১৯৮৮ সালের কথা। মিয়ানমারে চলছে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকামী মানুষদের তীব্র আন্দোলন। ঠিক এমন একটি সময়ে গুরুতর অসুস্থ মায়ের পাশে দাঁড়াতে ব্রিটেনে স্বামী সন্তানকে ফেলে রেখে নিজ দেশে উড়ে আসেন সুচি।
অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং সামরিক জান্তার কাছে থেকে দেশকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে সাধারণ গৃহবধু থেকে রাজনীতির আঙিনায় পা রাখেন মিয়ানমারের গণতন্ত্র আন্দোলনের নেত্রী অং সান সুচি। গঠন করেন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি NLD।
এর পরপরই স্বৈরশাসক নে উইনের নির্দেশে ১৯৮৯ গৃহবন্দী করে রাখা হয় তাকে। প্রায় দুই দশক গৃহবন্দী ও কারাগার জীবনের চড়াই উৎরাই পেরিয়ে ২০১০ সালের নভেম্বরে মুক্তি পান এই গণতন্ত্রমানষ কন্যা।
অবশেষে ২০১৫ সালে পার্লামেন্ট নির্বাচনে সুচি এবং তাঁর দলের বিপুল জয়ের পর সামরিক শাসনামল থেকে গণতন্ত্রের হাওয়ায় ভাসতে শুরু করেছে মিয়ানমারের সাধারণ মানুষ। বুধবার সামরিক সরকার থেন সেইনের হাত থেকে ক্ষমতা বুঝে নেন নতুন প্রেসিডেন্ট থিন কিউ। এর মধ্য দিয়ে সম্প্রসারিত হলো গণতন্ত্রের নতুন দোয়ার।
শুধু তাই নয়, ব্রিটিশ স্বামী সন্তান হওয়ায় প্রেসিডেন্ট হতে না পারলেও সুচির হাতে দেশ শাসণের চাবিকাঠি তুলে দিতে তৈরি করা হচ্ছে ‘প্রধানমন্ত্রী’র মতো পদ। আর এই খসড়া বিলটি পার্লামেন্টে পাস হলেই সৃষ্টি হবে এই নতুন পদ। যে পদটির নাম হতে পারে ‘রাষ্ট্রের উপদেষ্টা’।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ৪টি মন্ত্রণালয় এবং রাষ্ট্রের উপদেষ্টা হয়ে মহাত্মা গান্ধীর অনুসারী সুচি দেশ পরিচালনায় কতটা সুচারু হবেন সেদিকেই তাকিয়ে আছেন মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামী মানুষ।
দীর্ঘ ৫০ বছরের বেশি সময় পর মিয়ানমারে ক্ষমতায় বসলেন, একজন সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট থিন কিউ'। এখন দেখার বিষয় কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধির পুতুল সরকার ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মন মোহন সিংহের মতো, মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট থিন কিউ সুচির খেলনা পুতল হবেন কি না! সময় সবচেয়ে বড় জীবন ডায়েরি। যা পড়বে কেবল সময়ের মানুষ। আর ইতিহাস।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:০৩