসে পড়ে। আপনি একটা বয়কে থাপ্পড় মারবেন, আর সে আপনাকে ছেড়ে দেবে। এতই সোজা মনে করেছেন। এরা হয়তো আপনাকে মারতে মারবেনা, কিছু একটাতো করতে পারবে!
প্রতিশোধের জন্য বেশীরভাগ বয়রা চা বা পানির মধ্যে থু থু দিয়ে দেয়। আর সেই থু থু মিশ্রিত চা বা পানি দেয় গ্রাহকদের। না জেনে সেই পানি বা চা পান করে ফেলে অনেকে। এইভাবেই এই সকল সামর্থ্যবান কিন্তু অক্ষম আর অক্ষমেরা ভয়াবহ প্রতিশোধ নিয়ে নেয়। মারতে তো আর পারবেনা তাই মিশিয়ে দিলো থু থু। নেয় ব্যাটা এইবার খা...
কিছু কিছু দুংসাহসী বয়দের প্রতিশোধের ধরনটা আবার একটু অন্যরকম। এরা সেই চায়ের কাপ নিয়ে চলে যায় বাথরুমে। মিশিয়ে দেয় একটু খানি পেশাপের ফোটা। ভয়াবহ প্রতিশোধ।
হোটেলে একটু বেশী হম্বি দম্বি করে মেয়েরা। ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা বেশী পার্ট দেখায়। "এই সালাতে বালু কেন?" "গ্লাসে ময়লা যে?" "প্লেটটাতো ধোয়াই হয় নাই"। "কাবাবটা কাচা কেন? ফ্রাই না করে নিয়ে এসেছ নাকি?" এইসব বলতে বলতে মেয়েরা বয়ফ্রেন্ডের মাথা গরম করে ফেলে। আর বয় ফ্রেন্ডরা বেচারা আর কি করবে। বীরত্বতো দেখাতেই হবে। হামলা করে বসে নীরিহ বয়দের উপর। ফলাফল মেয়েটার প্রতি ক্ষোভ সৃষ্টি হয় বয়দের। একটা মানুষ দুনিয়ার সব কিছু সহ্য করতে পারে, কিন্তু মেয়েদের কতৃক অপমান কখনো সহ্য করতে পারেনা। মাথায় দাউ দাউ করে আগুন চলতে থাকে। ইচ্ছা করে শাটারটা নামায়ে চেইন খুইল্লা মাইয়াটাকে মেঝেতে ফালায় দিয়ে....
তো সেই বয়টাও এইভাবে প্রতিশোধ নেয়। সুযোগ মত মাস্টারবেশন করে মেয়ের খাবারের মধ্যে নিজেের বীর্য্য মিশিয়ে দেয়। এই বীর্য্য মিশ্রিত খাবার খেয়ে মেয়েটা বলে আহা... খাবারটাতো দারুন হইছে। মেয়ের কত্থাটা শুনে বয়টা মুচকি হাসে। মনে মনে বলে, মাগী মজা হইবোনা! কি জিনিস দিছি একবার যদি দেখতিছ! এই মজাটা কিছুনা, ললীপপটা আর অনেক মজা।
এতো বললাম আপনার শোনার কথা।
এখন যদি আপনি নিজের চোখে দেখেন, একটা বয় সবার অগোচরে চায়ের কাপে কিংবা পানির ক্লাসে থু থু কিংবা বীর্য্য বা মুত মিশিয়ে দিচ্ছে সেভেন আপ বোতলে বা স্যুপের সাথে। তখন আপনার কেমন লাগবে? খেতে পারবেন কখনো! খাওয়াতো দুরের কথা, এই কথাটি যতবার আপনার মাথায় ঘুরঘুর করবে, ততবারই আপনি নিজের ঘরের পানি পর্যন্ত খাবেননা। হোটেলে যাওয়াতো দুরের কথা।
তো এই হচ্ছে দুর্বল লোকদের ঘৃন্য প্রতিশোধের কথা।
"সক্ষম কিন্তু অক্ষম, অক্ষম কিন্তু মারাত্মক।"
যারা হোটেলে গিয়ে কথায় কথায় ক্ষমতা দেখান। ফাপড় নেন। চিল্লাচিল্লি করেন। তারা বিষয়টি নিয়ে একটু ভেবে দেখবেন। কারন একটা মানুষের পেশাপ খাওয়ার চেয়ে থাপ্পড় খাওয়াটা অনেক ভাল। অন্তত আমি তাই মনে করি।
আপনি যতই চেষ্টা করেন, এদেরকে এইসব কাজ করা থেকে কখনো বিরত রাখতে পারবেননা। তো একটু কুল হোন। শান্ত থাকুন। নরম স্বরে কথা বলুন। মিষ্টি ব্যাবহার দিয়ে এদের মন জয় করুন। সুন্দর আচরন দিয়ে সর্বোৎকৃষ্ট সেবা আদায় করুন। এতে আপনি ভাল থাকবেন, এরাও ভাল থাকবে। সমাজও অনেক সুন্দর থাকবে। আর হ্যা, হোটেল থেকে বের হবার আগ মুহূর্তে এদেরকে ভাল বখশিশ দিতে ভুলবেননা। তাহলে পরপর্তীতে এলে আর ভাল সেবা পাবেন। বুদ্ধিমান লোকেরা এই কারনে এদেরকে বখশিশ দেয়। অন্যরা কিজন্য দেয় আমি জানিনা।
আমার আজকের এই পোষ্টের উদ্দেশ্য হচ্ছে, সেইসব রাজনীতিবীদ ও ইসলাম পন্থিরা। যারা ভারতের নির্বাচনে মোদীর বিজয়ে খুব লাফালাফি করতেছে। যেচে পড়ে ফুলের তোড়া উপহার দিচ্ছে। কদমবুসি করতেছে।
মোদী ও তার দল বিজেপি উগ্রপন্থী। কট্টর হিন্দু। তার কাছে ধর্ম আর দেশ অনেক বড়। বাকি সব গোল্লায় যাক। দেশের জন্য সে বাংলাদেশীদের লাথি মারতে পারে। পাকিস্তানে পারমানবিক বোমা নিক্ষেপ করতে পারে। চীনের সাথে যুদ্ধে জড়াতে পারে। আবার ধর্মের জন্য ভারত জুড়ে মুসলিমদের কচুকাটা করতে পারে। তাই মোদীর বিজয়ে উচ্ছাস হবার কিছু নেই। তার কাজ সেই করবে। এভাবে না হোক সেভাবেই করবে। কৌশলী হবে। হোটেলের বয়ের মত নোংরা চাতুরতা আশ্রয় নিবে।
জানেনইতো এই মোদী একটা সময় চা বেচতো। সে জানে, কিভাবে নির্মম উপায়ে ঘৃন্যরুপে প্রতিশোধ নেওয়া যায়। হাসি মুখে গ্রাহকদের থাপ্পড় মারা যায়।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মে, ২০১৪ সকাল ৯:২৫