আর আমরা শুধু প্রতীক্ষায় থাকি বৃষ্টির
ঝুম বরষার দিনে বাড়ির পাশের খোলা মাঠটাতে দাঁড়িয়ে মাথা তুলে তারাহীন কালচে নীল ছাদটার দিকে তাকিয়ে দেখা হয়না একবারও, কিভাবে বিদ্যুতবৃক্ষ তার উজ্জ্বল রূপালীরঙা আলোর শেকড় ছড়িতে দেয় সন্ধ্যা আকাশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত
আমরা শুধু গ্রীষ্ম দিনে কণ্ঠদেশে ঝুলিয়ে রাখি অদৃশ্য উইশলিস্ট
আর ভাবি, আষাঢ় এলেই মাঝ দুপুরে ঝুম বরষায় কাকভেজা হব একা কিংবা কজনে
সময় গড়ায়
রোদেপোড়া ইট পাথরের শহরে ঠিকই নেমে আসে বরষাজল, মেঘের ওঙ্কারে কল্পনার সবগুলো ময়ূর নেচে ওঠে একসাথে।
সেদিন আর ভেজা হয়না
জানালার ধারে বসে বসে শুনি বৃষ্টির ঘোরলাগা ধ্বনিপুঞ্জ, নস্টালজিক হই আনমনে, স্মৃতির ধূসর হয়ে আসা পাতাগুলো উল্টাই আর উল্টাই
রঙছুট জীবনে সেই ফেলে আসা দিনগুলোর স্মৃতিকেও মনে হয় একেকটা ইন্দ্রধনু
শ্রাবনঢল গড়িয়ে পড়ে আমাদের উঠোনের দোড়গোড়ায়
শিশুকালে সেই আপন মনে গড়িয়ে যাওয়া জলে ভাসিয়ে দিতাম কত কাগুজে নৌকা, এখন ভাসাই সেই কবেকার পাওয়া চিঠির বিক্ষিপ্ত টুকরোগুলো কিংবা পুরনো দিনপঞ্জির ভাজে চুপসে যাওয়া লালগোলাপের কালো পাপড়ি
সেই জলে মনের অজান্তেই ভাসিয়ে দেই কত রূপকথা,হারানো দিনের গান,শৈশবের কলতান
কিন্তু ভেজা হয়ে ওঠে না একবারও
সময় গড়ায় দিনপঞ্জির হাত ধরে,নিভৃতে বিদায় নেয় বরষা
রোদেপোড়া নাগরিক জীবন হাতড়ে বেড়াই বরষার সুখস্মৃতি, খুঁজে ফিরি গতবরষার শেষ ঘ্রানটুকু
দুচোখের তারায় স্বপ্ন জমতে থাকে
আবার ভাবি, আসুক বরষা
মেঘফুলে কাকভেজা হব আমি কিংবা আমরা কজন মায়াশহরের নাগরিক
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৪২